ভিডিও

নোয়াখালীতে গৃহবধূকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতনের ঘটনায় আটক ৪

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৪, ০৫:০৬ বিকাল
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২৪, ০৫:০৬ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

নিউজ ডেস্ক:  নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় হাত-পা বেঁধে এক গৃহবধূকে নির্যাতনের ঘটনায় চারজনকে হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। গতকাল বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) নির্যাতনের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে তাদের আটক করা হয়।

আটকরা হলেন- সুবর্ণচর উপজেলার পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের চর মজিদ গ্রামের ওই নারীর স্বামী আব্দুল হাদীর ছেলে নুর নবী (৩২), শেখ ফরিদ (৩৫), আব্দুল হাদীর মেয়ে ছায়েরা খাতুন (৩৮), রহমত উল্যাহর ছেলে সাইফুল ইসলাম হাসান (১৫)।

ভাইরাল হওয়া ৫২ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, তিন সন্তানের ওই জননীকে একটি রশিতে হাত, পা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে বেঁধে রাখা হয়েছে। বিছানাবিহীন একটি খাটে শোয়া অবস্থায় ওই নারী নানা অভিযোগ করছেন ভিডিও ধারণকারীকে। এ সময় তার সন্তানদের কাছে আসতে না দেয়ারও অভিযোগ করা হয়। এ সময় ওই গৃহবধূকে খাওয়ার পানি চাইতেও শোনা যায়।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, পারিবারিক কলহের জের ধরে গত ১৩ আগস্ট স্বামী নুর নবী, শ্বশুর আবদুল হাদি ওরফে হাদু, ভাসুর শেখ ফরিদসহ ৯ জন মিলে তাকে এভাবে বেঁধে ব্যাপক নির্যাতন করেন। খবর পেয়ে স্থানীয়রা ওই নারীকে উদ্ধার করতে আসেন এবং তখন মোবাইলে ভিডিও ধারণ করেন।

নির্যাতনের শিকার ৩০ বছর বয়সী ওই নারী বলেন, ১২ বছর আগে পারিবারিকভাবে ওই গ্রামে তার বিয়ে হয়। কিন্তু স্বামী শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় তিনি (ভুক্তভোগী) ভিক্ষা করে সংসার চালান। এর মধ্যে তাদের এক মেয়ের হৃদরোগের সমস্যা থাকায় চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকা প্রয়োজন হয়। এজন্য স্থানীয় কয়েকটি বাজারে ভিক্ষা করে ১৫ হাজার টাকা জোগাড় করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ভিক্ষা করে বাড়ি ফিরতে দেরি হলে তার স্বামী ‘পরপুরুষের সঙ্গে সম্পর্কের’ অভিযোগ তুলে প্রায়ই তাকে গালমন্দ করতেন। এভাবে পারিবারিক কলহ দেখা দিলে কিছুদিন আগে কাজের সন্ধানে তিনি ঢাকা চলে যান। পরে গত ১৩ আগস্ট রাতে শ্বশুরবাড়ির পাশের বেলাল সওদাগর নামের এক ব্যক্তি ভরসা দিয়ে তাকে শ্বশুরবাড়িতে ফিরিয়ে নিয়ে যান। সেদিন রাত ১২টার দিকে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন চালায়। নির্যাতনে স্বামী ছাড়াও তার শ্বশুর, ননদ, জা, ভাসুরের ছেলে, ভাগনে জড়িত ছিল বলে অভিযোগ করেন।

নির্যাতিত ওই নারী বলেন, আমি এতিম। আমার মা-বাবা কেউ নেই। আমার খালাতো ভাইয়েরা আমাকে লালনপালন করে বিয়ে দিয়েছেন। খবর পেয়ে তারাই আমাকে উদ্ধার করে তাদের বাড়িতে নিয়ে আসেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে চরজব্বার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাউছার আলম ভূঁইয়া  বলেন, গৃহবধূর হাত-পা বাঁধা একটি ভিডিও একজন গণমাধ্যমকর্মী আমাকে পাঠিয়েছেন। ভিডিও দেখে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে চারজনকে পুলিশি হেফাজতে নিয়েছি। নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS