ভিডিও

পৌরসভার সেবা কার্যক্রম নিয়ে কর্তৃপক্ষের হিমশিম অবস্থা

সময়মতো সেবা পাচ্ছেনা পৌরবাসী

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৪, ১০:২২ রাত
আপডেট: অক্টোবর ০১, ২০২৪, ১২:৫১ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

স্টাফ রিপোর্টার : নির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের অপসারণের পর দেশের অন্যতম বৃহৎ বগুড়া পৌরসভাসহ জেলার অন্যন্য পৌরসভার সেবা কার্যক্রম নিয়ে কর্তপক্ষকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। শত শত সেবা গ্রহিতা কাঙ্খিত সেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন।

দেশের অন্যতম বৃহৎ এই পৌরসভা ১৮৭৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে নাগরিক সেবা দিয়ে যাচ্ছে। এক সময়ের ১৪ বর্গ কিলোমিটারের পৌরসভা এখন প্রায় ৭০ বর্গ কিলেমিটার আয়তনে এসে ঠেকেছে। লোক সংখ্যা প্রায় ১০ লাখ। নির্বাচিত মেয়র এবং সংরক্ষিত ৭টি ওয়ার্ডসহ মোট ২৮ জন জন প্রতিনিধি পৌরসভার জনকল্যাণ মূলক কাজ করেন। সম্প্রতি প্রথমে মেয়র এবং সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার কাউন্সিলরদের অপসারণ করা হয়।

মেয়র এবং কাউন্সিলরদের অপসারণ করায় বিশাল শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে পৌরসভাতে। বগুড়া পৌরসভার পাশাপাশি অন্যন্য পৌরসভার অবস্থা একই। কাউন্সিলরদের অপসারণের পর আজ সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বগুড়া পৌরসভায় গিয়ে দেখা যায় পৌর প্রশাসক, স্থানীয় সরকার বিভাগের ডিডি মাসুম আলী বেগ তার কক্ষে বসে দাপ্তরিক কাজ করছেন, তাকে ঘিরে রয়েছে জনা পঞ্চাশেক লোক। একেক জনের একেক সেবা প্রয়োজন।

তিনি ট্রেড লাইসেন্স থেকে শুরু করে ঠিকাদারী বিল, আবার ঠিকাদারী বিল থেকে জন্ম সনদ সব কিছুতেই তাকে স্বাক্ষর করতে হচ্ছে। অফিস আসার পর থেকে কাজ করে চলেছেন, কাউন্সিলরের কাজগুলোও তাকে করতে হচ্ছে আবার প্রশাসনিক কাজও তাকে করতে হচ্ছে। সব কিছু করতে গিয়ে তার হাঁসফাঁস অবস্থা।

একই ভাবে পৌরনির্বাহী কর্মকর্তা মো.শাহজাহান আলমের কক্ষেও সেবা প্রত্যাশীদের ভীর। অন্যান্য কাজের ফাঁকে তিনি নাগরিকদের জন্ম সনদে স্বাক্ষর করছেন। স্বাক্ষর করছেন নাগরিকত্ব সার্টিফিকেটে। সেই সাথে দাপ্তরিক নানা কাজতো রয়েছেই। পৌরসভার নিচতলায় শত শত মানুষের ভীর একেক জন একেক কাজ নিয়ে এসেছেন। সব সেবাই মিলছে তবে এক দিনে কোন সেবা মিলছে না।

সবচেয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে বিচার প্রার্থীদের। মেয়রকে অপসারণ করার পর পৌর প্রশাসক বিচার কাজ সম্পাদন করছেন। তিনি তার এই সময়ে একদিন এজলাসে বসতে পেরেছেন। প্রতি সোমবার ও বুধবার এজলাস বসার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না।

আজ সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দাপ্তরিক কাজে ব্যস্ত থাকায় এজলাসে যেতে পারেনি প্রশাসক। আইন শাখায় সেবা প্রার্থীরা আজ সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) ফিরে গেছেন। তাদেরকে পরবর্তী তারিখ দেওয়া হচ্ছে। অনেক জটিল বিষয় নিষ্পত্তি না হওয়ায় সমস্যা দূর হচ্ছে না।

বগুড়া শহরের ২১ নং ওয়ার্ডে সাইফুল ইসলাম প্রতিবেশির বাড়ির সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা নিয়ে অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু তার অভিযোগের শুনানি হয়নি। প্রতিপক্ষ সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করেছেন। তিনি বলেন, এখন শুনানি করে আর লাভ কী?

জন্ম নিবন্ধন করতে আসা কয়েক জন অভিযোগ করে বলেন, তাদের অনেকেই বৃহস্পতিবার অন লাইনে আবেদন করেছেন। রোববার জন্ম নিবন্ধন হাতে পাওয়ার কথা ছিলো কিন্তু পাননি। মেয়রের অনুপস্থিতিতে প্যানেল মেয়র এটি করতেন, কাউন্সিলরদের অপসারণ করার পর পৌর নির্বাহী কর্মকর্তাকে স্বাক্ষর করতে হচ্ছে। তিনি সব কাজের পাশাপাশি স্বাক্ষর করছেন তাই জন্ম সনদ হাতে পেতে দেরি হচ্ছে।

পৌর সুবিধা নিতে আসা ৮ নং ওয়ার্ডের জহুরুল ইসলাম জানান, কাউন্সিলরদের অপসারণ করায় ড্রেন পরিস্কার করা, ল্যাম্প পোস্টে লাইট লাগানোসহ বিভিন্ন সমস্যার কথা বলার জন্য এসেছেন এখন কোন লোক নাই। এভাবে চলতে থাকলে ওয়ার্ডের লেবাররা কোন কাজ করবে না।

কে কার কথা শুনবে সেটাই এখন দেখার বিষয়। পৌরনির্বাহী কর্মকর্তা মো.শাহজাহান আলম দৈনিক করতোয়া‘কে জানান, তাদের উপর চাপ বেড়েছে দাপ্তরিক কাজের পাশাপাশি জন্ম সনদে স্বাক্ষরসহ অনেক কাজ করতে হচ্ছে। যে কাজগুলো আগে কাউন্সিলররা করতো সেই কাজ তাদেরকে করতে হচ্ছে। তিনি আরও জানান, জন্ম সনদ, মৃত্যু সনদ, ওয়ারিশান সনদ দিতে সমস্যা হবে। সচেতন না হলে রোহিঙ্গারাও জন্ম সনদ নিয়ে জাতীয় পরিচয় পত্র করতে পারবে। সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।

পৌর প্রশাসক মাসুম আলী বেগ দৈনিক করতোয়া‘কে জানান, বগুড়া বৃহৎ একটি পৌরসভা এর কাজ অনেক বেশি। নিজ দপ্তরের কাজের পাশাপাশি এই কাজ করতে হচ্ছে। পৌরসভার কাজ সময়ের কাজ সময়ে করতে হচ্ছে তাই তার মূল দাপ্তরিক কাজ করতে হচ্ছে বিকেলের পর। তিনি আরও জানান, আজ সরকার নির্ধারিত কমিটির সভা হবে। সেখানে আরও সিদ্ধান্ত আসতে পারে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS