স্টাফ রিপোর্টার : বগুড়া শহরের সাতমাথা এলাকাকে কেন্দ্র করে পকেটমার ও টানাপার্টির সদস্যদের দৌরাত্ম্য ফের বেড়েছে। এসব পার্টির তৎপরতায় সাধারণ মানুষ অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। এদের খপ্পরে পড়ে প্রায়ই টাকা, মোবাইল ফোন ও অন্যান্য মালামাল খোয়া যাচ্ছে বিভিন্ন জনের। এদের ধরতে পুলিশের তেমন অভিযান চোখে না পড়লেও সাধারণ মানুষই পকেটমারদের ধরে গণধোলাই দিয়ে ছেড়ে দিচ্ছে অথবা থানায় সোপর্দ করছে।
এই ধারাবাহিকতায় আজ সোমবার (২১ অক্টোবর) বেলা দেড়টার দিকেও শহরের সাতমাথা জিরো পয়েন্টে এক ব্যক্তির কাছ থেকে পকেটমারার সময় হাতে নাতে ধরা পড়ে এক পকেটমার। এ সময় উপস্থিত জনতা তাকে গণ ধোলাই দিয়ে ছেড়ে দেয়। এর আগেও শহরের বিভিন্ন স্থানে পকেটমারকে ধরে জনতা-উত্তম-মধ্যম দিয়েছে।
উল্লেখ্য, সাতমাথা এলাকা ঘিরে পকেটমারসহ অপরাধীদের তৎপরতা নতুন নয়। প্রায়ই তাদের কবলে পড়ে নি:স্ব হচ্ছে মানুষ। কিন্তু পুলিশের তেমন তৎপরতা নেই। মাঝে-মধ্যে দু’চারজনকে পুলিশ ধরে আদালতে প্রেরণ করলেও পরে জামিনে পেয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে এসে ফের পুরোনো পেশায় ফিরে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুধু সাতমাথা এলাকাকে কেন্দ্র করেই ৩০ জনের বেশি পকেটমার সক্রিয় থাকে। এদের বেশির ভাগ কিশোর। সেইসাথে এই চক্রের শিশু ও নারী সদস্যও রয়েছে। এদের প্রধান টার্গেট গ্রামগঞ্জ থেকে শহরে আসা সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে মানুষ যখন ভিড়ের মধ্যে রাস্তা পার হতে থাকে তখন পকেটমাররাও ভিড়ের মধ্যে পিছু নেয়।
রাস্তা পার হতে গিয়ে মানুষের দৃষ্টি যখন যানবাহনের দিকে থাকে তখন এই সুযোগটিই নেয় পকেটমার চক্র। চোখের পলকে ব্যাগ বা পকেট কেটে টাকা বা মোবাইল ফোন হাতিয়ে নেয় তারা। এ দিকে সাতমাথাকে কেন্দ্র করে টানা পার্টিরও তৎপরতা কম নয়। টানা পার্টির সদস্যরা অটোরিকশা,ভ্যান বা মোটরসাইকেল থেকে মালামাল টেনে নিয়ে দৌড় দেয়। বিশেষ করে যখন যানজট হয় তখন সেই সুযোগটি লুফে নেয়।
এ সময় তারা রিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহনে রাখা মালামাল কৌশলে নিয়ে হাত বদলের মাধ্যমে পালিয়ে যায়। টানাপার্টির সদস্যরা কাজটি করে সংঘবদ্ধ হয়ে। সাতমাথায় প্রায়ই টানাপার্টির খপ্পরে পড়ে মানুষের মালামাল খোয়া গেলেও তারা ধরা পড়েনা তেমন।
তবে এ ব্যাপারে সদর ফাঁড়ির এসআই শহিদুল ইসলাম বলেন, টানাপার্টির মূলহোতা শহরের মালগ্রামের কামাল ও সাগরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত রোববার তাদের দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া এর আগে কয়েকজন পকেটমারকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি এস.এম মঈনুদ্দীন সাতমাথায় পকেটমার ও টানা পার্টির তৎপরতার কথা স্বীকার করে বলেন, এই চক্রের সদস্যরা ভোরে ঢাকা থেকে আসা যাত্রীদেরকেও টার্গেট করে টাকা ও মোবাইল ফোন হাতিয়ে নেয় বলে তথ্যও রয়েছে। তিনি বলেন এ সব অপরাধীদের ধরতে আজ থেকে জোড়ালো অভিযান শুরু করা হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।