নিউজ ডেস্ক: গ্যাস সংকটের কারণে দীর্ঘ ছয় মাস ধরে জামালপুরে দেশের সর্ববৃহৎ যমুনা সার কারখানায় উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এতে আসন্ন আমন মৌসুমে সার সংকটের শঙ্কায় ভুগছেন কৃষকরা।
কারখানা কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, ১৯৯১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় যমুনা সার কারখানা। এই কারখানা থেকে শেরপুর, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, রাজবাড়ী ও উত্তরবঙ্গের ১৬ জেলার প্রায় আড়াই হাজার ডিলারের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয় ইউরিয়া সার। সম্প্রতি ঘোড়াশাল-পলাশ ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কোম্পানিতে সার উৎপাদন নিরবচ্ছিন্ন রাখার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি)। এজন্য সেখানে পর্যাপ্ত গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে যমুনা সার কারখানায় গত ১৫ জানুয়ারি থেকে গ্যাসের চাপ কমিয়ে দেয় তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি। এরপর থেকেই যমুনায় ইউরিয়া উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। দ্রুত গ্যাস সংযোগ দিয়ে বৃহৎ এ শিল্প কারখানাটি সচল রাখতে না পারলে পুরোপুরি নষ্ট হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে বলে জানায় কারখানা কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কারখানাটি বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প সংস্থা নিয়ন্ত্রণাধীন এবং কেপিআই-১ মানসম্পন্ন সার উৎপাদনকারী একটি প্রতিষ্ঠান। কারখানার নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদনের জন্য দৈনিক ৪২-৪৩ পিএসআই গ্যাসের প্রয়োজন হয়। কিন্তু গ্যাসের চাপ স্বল্পতা ও বিভিন্ন ত্রুটির কারণে কারখানার উৎপাদন কমে বর্তমানে ১ হাজার ২০০ টনে নেমেছে। যেখানে আগে উৎপাদন ছিল ১ হাজার ৭০০ টন।
স্থানীয় শ্রমিক আকাশ মিয়া বলেন, ‘কারখানাটির সঙ্গে অনেক মানুষের রুটিরুজি জড়িত। অথচ ছয় মাস ধরে উৎপাদন বন্ধ। এ কারণে আমরাও বেকার হয়ে বসে রয়েছি। এভাবে চলতে থাকলে পরিবার-পরিজন নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।’
যমুনা সার কারখানার শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের (সিবিএ) সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলী। তিনি জানান, দীর্ঘদিন কারখানা বন্ধ থাকায় পরিবহন, শ্রমিক ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বাইরে থেকে সার আমদানি করে চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
শাহজাহান আলী বলেন, আমদানিনির্ভরতা থেকে সরে দেশীয় শিল্পকে সচল রাখা হলে দেশের রাজস্ব বাড়বে। এতে বাইরে থেকে সার আনতে সরকারের ভর্তুকি বহন করতে হবে না।
তিনি আরও জানান, যমুনা সার কারখানায় এক টন ইউরিয়া সার উৎপাদন করতে খরচ পড়ে ১৮-২০ হাজার টাকা। আর দেশের বাইরে থেকে আমদানি করতে খরচ পড়ে যায় প্রায় এক লাখ টাকা।
এ বিষয়ে যমুনা সার কারখানার উপপ্রধান প্রকৌশলী (রসায়ন) ফজলুল হক বলেন, কারখানায় বড় ধরনের কোনো ত্রুটি নেই। গ্যাস সংযোগ না থাকায় দীর্ঘ ছয় মাসের বেশি সময় ধরে কারখানা বন্ধ রয়েছে। গ্যাস পেলে কারখানা চালু করা হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।