ভিডিও

ডলারের দাম বৃদ্ধি

প্রকাশিত: মে ১৩, ২০২৪, ০৫:৪৪ বিকাল
আপডেট: মে ১৩, ২০২৪, ০৫:৪৪ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

বাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্তের কারণে ডলারের দাম এক লাফে সাত টাকা বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দীর্ঘদিন ১১০ টাকায় থাকা ডলারের অফিসিয়াল রেট একদিনে ১১৭ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। এর ফলে ডলারের সঙ্গে টাকার বড় অবমূল্যায়ন করা হলো। গত বুধবার এ বিষয়ে সার্কুলার জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

ডলারের দাম বাড়ার কারণে দেশে পণ্য মূল্য আরো বাড়তে পারে বলে আশংকা করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এখন যে পণ্যটি আমদানি করতে দিতে হচ্ছে ১০০ টাকা, শুধু ডলারের দাম বাড়ার কারণে বাড়তি সাত টাকা ৭০ পয়সা গুনতে হবে ব্যবসায়ীদের। এর সঙ্গে অন্যান্য খরচও রয়েছে।

মার্কিন ডলারের বিনিময় হার নির্ধারণে ‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতি চালু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ক্রলিং পেগ পদ্ধতির আওতায় ডলারের মধ্যবর্তী একটি দাম নির্ধারণ করে ব্যাংকগুলোকে এই দরের আশে পাশে স্বাধীনভাবে লেনদেন করতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশের জন্য ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণের শর্ত হিসেবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার নমনীয় করার পরামর্শ দিয়ে আসছিল। আইএমএফ’র চাওয়া, বাংলাদেশ ব্যাংক যেন বিনিময় হার বাজার ভিত্তিক করার পথে যায়।

এক সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার দাম নির্ধারণ করে দিলেও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ব্যাংক ভিত্তিক দুটো সংগঠন ডলারের দাম ঠিক করে আসছিল। সর্বশেষ তারা ডলারের আনুষ্ঠানিক দর ১১০টাকায় নির্ধারণ করেছিল।

‘ক্রলিং পেগ’ পদ্ধতিতে ডলারের দাম নির্দিষ্ট একটি সীমার মধ্যে ওঠানামা করে। নতুন পদ্ধতিতে অর্থনীতির বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে ডলারের দাম একটি সীমার মধ্যে বাড়বে বা কমবে। ফলে ডলারের দাম একবারে খুব বেশি বাড়তে পারবে না, আবার কমতেও পারবে না। আইএমএফ’র ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের তৃতীয় কিস্তি ছাড়ের আগে শর্ত পরিপালনের অগ্রগতি যাচাইয়ে একটি টিম ঢাকা সফরে আসে।

গত বুধবার শেষ দিনে সংবাদ সম্মেলন করে সুদ হার বৃদ্ধি ও ডলারের দর নির্ধারণে ক্রলিং পেগ চালুর উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে সংস্থাটি। আইএমএফ বলেছে, ডলারের দর বাড়লে প্রতিযোগী সক্ষমতা বেড়ে রপ্তানি ও রেমিট্যান্স বাড়বে। বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণীয় হবে।

এতে করে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমবে। আর সুদহার বৃদ্ধির ফলে চাহিদা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। তবে এসব সিদ্ধান্তের ফলে স্বল্প মেয়াদে মূল্যস্ফীতি কিছুটা বাড়তে পারে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘদিন ধরে সংকোচনমূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে অর্থনীতিবিদরা আহবান জানালেও তাতে সাড়া দেয়নি বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে আইএমএফ’র ঋণের শর্ত মেনে এবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসব পদক্ষেপ নিয়েছে।

প্রসঙ্গত বলা দরকার, ক্রলিং পেগ পদ্ধতিতে ডলারের দাম নির্দিষ্ট একটি সীমার মধ্যে ওঠানামা করে। নতুন পদ্ধতিতে অর্থনীতির বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে ডলারের দাম একটা সীমার মধ্যে বাড়বে বা কমবে। ফলে ডলারের দাম একবারে খুব বেশি বাড়তে পারবে না, আবার কমতেও পারবে না। আইএমএফ’র চাওয়া বাংলাদেশ ব্যাংক যেন বিনিময় হার বাজার ভিত্তিক করার পথে এগোয়।

আইএমএফ’র শর্ত মেনে অনেকটা তড়িঘড়ি করে বুধবার আর্থিক খাতের এসব সিদ্ধান্ত জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক এমনটিও খবরের মাধ্যমে জানা যায়। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘদিন ধরে সংকোচনমূলক বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে অর্থনীতিবিদরা আহবান জানালেও তাতে সাড়া দেয়নি বাংলাদেশ ব্যাংক।

ক্রলিং পেগ পদ্ধতি চালুর অংশ হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম নির্ধারণ করে দেওয়ায় খোলা বাজারে ডলার নিয়ে আবার অস্থিরতা শুরু হয়েছে। একাধিক বিশ্লেষক বলেন, ডলারের দাম একদিনে ৭টাকা বাড়ানোয় মানি এক্সচেঞ্জারগুলো ডলার বিক্রি করছে না। আবার যাদের কাছে খুচরা ডলার আছে, তারাও বিক্রি না করে রেখে দিয়েছেন। খোলা বাজারে দাম কত বাড়ে তা দেখার অপেক্ষায় আছেন সবাই। এমন পরিস্থিতিতে খোলা বাজারে ডলার মিলছে না।

মানি চেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের মহাসচিব মো: হেলাল উদ্দিন সিকদার অবশ্য দাবি করেন, ‘ডলার ১২১-১২২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, খোলা বাজারে ডলারের তেমন কোনো সংকট ছিল না। আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্ধারিত দরেই ডলার বিক্রি করতে শুরু করেছিলাম। কিন্তু হঠাৎ করে ডলারের দাম ১১৭ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়ায় একটু সমস্যা তৈরি হয়েছে।

এক সঙ্গে এত টাকা না বাড়ালেই ভালো হতো। তবে আমরা চেষ্টা করছি, যাতে ডলারের দাম খুব বেশি বেড়ে না যায়। দেশে ডলারের দাম কখনো এক সঙ্গে এতটা বাড়েনি। ফলে আরও চাপ তৈরি হতে পারে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দামের ওপর এটিও বিবেচনায় নিতে হবে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS