ভিডিও

নয়টি হাঁসের বাচ্চা জীবন বদলে  দিয়েছে প্রতিবন্ধী রেহেনার

প্রকাশিত: আগস্ট ০৩, ২০২৪, ০৭:১৮ বিকাল
আপডেট: আগস্ট ০৩, ২০২৪, ০৭:১৮ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

নজরুল ইসলাম আকন্দ: নয়টি হাঁসের বাচ্চা জীবন বদলে দিয়েছে প্রতিবন্ধী রেহেনার। দরিদ্রতাকে পাশ কাটিয়ে স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার শিবপুর বাজারের শারীরিক প্রতিবন্ধী রেহেনার আয় এখন মাসে প্রায় কুড়ি হাজার টাকা। প্রতিবন্ধী হলেও অত্যন্ত কর্মঠ একজন নারী তিনি। জীবন সংগ্রামে হাবুডুবু খাওয়া রেহেনা অদম্য কর্মস্পৃহায় এখন স্বাবলম্বী।
উপজেলার শিবপুর গ্রামে ১৯৮১ সালে ১৫ আগষ্ট হত দরিদ্র ও ভূমিহীন পরিবারে রেহেনার জন্ম। তার পিতার নাম আব্দুস ছামাদ। রেহেনা শত প্রতিকুলতার মাঝেও সে ফাজিল পাস করেন। পরে ১৯৯৭ সালে একই গ্রামের আব্দুর রশিদ মোল্লার সাথে তার বিয়ে হয়। স্বামীর পাওয়া ৫ শতক জায়গার উপর বসতবাড়িতে পরিকল্পিতভাবে সংসার শুরু করেন রেহেনা। তার চোখে-মুখে স্বাবলম্বীতা অর্জনের প্রত্যাশায় বর্গা জমি চাষাবাদসহ মাত্র নয়টি হাঁসের বাচ্চা কিনে প্রতিপালন শুরু করেন। সেই থেকে অনেক চড়াই-উৎরাই পেড়িয়ে বাড়িতে একাধিক ক্ষুদ্র খামার গড়ে তুলে হাঁস-মুরগী, গরু, ছাগল এবং মাছ চাষ করে সফলতা অর্জন করেন। এ সব বিক্রি করে তার মাসিক ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা আয় হয়। শারীরিক প্রতিবন্ধী নারী হিসেবে রেহেনার আয়বর্ধন মূলক কর্মকান্ড ও সফলতার জন্য শক্তি ফাউন্ডেশন ২০০৮ সালে ২ নভেম্বর শহীদ তাজুল মিলনায়তনে ঢাকায় অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় সম্মেলনে রাজশাহী বিভাগীয় শ্রেষ্ঠ ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তা হিসেবে নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে গত ৪ আগষ্ট ২০১০ সালে ঢাকার শেরাটন হোটেলে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী এএমএ আব্দুল মুহিত এমপি’র হাতে শারীরিক প্রতিবন্ধী শ্রেষ্ঠ সিটি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও পরিশ্রমী নারী হিসেবে রেহেনাকে সাড়ে ৩ লক্ষ টাকার চেক ও ক্রেস্ট প্রদান করেন। 
রেহেনার ছেলে আব্দুর রহিম বলেন, প্রতিবন্ধী মায়ের সংসারে খুব কষ্ট করে মানুষ হয়েছি। মায়ের পরিশ্রমে আজ আমরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী। মায়ের মতো পরিশ্রম করে আমরাও অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারব এমন আশা করছি। শ্রেষ্ঠ উদ্যোক্তা পুরষ্কার পাওয়ায় রেহেনা বলেন, সকলের সমন্বিত সহযোগিতার ফলে আল্লাহ আমার প্রতি সহায় হয়েছেন। ইতিপূর্বে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছি এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার টাকা পেয়ে সেই টাকায় কাজে লাগিয়েছি। তিনি আরো বলেন, এলাকার প্রতিবন্ধী দুস্থ, বেকার পরিবারের ছেলে মেয়েদের আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করার পরিকল্পনা রয়েছে। 
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা লায়লা নাসরিন জাহান বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধী রেহেনা একজন কর্মঠ নারী। সে এখন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী এবং সফল নারী উদ্যোক্তা। তাকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও পরামর্শসহ মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হয়েছে। তার এই সাফল্য দেখে এলাকার নারীদের মধ্যে ইতিবাচক সাড়া জেগেছে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS