কুষ্টিয়ায় আলোকসজ্জা নিভিয়ে বিয়ের আগের রাতে কনের বাড়িতে ডাকাতি

কুষ্টিয়ার খোকসায় বিয়ের আগের রাতে কনের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এসময় ডাকাত দল অস্ত্রের মুখে বিয়ের গহনা ও টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
গতকাল শনিবার (১৯ জুলাই) গভীর রাতে উপজেলা শিমুলিয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইসলামপুর গ্রামের বিধান রায়ের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগীরা জানান, ১০-১২ জনের একদল সশস্ত্র ডাকাত বিয়ে বাড়ির আলোকসজ্জার বৈদ্যুতিক বাতি নিভিয়ে দেয়। এরপর তারা প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ঘরে তল্লাশি চালায়। এসময় কনের নাক ফুল, গলার মালা, হাতের কাকনসহ প্রায় তিন ভরি গহনা নিয়ে যায়।
এছাড়া বিয়ে উপলক্ষে আসা নারী আত্মীয়দের প্রায় ৪ ভরি সোনার গহনা ও বিয়ের খরচের নগদ প্রায় ৫০-৬০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
ভুক্তভোগী বিধান রায় জানান, রাত ২টার পর হঠাৎ বাড়ির আলোকসজ্জা নিভে যায়। এসময় তিনি বাড়ির উঠানে নেমে আসেন। তখন বিয়ের প্যান্ডেলের কাপড়ের আড়াল থেকে ৫-৬ জন লোক এসে তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। এরপর তার চোখ ও হাত বেঁধে ফেলে।
তাকে দিয়ে স্ত্রীসহ পরিবারের লোকদের ডেকে তুলতে বাধ্য করে। এরপর ডাকাতরা বিয়ে বাড়িতে আসা অতিথিদের মারপিট শুরু করে।
তিনি আরও জানান, ডাকাতদের প্রত্যেকের হাতে ধারালো অস্ত্র ছাড়াও কয়েকটি বন্দুক ছিল। তারা তাকে বার বার ‘ফুটিয়ে দেবো বলে’ হুমকি দিচ্ছিল।
আরও পড়ুনপাত্রীর মা লিপি রানী রায় জানান, দুই মেয়েকে নিয়ে তিনি একটি ঘরে শুয়েছিলেন। স্বামী বিধান রায় ছিলেন ঘরের বারান্দায়। ডাকাতরা তার স্বামীকে আটকে মারপিট শুরু করলে তিনি দরজা খুলে উঠানে নেমে যান।
তিনি আরও বলেন, ডাকাতির ঘটনার পর তার পুরো পরিবার আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে।
প্রতিবেশী শিপ্রা রানী জানান, বিয়ের রাগের রাতে বরযাত্রী ও নিমন্ত্রিতদের জন্য তার বাড়িতে রান্না চলছিল। গভীর রাতে হঠাৎ বাড়ির আলো নিভিয়ে দেয় ডাকতরা। এর কিছু সময় পর গৃহকর্তা বিধান রায়ের চিৎকারে তারা এগিয়ে যান। ততক্ষণে ১০-১২ জন ডাকাত দুই দলে বিভক্ত হয়ে গ্রামের পূর্ব দিকে চলে যায়।
বিয়ের কনে সাথি রায় দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। রোববার রাতে জানিপুর ইউনিয়নের চর দশকাহুনিয়া গ্রামের স্কুলশিক্ষক সমীর বিশ্বাসের সঙ্গে তার বিয়ে হওয়ার কথা। তার আগেই ডাকাতরা গহনাসহ সর্বস্ব নিয়ে যায়।
খোকসা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মঈনুল ইসলাম বলেন, তিনি নিজে রাতেই ঘটনাস্থলে যান। ওনারা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে থানায় আসতে চেয়েছেন। এছাড়া নিরাপত্তা রক্ষায় ঘটনাস্থলে পুলিশ রাখা হয়েছে। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ না হওয়া পর্যন্ত পুলিশ সেখানে থাকবে।
মন্তব্য করুন