বগুড়ার শাজাহানপুরে বর্ষার পানিতে তলিয়ে গেছে শ্যামলাকাতিপাড়া, দুর্ভোগে মানুষ

শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি : সাম্প্রতিক টানা বর্ষণে শাজাহানপুরে পানিতে তলিয়ে গেছে চলাচলের রাস্তা, বসতভিটাসহ প্রায় ২শ’ বিঘা ফসলি জমি। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় পুরো এলাকা জলাবদ্ধতায় নিমজ্জিত। চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন শিক্ষার্থী, কৃষিজীবী, ব্যবসায়ীসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষ। পানিবন্দী হয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকিসহ নানা রকম সমস্যায় ভুগছে একটি এলাকার শতাধিক পরিবার।
একমাত্র জলাবদ্ধতার কারণে পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়া বেজোড়া শ্যামলাকাতিপাড়া এলাকাটি কোন অজোঁপাড়া গাঁ নয়। এটি বগুড়া পৌরসভার ২১নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত একটি শহর এলাকা। পৌর এলাকায় হলেও এর প্রশাসনিক কার্যক্রম চলে শাজাহানপুর উপজেলায়। চরম দুর্ভোগের শিকার অসহায় এলাকাবাসি গতকাল বুধাবর বাদ জোহর পানিতে তলিয়ে যাওয়া রাস্তায় দাঁড়িয়ে ওই এলাকার পানি নিষ্কাশনের জন্য মাস্টার ড্রেন নির্মাণের দাবি জানায়।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শ্যামলাকতিপাড়া জামে মসজিদের সেক্রেটারি জাহিদুল ইসলাম, সমাজ সেবক আব্দুল লতিফ, সাইফুল ইসলাম, গৃহবধূ মাবিয়া বেগমসহ স্কুলপড়ুয়া শতাধিক শিক্ষার্থী। ওই এলাকার ভুক্তভোগী গোলাম মোস্তফা জানান, পৌর এলাকার নাগরিক হয়েও ওই এলাকার মানুষ রাস্তার উন্নয়ন, ড্রেনেজ ব্যবস্থার সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এসব বিষয়ে পৌরসভায় যোগাযোগ করলে তারা বলেন যথেষ্ট অর্থ বরাদ্দ না থাকায় কাজ করা সম্ভব হয়ে উঠেনা।
আবার উপজেলা পরিষদে যোগাযোগ করলে তারা বলে পৌর এলাকায় উপজেলা পরিষদের টাকায় কাজ করার কোন সুযোগ নাই। এমন প্রবঞ্চনার শিকার হচ্ছেন তারা। দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সিফাত আল হোসাইন, রিয়া মনি, ও সুরাইয়া খাতুন জানায়, চলাচলের রাস্তা তলিয়ে যাওয়ায় স্কুলে যেতে তাদেরকে অনেক দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। কাদা পানিতে পিছলে পড়ে বই খাতা ভিজে যাওয়ার ঘটনা ঘটছে।
আরও পড়ুনবেজোড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা কামরুল ইসলাম চাঁন বলেন, শুধু শ্যামলাকাতিপাড়া নয়, ওই রাস্তা দিয়ে ঢাকন্তা, বেজোড়া উত্তরপাড়া, মুন্সিপাড়া, দক্ষিণপাড়া কালশিমাটিসহ বেশ কয়েকটি এলাকার দুই শতাধিক শিক্ষার্থী প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে যাতায়াত করে। এছাড়া পানিবন্দি সহস্রাধিক কর্মজীবী মানুষকে প্রতিনিয়ত ওই তলিয়ে যাওয়া রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, বেজোড়া ঘাটপাড়া এলাকার টুকু মুন্সির বাড়ির নিকট একটি কালভার্ট ছিল।
ওই কালভার্ট দিয়ে বর্ষার পানি করতোয়া নদীতে গিয়ে পড়তো। কিন্তু প্রায় ২০ বছর আগে রাস্তা উন্নয়ন কাজের সময় কালভার্টটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে এই জলাবদ্ধতার ঘটনা ঘটছে। তার মতে নিশ্চিন্তপুর চারমাথা থেকে করতোয়া নদী পর্যন্ত রাস্তার পাশ দিয়ে মাস্টার ড্রেন নির্মাণ করা হলে শতাধিক পরিবার ও দুই শতাধিক বিঘা ফসলি জমি জলাবদ্ধতা থেকে রেহাই পাবে।
জলাবদ্ধতার কারণে বেজোড়া শ্যামলাকাতিপাড়া এলাকার মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি জানা ছিলনা উল্লেখ করে বগুড়া পৌরসভার প্রশাসক মাসুম আলী বেগ জানান, শহর ও শহরতলী এলাকার উন্নয়ন ও সংস্কারের লক্ষ্যে ‘৩০ শহর প্রকল্প’র আওতায় ১শ’ ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ওই প্রকল্পের মাধ্যমে শ্যামলাকাতিপাড়া এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনের চেষ্টা করা হবে।
মন্তব্য করুন