গাইবান্ধার সাঘাটায় অকেজো গভীর সেচপাম্প, বোরো মৌসুমে সেচ সংকটের শঙ্কায় কৃষক

সাঘাটা (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি : গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার আব্দুল্যার গ্রামের কৃষকের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে অকোজে একটি গভীর সেচপাম্প। স্থানীয় কৃষকদের দাবি গভীর সেচ পাম্পটি দীর্ঘ দিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। কৃষকদের অভিযোগ বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃৃপক্ষের সেচপাম্প নীতিমালার বাধ্যবাধকতার কারণে নতুন সেচপাম্পের আবেদনও উপজেলা সেচ কমিটি গ্রহণ করছে না। এমতাবস্থায় সেখানে কৃষি জমিতে পানি সেচ চরম ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বিকল্প ব্যাস্থায় আগামী বোরো মৌসুমেও অন্তত ২৫ বিঘা জমিতে সেচ সংকটে পড়ার শঙ্কায় রয়েছে কয়েকজন কৃষক।
সাঘাটা বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, আব্দুল্যার পাড়া এ গভীর সেচপাম্পটি বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) বিগত ১৯৮৫ স্থাপন করে। তখন অন্তত শত বিঘা জমি এই সেচপাম্পের আওতায় ছিলো। পরবর্তীতে বিগত ২০০৫ সালে বিএডিসি সেচ পাম্পটি বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করে।
পরবর্তীতে গভীর সেচপাম্প এলাকায় লোকজন বাড়ি-ঘর করায় জনবসতি গড়ে ওঠায় সেচপাম্পটির মাটির নিচের পানি সাপ্লাই পাইপ গুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তা সেচের জন্য অযোগ্য হয়ে পড়ে। ফলে বেশ কিছু কৃষক তাদের জমিতে পানি সেচ নিয়ে বিপাকে রয়েছেন। স্থানীয় কৃষক নুরুনবী, মেস্তাফিজুর ও হবিবুর সহ অনেকের অভিযোগ, কয়েক বছর আগেও সেচপাম্পটি মাঝে মাঝে বন্ধ থাকতো এতে পানি সেচের অভাবে জমির ফসল কম হতো। অকেজো সেচপাম্পটি আর দেখতে চাইনা।
এখন সেচপাম্পটি আমাদের ফসল উৎপাদনের বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাধ্য হয়ে দূর থেকে বিকল্প ব্যবস্থায় জমিতে সেচ দিতে হচ্ছে। এতে একদিকে অতিরিক্ত খরচ গুণতে হচ্ছে। গভীর সেচপাম্পটির ম্যানেজার আব্দুল মমিন বলেন, চার দিকে থেকে পাকা বাড়িঘর তৈরি করার কারণে সেচ পাম্পটির পানি ডেলিভারি পাইপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পানির লাইন বন্ধ হয়ে গেছে।
আরও পড়ুনএকারণে কিছু কৃষক বাধ্য হয়েই আলাদা করে সেচপাম্প নিয়ে আবাদ করছেন। একারণে পাম্পটি চালু করার চেষ্টা করেও কোনো কাজ হচ্ছে না। চালুর জন্য অনেক বার চেষ্টা করে নিজেকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে অকোজো সেচপাম্পটির ব্যাপারে স্থায়ীভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বরেন্দ্র বহুমুখী কর্তৃৃপক্ষকের কাছে আবেদন করেছি।
সাঘাটা উপজেলা বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃৃপক্ষের সহকারী প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব প্রাপ্ত) মোজাফ্ফর হোসেন সেচপাম্পটি বন্ধ থাকার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, গভীর সেচপাম্পটি আমাদের দপ্তরের ছিলোনা। বিএডিসি আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। বতর্মানে স্থানীয় কৃষকের সহযোগিতা না পাওয়ায় সেচপাম্পটি বন্ধ আছে।
উপজেলা সেচ কমিটির সদস্য সচিব ও বিএডিসির গাইবান্ধা জেলা সহকারী প্রকৌশলী গোলাম রব্বানীর সাথে এ ব্যাপারে কথা হলে তিনি বলেন, সেচপাম্পটি বন্ধের বিষয়টি আমার জানা ছিলোনা। এখন যেহেতু জানলাম বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মন্তব্য করুন