ভিডিও

পুঁজিবাজারের উন্নয়নে জোরালো পদক্ষেপ নেব: ড. এ টি এম তারিকুজ্জামান

প্রকাশিত: মে ২২, ২০২৪, ০৯:০৫ রাত
আপডেট: মে ২২, ২০২৪, ০৯:০৫ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

সদ্য বিদায়ী ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ড. এ টি এম তারিকুজ্জামান গত ২০ মে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কমিশনার হিসেবে যোগদান করেছেন। দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময় পুঁজিবাজার নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হিসাব বিজ্ঞানে এমকম এবং সাউথ ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি (ইউকে ক্যাম্পাস) থেকে এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ১৯৯৭ সালে বিএসইসিতে উপপরিচালক হিসেবে যোগদান করেন। প্রায় ২৬ বছর সাফল্যের সঙ্গে কমিশনের বিভিন্ন দপ্তরে দায়িত্ব পালন করায় তাকে গত বছর ডিএসইর এমডি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। যোগদানের আট মাসের মাথায় চলতি বছরের ৮ মে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ তাকে বিএসইসির কমিশনার পদে নিয়োগ দেয়। গত ১৯ মে ডিএসইতে তার শেষ কর্মদিবস ছিল।

 

পুঁজিবাজারের উন্নয়নে কর্মপরিকল্পনা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে `দৈনিক বাংলা`র সঙ্গে কথা বলেছেন ড. এটিএম তারিকুজ্জামান।

ডিএসইর এমডি থেকে নিয়ন্ত্রক সংস্থার কমিশনার হিসেবে দায়িত্বে ফিরেছেন। গুরুত্বপূর্ণ এ পদে ফেরার অনূভুতি কেমন? তারিকুজ্জামান বলেন, '২৫ বছরের বেশি সময় বিএসইসিতে কাজ করেছি। পরবর্তীতে ডিএসইর এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। আবারও নতুন আঙ্গিকে বিএসইসিতে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। এটা অমার জন্য অনেক আনন্দের। পাশাপাশি গৌরবেরও বটে। আমাকে এ পদে যোগ্য হিসেবে বিবেচনা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, অর্থ প্রতিমন্ত্রী ও অর্থ মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আশা করছি পুঁজিবাজারে উন্নয়নে আমার দীর্ঘ বছরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ভালো কিছু দিতে পারবো।'

 

তিনি বলেন, 'পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে আমার যে চিন্তাভাবনা রয়েছে, তা কমিশনের কাছে তুলে ধরব। সে বিষয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান ও অন্যান্য কমিশনারদের সম্মতি পেলে, সম্মিলতভাবে পুঁজিবাজারকে একটি ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে যেতে পারব বলে বিশ্বাস করি। বিএসইসির কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে আমি পুঁজিবাজারের উন্নয়নে আরও অধিক পরিসরে কাজ করতে পারব।

পুঁজিবাজারের উন্নয়নে কি ধরনের ভুমিকা রাখা সম্ভব এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে ড. তারিকুজ্জামান বলেন, প্রথমত পুঁজিবাজারে সুশাসন নিশ্চিত করতে শক্তিশালী পদক্ষেপ নিতে হবে। কেননা সুশাসনের অভাব থাকলে এ বাজারের উন্নয়ন সম্ভব না। বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে, তাদের বিনিয়োগকৃত পুঁজির নিরাপত্তা দিতে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া আমাদের প্রধানন্ত্রীর লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা। সে লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে অর্থনীতির সব অঙ্গনে আমাদের আরও বেশি স্মার্ট হতে হবে। স্মার্ট পুঁজিবাজার ছাড়া স্মার্ট বাংলাদেশ গড় সম্ভব হবে না। তাই পুঁজিবাজারকে স্মার্ট হিসেবে গড়ে তুলতে আমাদের অনেক কাজ করতে হবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস ও দীর্ঘ বছরের অভিজ্ঞতা স্মার্ট পুঁজিবাজার বিনির্মাণে সহায়ক ভুমিকা পালন করবে।

 

পুঁজিবাজারে চ্যালেঞ্জ সম্ভাব্য পদক্ষেপ সম্পর্কে তিনি বলেন, যেখানে চ্যালেঞ্জ আছে, সেখানে কাজের সুযোগ আছে। চ্যালেঞ্জ না থাকলে কাজ করার সুযোগ তৈরি হয় না। আমি চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করি। চ্যালেঞ্জ নিয়ে আমার কোন ভয় নেই। আমি মনে করি, পুঁজিবাজারকে সংস্কার করার চ্যালেঞ্জ নিতে পারবো। পুঁজিবাজারে বর্তমান যে অবস্থা বিরাজ করছে তা থেকে উতরে ওঠা বা পরিবর্তন আনা অবশ্যই সম্ভব। এটা আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।

ড. তারিকুজ্জামান আরও বলেন, পুঁজিবাজারে ভালো ভালো আরও কিছু কোম্পানি তালিকাভুক্ত করাতে হবে। এতে বাজারে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ যেমন বাড়াবে, তেমনি লেনদেনের পরিমাণও বাড়বে। পাশাপাশি বাজার মূলধন বাড়বে। প্রধানমন্ত্রী এরই মধ্যে সরকারি কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। তাই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মেনে সরকারি কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে আসবে বলেও তিনি মনে করছেন। এতে বাজার মূলধন অনেক বাড়বে। এছাড়া বেসরকারি বড় বড় কোম্পানিগুলোকে আনতে কমিশন কাজ করবে। তাদের কি ধরনের সুযোগ-সুবিধা আওতায় এনে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করানো যায় তা নিয়ে কাজ করবেন বলে জানান তিনি ।

 

তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে কারসাজিকে প্রশ্রয় দেয়ার কোন সুযোগ নেই। এটা বন্ধ করতেই হবে। কারসাজি বন্ধ ছাড়া বিনিয়োগকারীদের ভয় দূর হবে না। কমিশন এ বিষয়ে জোরালো পদক্ষেপ নেবে এবং কারসাজিকারীদের কঠিন শাস্তির আওতায় আনা হবে বলেও তিনি জানান।

উল্লেখ্য, ড. তারিকুজ্জামান AusAID স্কলারশিপ পেয়ে ডেকিন ইউনিভার্সিটি থেকে এমপিএ ও এমএফপি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। পরে নিউজিল্যান্ডের ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব ওয়েলিংটন থেকে বাংলাদেশের পুজিঁবাজার ও সুশাসন বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন এবং ওই বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচ বছর শিক্ষকতা করে পরবর্তীতে বিএসইসিতে উপ-পরিচালক হিসেবে যোগদান করেন।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS