ভিডিও

বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ রাখাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: জুন ০৭, ২০২৪, ০৯:৩৫ রাত
আপডেট: জুন ০৮, ২০২৪, ১২:৫৩ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ রাখাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিশেষ করে খাদ্যমূল্য... সেখানে উৎপাদন এবং সরবরাহ বৃদ্ধি করতে হবে। বৃষ্টির কারণে যেমন আলুর বীজ নষ্ট হয়েছে, এমন অনেক কিছুই আছে। আমরা এখনও উৎপাদনমুখী হলে খাদ্যে কোনও অভাব হবে না।’

শুক্রবার (৭ জুন) বিকালে তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ছয় দফা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেহেতু মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, নিম্ন ও সীমিত আয়ের মানুষের জন্য আমরা পারিবারিক কার্ড করে দিয়েছি। যারা একেবারে হতদরিদ্র, তাদের একেবারে বিনা পয়সায় খাবার দিচ্ছি। আর সামাজিক নিরাপত্তাও বিনা পয়সায় দিয়ে যাচ্ছি।

বাজেটে এবার মৌলিক চাহিদাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা গতকাল (বৃহস্পতিবার) বাজেট দিয়েছি। বিএনপির আমলে সবশেষ বাজেট মাত্র ৬২ হাজার কোটি টাকার ছিল। আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিয়েছিল ৬৮ হাজার কোটি টাকার। সেখানে আমরা ৭ লাখ ৯৮ হাজার কোটি টাকা বাজেট প্রস্তাব করেছি। এই বাজেটে এবার কতগুলো মৌলিক চাহিদা... মানুষের মৌলিক যে অধিকার; সেটাকে নিশ্চিত করতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্য, দেশীয় শিল্প এবং সামাজিক নিরাপত্তা—এগুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।’ এসব পদক্ষেপ মানুষের জীবনকে উন্নত করবে এবং নিশ্চয়তা দেবে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা এগিয়ে যাচ্ছিলাম, কোভিড-১৯ অতিমারি দেখা দিয়েছে, এই অতিমারির ফলে সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা হয়েছে, আমরাও সেই মন্দায় পড়ে গেলাম। সারা বিশ্বে প্রতিটি জিনিসের দাম বেড়ে গেলো। এরপর এলো ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ, এরপর স্যাংশন পাল্টা স্যাংশন; এসবের ফলে প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মানুষকে খাওয়াতে হবে আগে, আমাদের রিজার্ভ কত আছে না আছে, সেটার চেয়ে বেশি দরকার আমার দেশের মানুষের চাহিদাটা পূরণ করা। সেদিকে লক্ষ রেখে আমরা পানির মতো টাকা খরচ করেছি। বাংলাদেশ একমাত্র দেশ, যেটা কোনও উন্নত দেশও করেনি, বিনামূল্যে কোভিড-১৯-এর ভ্যাকসিন দিয়েছি, বিনা পয়সায় করোনা টেস্ট করিয়েছি। সেটা করেছি কেন? মানুষ বাঁচাতে। চিকিৎসা বিনা পয়সায়, যে ডাক্তার চিকিৎসা করেছেন তাদের প্রতিদিন আলাদা ভাতা দিতে হয়েছে। তারা যে চিকিৎসা দিচ্ছেন, এভাবে পানির মতো টাকা খরচ হয়েছে। তারপর যখন দাম বেড়েছে তখন ২০০ ডলারের গম ৬০০ ডলার করেও আমি কিনে নিয়ে এসেছি। ঠিক সেভাবে তেল—ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে, উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে। তারপরও আমরা যে এবার বাজেট দিতে পারলাম।’

মানুষের চাহিদা পূরণের ভাবনা থেকেই এই বাজেট দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অনেকে বসে বসে হিসাব কষে, আগে এত পার্সেন্ট বেড়েছে এবার কম পার্সেন্ট বাড়লো কেন? এখন সীমিতভাবে খুব সংরক্ষিতভাবেই আমরা এগোতে চাই। যাতে আমাদের দেশের মানুষের কষ্ট না হয়, মানুষের যে চাহিদাটা সেটা যেন পূরণ করতে পারি, সেদিকে লক্ষ রেখেই আমরা বাজেট করেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘পারিবারিক কার্ড আমরা দিচ্ছি, কারণ এখন মূল্যস্ফীতি বেশি। সব থেকে অবাক কাণ্ড আমাদের উৎপাদন বেড়েছে, চাল উৎপাদনই আমরা চারগুণ বাড়িয়েছি। প্রত্যেকটা জিনিসের আমরা উৎপাদন বাড়িয়েছি। মানুষের আর্থিক সচ্ছলতা বেড়েছে, মানুষের খাদ্য গ্রহণের পরিমাণও বেড়েছে। এখন আর দিনের পর দিন না খেয়ে থাকতে হয় না। কমপক্ষে দুই বেলা খাবার তো পাচ্ছে মানুষ। সেখানে গ্রহণটাও বেড়েছে, চাহিদাটাও বেড়েছে। আমরা উৎপাদনও বাড়িয়েছি।

অনুষ্ঠানে আগতদের একাংশ

কালো টাকা সাদা করা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা প্রশ্ন আসছে কালো টাকা নিয়ে। কালো টাকা নিয়ে আমি শুনি, অনেকে বলে কালো টাকা? তাহলে আর কেউ ট্যাক্স দেবে না। ঘটনা কিন্তু এটা না, এটা শুধু কালো টাকা না, জিনিসের দাম বেড়েছে, এখন এক কাঠা জমি যার সে-ই কোটিপতি। কিন্তু সরকারি যে হিসাব, সেই হিসাবে কেউ বেচে না, বেশি দামে বেচে বা কিছু টাকা উদ্বৃত্ত হয়। এই টাকাটা তারা গুঁজে রাখে। আর যাতে গুঁজে না রাখে, সামান্য একটা কিছু দিয়ে যাতে সেই টাকাটা আসল পথে আসুক, জায়গা মতো আসুক। তারপরে তো ট্যাক্স দিতেই হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমি বলি মাছ ধরতে গেলে তো আধার দিতে হয়, দিতে হয় না? আধার ছাড়া তো মাছ আসবে না। সেরকম একটা ব্যবস্থা, এটা আসলে আগেও হয়েছে। সেই তত্ত্বাবধায়ক আমলেই শুরু করেছিল, আর পরেও প্রত্যেক সরকারই করে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেই সুযোগটা আমরাও দিয়েছি, অল্প ট্যাক্স দিয়ে সেই টাকাটা তোমরা ব্যাংকে নিয়ে আসো, সেই ব্যবস্থাটাই হয়েছে। এটা নিয়ে নানান জনের নানান কথা। কিন্তু তারপরও যেগুলো মানুষের প্রয়োজন সেই ক্ষেত্রে ট্যাক্স কমিয়ে দিয়েছি।’

 

তিনি বলেন, ‘বিশ্ব পরিস্থিতি মাথায় রেখে আমাদের পরিকল্পনা নিয়ে চলতে হবে। আমাদের দেশে যারা হচ্ছে...কিছু ভালো লাগে না। তাদের ভালো না লাগাই থাক, কান দেওয়ার দরকার নাই।’

সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, শাজাহান খান, কামরুল ইসলাম, দলটির মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আব্দুস সবুর, কার্যনির্বাহী সদস্য সানজিদা খানম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি এবং ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণ প্রমুখ।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS