ভিডিও

পিএসসির প্রশ্নফাঁস

এলাকার সবাই প্রিয়নাথকে ‘চিটার’ বাটপাড় হিসেবেই জানে

প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২৪, ০৫:৩৩ বিকাল
আপডেট: জুলাই ১৪, ২০২৪, ০৫:৩৩ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

সরকারি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত থাকার অভিযোগে পিএসসির দুজন উপপরিচালক, একজন সহকারী পরিচালকসহ ১৭ জন গ্রেপ্তার হয়েছে। তাদের অন্যতম ঠাকুরগাঁওয়ের প্রিয়নাথ রায়। প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত প্রিয়নাথ দিনাজপুর ও ঢাকায় বাড়ি-গাড়িসহ অঢেল সম্পত্তির মালিক বনে গেছেন। তবে নিজ এলাকায় খোঁজ পাওয়া যায়নি তেমন কোনো সম্পদের। এখনও জরাজীর্ণ বাড়িতেই বসবাস করেন প্রিয়নাথের বৃদ্ধা মা।

 

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রামের রাইতু রায় ও রাজবালা দম্পতির সন্তান প্রিয়নাথ রায়। চার ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় তিনি। অভাবের সংসারে বেড়ে ওঠা প্রিয়নাথ এসএসসি পরীক্ষার সময় বাবাকে হারান। এইচএসসি পাসের পর বন বিভাগে চাকরি নেন। ডিগ্রি পাস করে সেনাবাহিনীর অডিটর পদে যোগ দেন। পরবর্তীতে জড়িয়ে পড়েন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস চক্রের সঙ্গে। চাকরি দেওয়ার নামে অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন প্রিয়নাথ। জড়িয়েছেন মামলায়ও। মামলার পর থেকে তাকে গ্রামে আসতে দেখেনি স্থানীয়রা। 

মোহাম্মদপুর গ্রামের বাসিন্দা আকবর আলী বলেন, প্রিয়নাথ চাকরি দেওয়ার নাম করে আমাদের এলাকার অনেক যুবকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিল। পরে যখন কারোই চাকরি হয়নি, তখন তাদের টাকাও আর ফেরত দেয়নি। এরপর থেকে সে আর গ্রামে আসেনি। বহুবার তাকে খুঁজতে বাড়িতে এসেছিল পুলিশ। 

 

ওই গ্রামেরই আরেক বাসিন্দা ওয়াদুদ হোসেন বলেন, তিনি এলাকার ছয়-সাতজন বেকার যুবকের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নাম করে ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন। কিন্তু তাদের কেউ চাকরি পায়নি। পরে তিনি বাড়ি আসা বন্ধ করে দেন। এখন গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার নামে খবর হচ্ছে। এর অনেক আগে থেকেই তাকে আমরা চিটার হিসেবেই জানি। 

স্থানীয় বাসিন্দা জয়দেব বলেন, প্রিয়নাথের মা ছাড়া পরিবারে সবাই ঠাকুরগাঁওয়ের বাইরে থাকে। সে চাকরি দেওয়ার নামে এলাকার কয়েকজনের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে, এটা জানতাম। তাকে খুঁজতে বাড়িতে পুলিশও এসেছে কয়েকবার। কিন্তু সে অনেকদিন ধরেই বাড়িতে আসে না। এলাকার সবাই প্রিয়নাথকে চিটার বাটপাড় হিসেবেই জানে। তবে সে যে এতবড় কাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়েছে, সেটা আমরা এলাকাবাসী ভাবতেই পারিনি। 

মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সোহাগ বলেন, প্রিয়নাথ রায় এলাকায় চাকরি দেওয়ার শর্তে একেকজনের সাথে চুক্তি করতেন ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকায়। কিন্তু চাকরি দিতে পারেননি। তখন থেকে তিনি আর ঠাকুরগাঁওয়ে আসেননি। এলাকায় তার কোনো জমিজমা নেই। তার মা এখানে একাই থাকেন। শুনেছি কয়েক বছর ধরে তিনি তার মায়ের খোঁজখবর নেন না।

প্রিয়নাথের মা ছেলের অপকর্মে জড়িয়ে পড়ার খবর শুনেছেন লোকমুখে। এজন্য তিনি দায়ী করলেন পুত্রবধূকে। কিন্তু দোষী হলেও ছেলের মুক্তি চান মা রাজবালা। তিনি বলেন, পাঁচ বছর ধরে ছেলের মুখ দেখি না। জানি না ছেলে আমার কী করে, কোথায় থাকে। এতকিছু শোনার পর এখন ভয় হয়। ছেলের মুখ আর দেখতে পারব কি না। মৃত্যুর আগে অন্তত একবার ছেলের মুখ দেখতে চাই।

ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবিএম ফিরোজ ওয়াহিদ বলেন, চাকরি দেওয়ার নাম করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে বিভিন্ন জেলায় প্রিয়নাথের নামে একাধিক মামলা রয়েছে। কিন্তু কয়েক বছর ধরে তিনি বাড়িতে আসেন না বলে জানি।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS