ভিডিও

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ইতিহাসের জঘন্যতম ঘটনা: মির্জা ফখরুল

প্রকাশিত: জুলাই ১৬, ২০২৪, ১০:৪৭ রাত
আপডেট: জুলাই ১৬, ২০২৪, ১০:৪৭ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের ন্যায়সঙ্গত ও যৌক্তিক আন্দোলন নস্যাৎ করতে অস্ত্র-শস্ত্র দিয়ে সরকার ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

তিনি বলেন, ‘সোমবার একদিনে বর্তমান সরকার যা ঘটিয়েছে, তা দেশের ইতিহাসের জঘন্যতম ঘটনা। ছাত্রলীগ যা করেছে তা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর চেয়ে কোনো অংশে কম? তারা হাসাপাতালে গিয়ে হামলা চালিয়েছে। স্বাধীনতার আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাকিস্তানের ছাত্র সংগঠন এনএসএফ সভা-সমাবেশ পণ্ড করতে পৈশাচিক নির্যাতন করত। বর্তমানে ছাত্রলীগ সেটিই করছে। ভয়াবহ নির্যাতন করে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমানোর চেষ্টা করছে সরকার।’

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

 

মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ঘনিষ্ঠ সহচর ন্যাশনালিস্ট আওয়ামী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান যাদু মিয়ার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে এই সভার আয়োজন করে ভাসানী অনুসারী পরিষদ। 

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীরা ন্যায়সঙ্গত দাবি নিয়ে রাজপথে নেমেছে। আমাদের সন্তানদের ওপর অন্যায়ভাবে ভয়াবহ আক্রমণ করা হয়েছে। শুধু ঢাকাতে নয় গোটা দেশে এই হামলা চালিয়েছে। গোটা দেশের শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোকে সাড়া দিয়ে পাশে দাঁড়ানো উচিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগ বর্বর হামলা চালিয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘দেশের অবস্থা ভয়াবহ। এই সরকার জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তারা জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারগুলো হরণ করেছে। দেশে আইনের শাসন, গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার নেই। মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা নেই। সরকার অত্যন্ত চতুরভাবে গণতন্ত্র নির্বাসিত করেছে। ধীরে ধীরে দেশকে পরনির্ভরশীল অর্থনীতিতে পরিণত করেছে।’

প্রধানমন্ত্রীর পিয়নের ৪০০ কোটি টাকার মালিক হওয়া প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘প্রায় ১৫-১৬ বছর ধরে কাজ করলেও তিনি তা জানতে পারলেন না? সে আবার নাকি বিদেশে চলে গেলেন। জনগণের মূল দাবি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের দাবিকে পাশ কাটানোর জন্য একটার পর একটা ঘটনা ঘটাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা জনগণের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র ফেরত চাই। আমরা সুষ্ঠু ও জবাবদিহিমূলক সরকার চাই, ব্যবস্থা চাই। কিন্তু সরকার একের পর এক ইস্যু তৈরি করে জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে চেষ্টা করছে। তাই এই কঠিন সময়ে রুখে দাঁড়াতে না পারলে দেশ ও জাতির অস্তিত্ব বিপন্ন হবে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এখন দেউলিয়া রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে। তারা এখন সর্ম্পূণ নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে আমলা ও তাদের তথাকথিত বাহিনীর ওপর। যারা আজকে পুরো রাষ্ট্রে ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে। আজকে স্বাধীনতার ৫৩ বছরেও আমাদের অধিকার নিয়ে লড়াই করতে হচ্ছে। কোটা ব্যবস্থা তো প্রধানমন্ত্রীই বাতিল করেছিলেন। আবারও আদালতকে ব্যবহার করে একটা ইস্যু বানিয়েছে। এটা আমাদের জন্য দুর্ভাগ্য। এই সরকারকে বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে আমাদের অধিকার আদায় করে নিতে হবে।’

মশিউর রহমান যাদু মিয়ার স্মৃতিচারণ করে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ‘তার মতো লোকদের একীভূত করে জাতীয়তাবাদী দল গঠন করেছিলেন জিয়াউর রহমান। তিনি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টিকে বিলুপ্ত করে বিএনপিতে একীভূত করে দেন। তিনি আমাদের পথ দেখিয়েছিলেন। দেশের কল্যাণের জন্য সব সময় ভাবতেন।’ 

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘শুধুমাত্র একজনের বক্তব্যের সমালোচনা করার কারণে সারা দেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কী পরিমাণ সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। পাকিস্তান আমলেও এমন বরর্বতা দেখা যায়নি। ছাত্রলীগের হামলা থেকে রক্ষা পায়নি নারী শিক্ষার্থীরাও। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে সারা দেশে দমন-পীড়ন ও শোষণ করতে চাইছে সরকার। এই স্বৈরাচার ও নৃশংস সরকারকে হটাতে হলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার বিকল্প নেই।’

ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলুর সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব ড. আবু ইউসুফ সেলিমের পরিচালনায় আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির (জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহ, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, বরকত উল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাৎ, জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, নূর মোহাম্মদ খান প্রমুখ।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS