ভিডিও

কারফিউ শিথিলতার সময় বাড়ছে

অফিস আদালত ব্যাংক খুলছে কাল

প্রকাশিত: জুলাই ২৩, ২০২৪, ১০:৪৮ রাত
আপডেট: জুলাই ২৪, ২০২৪, ০১:৪১ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

সকল সরকারি ও বেসরকারি অফিস এবং  ব্যাংক বুধবার থেকে খুলছে। আপাতত দুই দিন (বুধ ও বৃহস্পতিবার) অফিস ও ব্যাংক সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে আজ এ কথা জানানো হয়েছে। এর আগে সরকার ২১ ও ২২ জুলাই (রোব ও সোমবার) দুই দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেছিল। পরবর্তীতে আরও একদিন (মঙ্গলবার) সরকারী ছুটি বাড়ানো হয়। তবে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আর ছুটি বাড়ানো হয়নি। 
এদিকে, ট্রাভেল এজেন্সি সকাল ১১টা থেকে ২টা পর্যন্ত খোলা রাখা হবে। যদি ইন্টারনেট সেবা পুরোপুরি ঠিক হয় তাহলে একই সময় শেয়ারবাজারও খোলা থাকবে বলে জানানো হয়েছে। বিচার কাজও চলবে আপিল বিভাগ, হাইকোর্ট ও নিম্ন আদালতে। আজ রাতে এ ঘোষণা দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। 
দোকান মালিক সমিতিও জানিয়েছে, তারা কারফিউ শিথিলের সময় দোকান খোলা রাখবে।
শিথিলের সময় দূরপাল্লার বাস চলবে বলেও সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব এনায়েত উল্যাহ। অভ্যন্তরীণ রুটের বাসের বিষয়ে তিনি বলেছেন, কোম্পানিগুলো চাইলে কারফিউর নিয়ম মেনে চালাতে পারবে। ট্রেন কবে চলবে এ ব্যাপারে রেলওয়ের পরিচালক নাহিদ হাসান খান বলেন, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নেই। সরকারের নির্দেশনা সাপেক্ষে ট্রেন চালু হবে।
এদিকে, অফিস-আদালত খুলে দেওয়া হলেও সারাদেশে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে সরকার থেকে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জারি করা কারফিউ আপাতত বুধবার এবং বৃহস্পতিবার ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ এবং নরসিংদীতে বলবৎ থাকবে। তবে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বিরতি থাকবে।
বগুড়ায় টানা ৫ দিন বন্ধ থাকার পর বুধবার স্বল্প সময়ের জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো খোলার পাশাপাশি ব্যাংক লেনদেন শুরু হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার ব্যাংক খোলা থাকলেও শহরে পুলিশ আন্দোলনকারী সংঘর্ষের কারণে লেনদেন বন্ধ হয়ে যায় প্রথমার্ধেই। এর পর শুক্রবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত টানা ৫ দিন ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠনগুলোতে লেনদেন পুরোপুরি বন্ধ ছিলো। ক্ষুদ্র ঋণদাতা সংগঠনগুলোও ছিলো বন্ধ। ব্যাংকের এটিএম বুথগুলোও ছিলো বন্ধ। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো খুলতে যাওয়ায় ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ প্রাণ ফিরে পাচ্ছে। ব্যাংক খুলে যাওয়ায় শুরু থেকেই টাকা উত্তোলনের চাপ পড়তে পারে। এছাড়াও গ্যাস বিলসহ বিভিন্ন বিল দেওয়ার ক্ষেত্রেও চাপ পড়তে পারে ব্যাংকগুলোতে। অন্যদিকে ব্রডব্যান্ড চালু হলে অনলাইনভিত্তিক  সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানেও চাপ পড়তে পারে। এ ক্ষেত্রে পাসপোর্ট অফিস, বিআরটিএ, ভূমি অফিস, জন্মনিবন্ধন, মৃত্যুনিবন্ধন সার্ভারে চাপ বাড়তে পারে। ইতোমধ্যে বিকাশ, নগদ, রকেট  সেবা চালু হওয়ায় জনমনে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে।
কারফিউয়ের শিথিলতার সময় বাড়ছে : দেশের বিভিন্ন স্থানে কারফিউ শিথিল করা হচ্ছে। আবার কোথাও কোথাও শিথিলতার সময় আরও বাড়ানো হচ্ছে। প্রথম দিন শনিবার মাত্র ২ ঘন্টার জন্য কারফিউ শিথিল করা হয়েছিল। যাতে সাধারণ মানুষ তাদের নিত্যদিনের প্রয়োজন মিটাতে পারে। এরপর প্রতিদিন ধীরে ধীরে শিথিলতার সময় আরও বাড়ানো হয়। ৩ ঘন্টার পর ৪ ঘন্টা কারফিউয়ের মেয়াদ করা হয়েছিল রাজধানী ঢাকাসহ এর আশপাশের জেলাগুলোতে। এটি আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে। দুই দিন রাজধানী ঢাকা নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও নরসিংদীতে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল করা হয়েছে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানিয়েছেন। 
এর আগে সংঘাত এবং শান্তিপূর্ণ ৫ পরিবেশ বিবেচনা করে কোন কোন জেলায় কারফিউ শিথিল করা হয়। জয়পুরহাটে দিনে কোন কারফিউ ছিল না। রাতে আবার কারফিউ শুরু হয়েছে। 
মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, ঢাকা গাজীপুর নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদীতে কারফিউ আরও দুই দিন বহাল থাকবে। তবে শিথিল থাকবে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। এই জেলাসমূহে কারফিউয়ের বিষয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ই সিদ্ধান্ত নেবে। বাকি জেলাগুলোতে কারফিউ থাকার সিদ্ধান্ত নেবেন সংশ্লিষ্ট জেলার প্রশাসকরা। তারা পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেবেন। 
পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে আসছে। কোথাও তেমন বড় কোনো সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়নি। আজ রাজধানী থেকে বেশ কিছু দূরপাল্লার বাসও ছেড়ে গেছে। অন্য দিনের তুলনায় রাস্তায় লোক চলাচল ছিল বেশি। কারফিউ বিরতির সময় লোক ও যানবাহনের চাপ ছিল প্রধান প্রধান সড়ক ও নিত্যপণ্যের বাজারগুলোতে। যে যার প্রয়োজনীয় কাজ মিটিয়ে আবারও ফিরে যান বাসায়।  আজ রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সশস্ত্র সেনাসদস্যদের টহল দিতে দেখা যায়। এ সময় গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে নাগরিকদের উদ্দেশে বিশেষ সতর্কতামূলক মাইকিং করেন সেনাসদস্যরা। রাস্তার মোড়ে পথচারীদের অনেকে সেনা তল্লাশির মুখে পড়েন। কারফিউ চলাকালে অহেতুক বাইরে ঘোরাফেরায় নিরুৎসাহিত করা হয়। পাশাপাশি দেশের গুরুত্বপূর্ণ সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। 



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS