কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে নিয়ম ভেঙে ক্রমাগত বালি উত্তোলনের নামে চর কেটে সাবাড় করছে বালু ব্যবসায়ীরা। এর ফলে নতুন চর সৃষ্টি যেমন হতে পারছে না তেমনি চরের নানাস্থানে ভাঙন দেয়ায় শঙ্কিত চরবাসী। তারা দ্রুত চরকাটা বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
জানা যায়, গত ১২ বছর যাবৎ সরকারি ইজারার মাধ্যমে কাজিপুর সদরের যমুনা নদী থেকে বালু উত্তোলন শুরু হয়। প্রথমে নিয়ম মেনে বালু উত্তোলন করা হলেও পরবর্তীতে ইজারাদার ও তার লোকজন ইচ্ছে মতো যত্রতত্র বালু উত্তোলন ও মজুদ করে বিক্রি করতে থাকে। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, সরকারি নিয়মে কাজিপুর সদর মৌজার ৬টি পয়েন্টে বালু উত্তোলন ও সংরক্ষণের মাধ্যমে বিক্রির নিয়ম বেঁধে দেয়া হলেও ইজারাদার তা মানছেন না।
নিয়ম ভেঙে পুরো কাজিপুরের যমুনার বিভিন্ন স্থান থেকে শক্তিশালী ড্রেজার দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার সিএফটি বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। উত্তোলিত বালু যমুনার নদী সংরক্ষণ প্রকল্প এলাকা থেকে এক কিলোমিটার দূরত্বে রাখার নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছে না।
একেবারে যমুনার পাড় ঘেঁষে বালু রাখায় গত বছর কাজিপুর থানা এলাকায় নদীতীর সংরক্ষণ প্রকল্পে ধস দেখা দিলে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। ব্যবসায়ীরা বর্তমানে বালু তুলে তা উপজেলার কমপক্ষে ৩৪টি স্থানে রেখে বিক্রি করছে। এতে করে কাজিপুর উপজেলা চত্ব¡র ও থানা এলাকার বাতাসে বালুর কণা ছড়িয়ে পড়েছে।
সচেতন মহলের দাবি, এতে করে পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের বালুবাহিত রোগবালাই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া অতিরিক্ত বালু বোঝাই যানবাহন চলাচলের কারণে এলাকার রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ঘটছে মাঝে মধ্যেই মারাত্মক সড়ক দুর্ঘটনা। সেই সাথে ঝুঁকিতে পড়েছে যমুনা নদীতীর সংরক্ষণ কাজ। নতুন চর সৃষ্টি বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে।
কাজিপুর সদরের মানিকপোটল গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ফরিদুল ইসলাম মাস্টার জানান, আমরা যমুনার ভাঙন কবলিত চর এলাকার মানুষ। পূর্বে আমাদের বাড়িঘর নদীতে ভেঙে গেলেও কয়েকবছর পূর্বে আমাদের পুরো গ্রাম চর হয়ে জেগে উঠেছে। আমরা সেখানে ঘরবাড়ি করে বসবাস ছাড়াও আবাদ বসত করে জীবিকা নির্বাহ করছি। কিন্তু নিয়ম ভেঙে বালু উত্তোলন করায় স্থায়ী এই চরের নানা স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। নতুন করে চরও সৃষ্টি হচ্ছে না।
এতে করে বালু ব্যবসায়ীরা লাভবান হলেও বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর ক্ষতি হচ্ছে। কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহরাব হোসেন জানান, নিয়ম ভাঙ্গার দায়ে অনেকবার বালু ব্যবসায়ীদের অর্থদন্ড দেয়া হয়েছে। আর মাইজবাড়ি চরে গিয়ে দেখা গেছে, যেখান থেকে ধুনটের লোকজন বালু উঠাচ্ছে সেটি আমাদের কাজিপুরের অংশ নয়।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।