ভিডিও

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার একটি গ্রাম রশিদপুর নয়াপাড়া নেই কোন স্কুল, রাস্তা ও সেতু

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৪, ১১:০৪ রাত
আপডেট: সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৪, ১১:০৪ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি : সিরাজগঞ্জের জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার রশিদপুরনয়াপাড়া যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন একটি অবহেলিত গ্রাম। উল্লাপাড়া উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে হাটিকুমরুল ইউনিয়নে এই গ্রামের অবস্থান। গ্রাম থেকে বের হবার কোন রাস্তা নেই।

গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে সরস্বতী নদী। নদীর ওপর নেই কোন সেতু। বর্ষা মৌসুমে পারাপারের একমাত্র বাহন ডিঙি নৌকা। খরা মৌসুমে বাঁশের সাঁকো। গ্রামে নেই কোন প্রাথমিক বিদ্যালয়। দু’ হাজারেরও বেশি মানুষের বাস এই গ্রামে। পার্শ্ববর্তী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দূরত্ব আড়াই কিলোমিটার। গ্রামে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২শ’।

এসব শিক্ষার্থীকে প্রতিদিন নদীপার হয়ে দূরবর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে যাতায়াতে পোহাতে হয় অনেক দুর্ভোগ। এছাড়া গ্রামের সাধারণ লোকজনকেও বাইরে বের হতে ফসলের মাঠের আলপথ দিয়ে চলতে হয়। এসব নানামুখী সমস্যা মাথায় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন এখানকার মানুষ।

রশিদপুরনয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আশরাফ আলী, শাহীন রেজা, লিখন আহমেদ ও আব্দুল হাই জানান, উল্লাপাড়া উপজেলার মধ্যে খুবই অবহেলিত গ্রাম তাদের রশিদপুর নয়াপাড়া। স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে এই গ্রামে প্রবেশের একটি রাস্তার জন্য তারা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কাছে অনেকবার আবেদন করেছেন।

আবেদন করেছেন পাশের অপ্রশস্ত সরস্বতী নদীর ওপর একটি পাকা সেতুর। কিন্তু তাদের এই আবেদন কখনই আমলে নেয়নি কেউ। গ্রামে অনেক শিক্ষার্থী। কিন্তু নেই কোন প্রাথমিক বিদ্যালয়। পার্শ্ববর্তী চড়িয়া শিকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দূরত্ব আড়াই কিলোমিটার। বিশেষ করে শিশু শিক্ষার্থীদের গ্রাম থেকে উক্ত বিদ্যালয়ে যাতায়াতে সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয়।

খরা মৌসুমে বাঁশের সাঁকোতে নদীপাড় হবার সময় প্রায়শ:ই দুর্ঘটনার শিকার হয় শিক্ষার্থীরা। বর্ষায় ছোট ডিঙি নৌকায় ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হয় শিশুরা। গ্রাম থেকে তিন কিলোমিটার দূরে বগুড়া-নগরবাড়ি সড়কে যেতে হয় গ্রামবাসীর আলপথ পেরিয়ে। বৃষ্টির দিনে যাতায়াতে দুর্ভোগের শেষ থাকে না।

কিন্তু এই দুর্ভোগ নিরসনের কোন উপায় তাদের জানা নেই। এমন বিচ্ছিন্ন অবস্থায় বসবাস করতে হচ্ছে পুরো গ্রামবাসীর। ভুক্তভোগীরা অবিলম্বে তাদের গ্রাম থেকে বের হবার একটি রাস্তা, নদীতে পাকা সেতু নির্মাণ ও গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য সরকারের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন।

এব্যাপারে উল্লাপাড়া স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী আবু সায়েদ উল্লেখিত গ্রামের মানুষের দীর্ঘদিনের চলাচলের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করেন। তিনি জানান, অতি সম্প্রতি তার কার্যালয় থেকে ওই গ্রামের সাথে পার্শ¦বর্তী বগুড়া-নগরবাড়ি সড়কের একটি সংযোগ রাস্তা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৫শ’ মিটার রাস্তা নির্মাণ করা হবে।

পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে অবশিষ্ট রাস্তা নির্মাণের পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। রাস্তার কাজ শেষ হলে সরস্বতী নদীর ওপর একটি পাকা সেতু নির্মাণের বিষয়টি বিবেচনাধীন আছে স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরের। তবে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে গ্রামবাসীকে সময় দিতে হবে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS