নিউজ ডেস্ক: কিশোরগঞ্জ পৌর শহরের ভৈরবপুর দক্ষিণ পাড়া এলাকার আইস কোম্পানি মোড়ের ভজন মিয়ার বাড়িতে দুই নারীর ঝগড়ার জেরে শাহারা বেগম (৫০) নামে এক নারীকে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩ নারীসহ মোট চারজনকে আটক করেছে ভৈরব থানা পুলিশ।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শাহারা বেগম উপজেলার আগানগর ইউনিয়নের ছাগাইয়ার গ্রামের গকুল নগর এলাকার বাবুল মিয়ার স্ত্রী।
এ ঘটনায় আটককৃতরা হলেন, ভজন মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া রতন মিয়া, তার স্ত্রী খোদেজা বেগম, মেয়ে স্মৃতি বেগম ও বাবুল মিয়ার মেয়ে সোমা বেগম।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিহত শাহারা বেগম ও অভিযুক্ত খোদেজা বেগম দীর্ঘদিন যাবৎ ভজন মিয়ার বাড়িতে পাশাপাশি ভাড়া বাসায় সপরিবারে বসবাস করছিলেন। গত এক মাস আগে শাহারা বেগম খোদেজা বেগমের মেয়ের জামাইকে একটি এনজিও থেকে টাকা তুলে দেন। এতেই দুই পরিবারের মাঝে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এদিকে একই বাড়িতে থাকায় পানি ব্যবহারসহ নানা কারণে তাদের মাঝে দ্বন্দ্ব লেগে থাকতো। এছাড়া বাসায় অতিরিক্ত লোক আসাকে কেন্দ্র করে ঝগড়া হতো।
ঝগড়া থেকে রেহায় পেতে শেষমেশ নিহত শাহারা বেগম ভাড়া বাসা ছেড়ে দিয়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার সকালে নিজের জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়ার সময় শাহারা বেগমের খোদেজা বেগমের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। পরে সকালে কথা কাটাকাটির জের ধরে বিকেলে খোদেজা বেগমের পরিবার শাহারা বেগমের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এতে গুরুতর আহত অবস্থায় নিজের প্রাণ বাঁচাতে দৌড়ে গিয়ে বাড়ির পাশের রাস্তায় পড়ে যায় শাহারা বেগম। এ সময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ভৈরব থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে আসে এবং হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে ওই ৩ নারীসহ ৪ জনকে আটক করে হেফাজতে নেয়।
এ বিষয়ে নিহতের বোনের ছেলে হীরা মিয়া বলেন, এরা খুবই বাজে স্বভাবের ছিল। প্রায় সময় আমার খালার সঙ্গে খোদেজা বেগমের পরিবারের ঝগড়া লেগেই থাকতো। বুধবার বিকেলে অভিযুক্ত রতন মিয়া, খোদেজা বেগম, স্মৃতি, সোমা ও রাবেয়া সম্মিলিতভাবে আমার খালার ওপর হামলা চালায় এবং বেধড়ক মারধর করে। এদের মধ্যে স্মৃতি বেগম বেশি মারধর করে। এছাড়া সামান্য বিষয় নিয়ে তারা নির্মমভাবে আমার খালাম্মা শাহারা বেগমকে হত্যা করেছে। প্রশাসনের কাছে অভিযুক্তদের ফাঁসির দাবি জানাই।
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হাসমত উল্লাহ বলেন, ঝগড়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত ৩ নারীসহ চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কিশোরগঞ্জ মর্গে পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।