ভিডিও

চিকিৎসায় অনেক পিছিয়ে নওগাঁ সরকারি হাসপাতাল

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৪, ০৬:০০ বিকাল
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৪, ০৬:০০ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর ১১টি উপজেলায় জনসংখ্যা প্রায় ৩০ লাখ। এ জেলাটি চিকিৎসার দিক দিয়ে এখনও অনেক পিছিয়ে রয়েছে। তারপরও সরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা সেবার মান বেড়েছে। বেসরকারি (প্রাইভেট) ক্লিনিক ও হাসপাতালগুলোতে রোগীদের সেবার নামে এক প্রকার গলাকেটে টাকা আদায় করার মতো অবস্থা।

যদিও কিছু ক্লিনিক ও হাসপাতালে ভাল সেবা দেওয়া হলেও বাঁকীগুলোর অবস্থা হ-য-ব-র-ল। সেখানে স্বাস্থ্যসেবার মান একেবারেই নিম্নমানের। বেশি লাভের আশায় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ ডাক্তার এর বিপরীতে ওয়ার্ড বয় বা এর সাথে সংশ্লিষ্ট অন্য কাউকে দিয়ে অপারেশন করান। এতে প্রায় ভুলভাল অপারেশনে রোগী মারা যাওয়ার অভিযোগও রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জেলার ১১টি উপজেলার জনসংখ্যা প্রায় ৩০ লাখ। চিকিৎসাসেবা প্রদানে ১৯৮৯ সালে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট নওগাঁ সদর হাসপাতাল স্থাপিত হয়। এরপর ২০০৫ সালে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। পরবর্তীতে ২০১৩ সালের এপ্রিলে প্রায় ২০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৫০ শয্যা বিশিষ্ট ৮ম তলা ভবনের নির্মাণ কাজ শুরু হয়।

পুরনো ভবনের সাথে নতুন ১৫০ শয্যা বিশিষ্ট ভবন যুক্ত হয়ে ২৫০শয্যায় উন্নীত হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ২০২০সালের ৩১ আগস্ট ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের কার্যক্রম চালানোর জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে পূর্বে যে জনবল দিয়ে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হতো ২৫০ শয্যার ক্ষেত্রেও তাই রয়েছে।

২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল হওয়ার পর থেকে সেবা নিতে বেড়েছে রোগীর সংখ্যা। জেলাবাসীর ভরসার একমাত্র আস্থা এ হাসপাতাল। উপজেলা থেকে সেবা নিতে আসেন রোগীরা। হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা বাড়ার পর জেলাবাসীর স্বপ্ন ছিল অন্তত চিকিৎসা সেবার মান বাড়ার পাশাপাশি সেবা পেয়ে উপকৃত হবে। কিন্তু বাস্তবে তার উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে।

বাস্তবে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল হলেও কার্যক্রম চলছে ১০০ শয্যার। এই ১০০ শয্যার জন্য যে পরিমাণ চিকিৎসক প্রয়োজন সেটাও নেই। এতে করে বাড়তি রোগী সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। ২৫০ শয্যার পূর্ণাঙ্গ অনুমোদন, জনবল নিয়োগ এবং অবকাঠামোগত সুবিধা দেওয়া হলে হাসপাতালের চিকিৎসা সেবার মান বাড়ার পাশাপাশি জেলাবাসীদের দূর্ভোগ লাঘব হবে এমনটাই প্রত্যাশা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ১০০ শয্যার হাসপাতালে উপ-পরিচালক, শিশু, মেডিসিন, ফরেনসিক মেডিসিন, সার্জারি, চক্ষু, চর্ম ও যৌন, অর্থোপেডিকস, রেডিওলজি ইমেজিং, কার্ডিওলজি, নাক-কান-গলা, গাইনি এন্ড অবস, প্যাথলজি, নেফ্রোলজি, নিউরোসার্জারি ও মেডিকেল অফিসার মোট ৫৬ জন চিকিৎসকের স্থলে রয়েছে মাত্র ৩৫ জন।

এর মধ্যে ২৮ নিয়োগ প্রাপ্ত বাকি ৭জন ডেপুটেশন কর্মরত আছেন। নার্স ৮১ এর স্থলে ৮০জন কর্মরত আছেন একটি পদশুন্য হয়েছে। বর্তমানে ১৩ জন মেডিকেল অফিসার দিয়ে ইনডোর ও আউটডোর নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। প্রতিদিন আউটডোরে প্রায় ১৫শ’ থেকে ১৭শ’ এবং ইনডোরে প্রায় দুই শতাধিক রোগীর চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়।

জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার সদর উপজেলা ছাড়া বাঁকী ১০টি উপজেলায় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। যেখানে ডাক্তারের পদসংখ্যা ৩০৯ জন এর বিপরীতে আছে ১৭৬ জন। অর্থ্যাৎ পদশুণ্য রয়েছে ১৩৩ জন। এছাড়া নার্স/সেবিকা ৩৮৪ জন এর বিপরীতে আছে ৩৫৫ জন। পদশুণ্য রয়েছে ২৯ জন।

নওগাঁ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল তত্ত্বাবধায়ক (উপ-পরিচালক) ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী বলেন, ২৫০ শয্যার হাসপাতাল বলা হলেও এখন পর্যন্ত অনুমোদন রয়েছে ১০০ শয্যার। আর এ ১০০ শয্যার হাসপাতালের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। তবে এ ১০০ শয্যা হাসপাতাল চালাতে যে পরিমাণ জনবল দরকার তা নেই। এতে করে চিকিৎসা সেবা ব্যহত হচ্ছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় থেকে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জন্য প্রশাসনিক অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সেবার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, নওগাঁ মেডিকেল কলেজের নিজেস্ব কোন ভৌত অবকাঠামো না থাকায় হাসপাতালের পুরাতন ভবনের দ্বিতীয় তলায় তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এ ভবন থেকে মেডিকেল কলেজ সরানোর প্রয়োজন।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS