আদালতে স্বীকারোক্তি
সান্তাহার (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার সান্তাহারে গৃহবধূ রাজিয়া সুলতানাকে (৪০) হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন তার দ্বিতীয় স্বামী আব্দুর রশিদ (৫৫)। গত বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে র্যাব।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, আব্দুর রশিদ চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার শ্রীকান্দার গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা। দ্বিতীয় স্ত্রী রাজিয়া সুলতানাকে নিয়ে তিনি উপজেলার সান্তাহার চা-বাগান এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতো। গত ৯ ফেব্রুয়ারি ভাড়া বাসায় স্ত্রী রাজিয়া সুলতানাকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে পালিয়ে যায় আব্দুর রশিদ। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন দুপুরে রাজিয়ার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় বুধবার র্যাব সদস্যরা অভিযান চালিয়ে গাজীপুরের সালনা বাজার এলাকা থেকে আব্দুর রশিদকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর আব্দুর রশিদ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বলে, তার প্রথম স্ত্রী ১২ বছর আগে সৌদি আরব চলে যায়।
তিন বছর আগে সে বিধবা রাজিয়া সুলতানাকে বিয়ে করে। রাজিয়ার আগের পক্ষের স্বামীর এক মেয়ে ও জামাই রয়েছে। আব্দুর রশিদ ব্যবসায়িক কাজে ঢাকায় বসবাস করতো। ১৫-২০ দিন পরপর সান্তাহারে স্ত্রীর কাছে আসতো। জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুর রশিদ আরও বলে, গত ৪ ফেব্রুয়ারি সে ঢাকা থেকে সান্তাহারে আসে। এরপর থেকেই তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ শুরু হয়।
৯ ফেব্রুয়ারি বিকেলে সে বাসায় ফিরে দেখে, মেয়ে ও মেয়ের জামাইকে নিয়ে তার স্ত্রী মাদক সেবন করছে। এ দৃশ্য দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে সে বঁটি দিয়ে স্ত্রীকে কুপিয়ে পালিয়ে বগুড়া স্টেশনে যায়। সেখানে রাত যাপন করে পরদিন গাজীপুরে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় পরের দিন রাজিয়া সুলতানার মা মর্জিনা বেগম বাদী হয়ে আদমদীঘি থানায় আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে মামলা করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে র্যাবের কোম্পানি কমান্ডার পুলিশ সুপার মীর মনির হোসেন বলেন, মেয়ে ও তার জামাইকে সঙ্গে নিয়ে মাদক সেবন করতে দেখে রাগে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে রশিদ স্ত্রীকে হত্যা করে। গত বৃহস্পতিবার আদালতের জবানবন্দিতে সে এই তথ্য দিয়েছে।
আদমদীঘি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজেশ চক্রবর্তী বলেন, গ্রেপ্তার আব্দুর রশিদকে বৃহস্পতিবার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। আদালতের বিচারক সাদিয়া আফসানা রিমা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেন। জবানবন্দিতে সে স্ত্রী রাজিয়া সুলতানাকে বঁটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যার কারণ উল্লেখ করে দায় স্বীকার করে।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।