ভিডিও

সারিয়াকান্দিতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন থামছে না

প্রকাশিত: মার্চ ২৫, ২০২৪, ০৭:০৬ বিকাল
আপডেট: মার্চ ২৫, ২০২৪, ০৭:০৬ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়া সারিয়াকান্দিতে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব। অর্ধ শতাধিক অবৈধ বালু উত্তোলন যন্ত্র চলমান। বন্যা নিয়ন্ত্রণ স্পার এবং গুরুত্বপূর্ণ সেতুর পাশেও চালু করা হয়েছে বালুর পয়েন্ট। এর ফলে হুমকি পড়েছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং উপজেলার জনপদ ও কৃষিজমি।

অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে গত বন্যার সময় উপজেলার হাটশেরপুর ইউনিয়নের হাসনাপাড়া স্পারটির গোড়ায় ভাঙনের  কবলে পরে। বর্তমানে সেই স্পারের কাছেই নিজবলাইল স্পার থেকে গত কয়েকমাস ধরেই অবৈধভাবে ট্রাক্টর দিয়ে পরিবহন করা হচ্ছে বালু। বালু পরিবহনের জন্য স্পারটির গোড়ায় স্পার কেটে তৈরি করা হয়েছে বালু উত্তোলনের রাস্তা।

স্পারের ১০০ মিটারের মধ্যে থেকে সারাদিন বেশ কয়েকটি ট্রাক্টর দিয়ে পরিবহন করা হয় বালু। এছাড়া এ স্পারটির দক্ষিণ পাশেও বোরিং করে তোলা হচ্ছে বালু। এভাবে বালু উত্তোলন করলে এ বন্যায় স্পারটি ভাঙনের কবলে পরবে বলে অশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। তাছাড়া এ স্পার দিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে এর মাটির সংযোগ সড়কটি নষ্ট হয়ে একেবারেই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নে বাঙালি নদীর উপর নির্মিত জোরগাছা সেতুর উপর দিয়ে পূর্ব বগুড়ার লাখো এলাকাবাসী চলাচল করেন। গত কয়েক সপ্তাহ আগে এ সেতুর উত্তর পশ্চিম কোণায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের পয়েন্ট চালু করা হয়েছে নতুন করে। এখানে সেতুর ১০০ মিটার এলাকা থেকে বোরিং করে ৮০ ফিট নিচে থেকে  তোলা হচ্ছে  মোটা বালু।

যা ট্রাক বা ট্রাক্টরের সাহায্যে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করা হচ্ছে চড়া দামে। এভাবে সেতুর কাছ থেকে বালু  তোলায় যেকোনও সময় সেতুটি বাঙালি নদী ভাঙনের শিকার হবে বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। এখানে বালু উত্তোলনের নেতৃত্বে রয়েছেন স্থানীয় বিএনপির নেতা সুজন।

একই ইউনিয়নের ভেলাবাড়ী গ্রামের ভেলাবাড়ী জামে মসজিদের দক্ষিণ পূর্ব পাশে বাঙালি নদীর দক্ষিণ পাশে ৩ টি এবং উত্তর পাশে ৩ টি বালুর পয়েন্টে নদীর ৮০ ফিট নিচ থেকে বোরিং করে অবৈধভাবে বালু তুলে ট্রাক্টর এর সাহায্যে বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। ট্রাক্টরের বড় চাকায় মাটির রাস্তায় গভীর খাদের সৃষ্টি হয়েছে।

এছাড়া যেস্থান থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে তার চারপাশে গভীর খাদের সৃষ্টি হওয়ায় চারপাশের শতশত বিঘা কৃষিজমি ও ভেলাবাড়ী গ্রামের হাজারো পরিবার হুমকিতে রয়েছে। বালু উত্তোলনরত শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এখানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের নেতৃত্বে রয়েছেন ভেলাবাড়ী গ্রামের জুয়েল মিয়া।

একই ইউনিয়নের জোরগাছা সেতুর পূর্ব উত্তর পাশেও বেশ কয়েকটি বালু উত্তোলন ড্রেজার মেশিন চালু রয়েছে। যা দিয়ে  ভেলাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের পূর্ব পাশের বিশালাকার একটি ডোবা ভরাট করা হয়েছে এবং জোরগাছা গ্রামের নিচু এলাকা ভরাটের কাজ চলছে।

গত বছরগুলোর মত উপজেলার সদর ইউনিয়নের পারতিত পরল গ্রামের স্লুইচ গেইটের পূর্বপাশে যমুনা নদী থেকে বালু উত্তোলনের একটি পয়েন্ট আবারো নতুন করে চালু হয়েছে। সেখানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধের ১০০ মিটার এলাকা থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে বালু। এতে ভাঙন হুমকিতে রয়েছে সারিয়াকান্দির একমাত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ।

উপজেলার নারচী ইউনিয়নের চরগোদাগাড়ী গ্রামে বেশ কয়েকটি ড্রেজার মেশিন দিয়ে বাঙালি নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে পাইপের মাধ্যমে বিভিন্ন নিচু এলাকা ভরাট করছে। একই গ্রামের টুকুর  খেয়ার ঘাটেও ২ টি বালু উত্তোলনের  ড্রেজার মেশিন চালু রয়েছে।

এছাড়া খোঁজ নিয়ে জানা গেছে উপজেলার কাজলা, কর্ণিবাড়ী এবং বোহাইল ইউনিয়নের দুর্গম চরাঞ্চলের একাধিক স্থানে  বোরিং করে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

জোরগাছা সেতু এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের মূল হোতা সুজন মিয়া বলেন, মাত্র ৩ সপ্তাহ ধরে এখানে বালু তুলছি। দু একদিন বালু তুললে ব্রিজের কিছুই হবে না।

এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান বলেন, ইতিপূর্বে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের সরাসরি জেলে পাঠানো হয়েছে। আবারো বালু উত্তোলন শুরু হয়েছে বিষয়টি আমার জানা নেই। অতি দ্রুত অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS