ভিডিও

লতা-পাতা ও ছাল-বাকল নিয়ে আতাউরের ঔষধি ভান্ডার

প্রকাশিত: মে ২০, ২০২৪, ০৬:০৩ বিকাল
আপডেট: মে ২০, ২০২৪, ০৬:০৩ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি : রাস্তার পাশে বেড়ে ওঠা গাছ, লতা-পাতা আর বাজার থেকে কিনে আনা গাজর, পেয়ারা, করলাসহ প্রায় ৪০ প্রকার লতাপাতা, গাছের ছালের এক ঔষধি ভান্ডার গড়ে তুলছেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আতাউর রহমান। যেসব গাছপালা, লতাপাতা এতদিন অবহেলা আর অনাদরে পড়ে থাকতো, আতাউরের কাছে সেইসব এখন খাঁটি সোনা।

বাড়ির আশপাশে থাকা জঙ্গল আর জমিতে আগাছা ‘কাউন-শিশা’ আতাউরের কাছে মূল্যবান সম্পদ। এসব লতাপাতা আর গাছে ছাল, শিকড় শুকিয়ে বিক্রি করে প্রতি মাসে আয় করছেন ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। আতাউর রহমান রংপুরের পীরগাছা উপজেলার সদর ইউনিয়নের অনন্তরাম উচাপাড়া রেলগেট এলাকার বাসিন্দা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আতাউরের ঘরের কোনা, বারান্দাসহ সবখানেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা হয়েছে গাছের লতাপাতা। বাড়ির উঠানে আর রেললাইনের ধারে শুকানো হচ্ছে গাছের পাতা। আতাউর রহমান ও তার স্ত্রী জাহানারা বেগম এ নিয়ে ব্যস্ত। গাছের পাতা রোদে শুকানো, পাতা সংগ্রহ, শুকানো লতাপাতা বাছাই, কোনটা আবার পুড়িয়ে ছাই করা হয়।

আতাউরের ভান্ডারে রয়েছে, জমিতে পড়ে থাকা আগাছা কাউন শিশার, ডাল-পাতা, রাস্তার ধারে পড়ে থাকা ভার্টির পাতা, শিকড় ও ডাল, ফ্র্রেস আমের পাতা, তেজ পাতা, নিম পাতা, সজনে পাতা, মাল্টা পাতা, পেয়ারা পাতা, বাসক পাতা, পিপুল পাতা, তেলা কচুপাতা, লতা ও পানপাতা। আরও রয়েছে, পেয়ারা, তেলাকচু ফল, গাজর, করলা, বিচি কলা, ফেলনা কলার মোচা ও সুপারি। ডালের মধ্যে রয়েছে, নিমের ডাল, অর্জুনের ছাল, পিতরাজ গাছের ছাল, চই, জামের পাতা, জামের বিচিসহ প্রায় ৪০ প্রকার লতাপাতা।

আতাউর রহমান বলেন, ১১ মণ গাজর কিনে আনার পর কেটে শুকিয়ে ৪২ কেজি হয়েছে। ৪২ কেজি করলা শুকালে ৩ কেজি হয়। ৫ হাজার বিড়া পান শুকিয়ে ৩ কেজি হয়। এসবের মধ্যে কিছু পুড়িয়ে ছাই করা হয়। বাকিগুলো শুকনা হিসেবে বিক্রি করা হয়। দুই বছর আগে আমি গাছের লতাপাতা কেনা শুরু করলে অনেকে আমাকে পাগল বলতো। এখন অনেকেই আমার কাছে এসব ডালপালা বিক্রি করছেন। প্রতি মাসে আমি ৭ থেকে ১০ মণ শুকনো লতাপাতা বিক্রি করি। এতে আমার মাসে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় হয়।

আতাউর রহমানের একমাত্র ছেলে মমিনুল ইসলাম ডাক্তার। অর্কেড ল্যাবরেটরীজ (আয়ু) প্রা: লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসেবে কর্মরত। তিনিই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসব গাছপালা ক্রয় করেন। সেই ভাবে অবসর থাকা তার পিতা এই ব্যবসায় জড়িত হয়ে পড়ছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রকৃতির কোন কিছুই অপ্রয়োজনীয় নয়। সব ধরনের গাছপালা মানুষের উপকারে আসে। সেই হিসেবে আতাউর রহমান পীরগাছা উপজেলার একজন উদ্যোক্তা হিসেবে বেশ প্রশংসার দাবিদার।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS