ভিডিও

নানা আয়োজনে বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপিত

প্রকাশিত: মে ২২, ২০২৪, ০৭:০২ বিকাল
আপডেট: মে ২২, ২০২৪, ০৭:০২ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

অহিংসা ও শান্তির বাণী প্রচার করে গেছেন গৌতম বুদ্ধ। সেই বাণী ধারণ করে সারা দেশ আজ বুধবার (২২ মে) উদযাপিত হচ্ছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বড় ধর্মীয় উৎসব বুদ্ধ পূর্ণিমা। বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারীরা এই পূর্ণিমা তিথিতে স্নান করে শুচিবস্ত্র পরিধারণ করছেন, মন্দিরে মন্দিরে চলছে বুদ্ধের বন্দনা। অর্চনার পাশাপাশি পঞ্চশীল, অষ্টশীল, সূত্রপাঠ, সূত্রশ্রবণ ও সমবেত প্রার্থনায় স্মরণ করা হচ্ছে বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তককে। এছাড়া বুদ্ধের বাণী ছড়িয়ে দিতে আয়োজন করা হয়েছে শান্তি শোভাযাত্রার।

রাজধানীতে বুদ্ধ পূর্ণিমার মূল আয়োজন হয় সবুজবাগের ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারে। এছাড়া মেরুল বাড্ডার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারেও রয়েছে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালা। বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে বুধবার বিকালে বঙ্গভবনে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এ অনুষ্ঠানে ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এই আয়োজনে ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরাসহ বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের আট শতাধিক আমন্ত্রিত ব্যক্তি অংশ নেবেন।

 

বুদ্ধপূর্ণিমা উদযাপনের জন্য আজ দেশজুড়ে বৌদ্ধবিহারগুলোতে বুদ্ধপূজা, প্রদীপ প্রজ্বালন, শান্তি শোভাযাত্রা, ধর্মীয় আলোচনা সভা, সমবেত প্রার্থনা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে আজ সকালে রাজধানীর শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার পর্যন্ত ‘জাতীয় সম্মিলিত শান্তি শোভাযাত্রা’ করেছে বাংলাদেশ বৌদ্ধ সাংস্কৃতিক পরিষদ।

বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে থেকে শোভাযাত্রাটি শুরু হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি গিয়ে শেষ হয়। এতে নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধসহ কয়েক হাজার মানুষ বিভিন্ন প্রতীক নিয়ে অংশ নেন। শান্তি শোভাযাত্রায় ধর্মমন্ত্রী ফরিদুল হক খান বলেন, ‘গৌতম বুদ্ধ আজীবন মানুষের কল্যাণে এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় অহিংসা, সাম্যের বাণী প্রচার করে গেছেন। বৌদ্ধদের এ উৎসবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কারণে সবাই মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে।’

ধর্মমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালের সংবিধানে সেই দায়িত্ব আমাদের দিয়ে গেছেন বঙ্গবন্ধু। সেই দায়িত্ব থেকে বর্তমান সরকার প্রতিটি জেলায় আন্তধর্মীয় সংলাপ নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে।’

বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে বুধবার ভোর থেকেই ভক্তরা জড়ো হন সবুজবাগের ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারে। অংশ নেন প্রভাতফেরি, প্রাতরাশ, বুদ্ধপূজা, সংঘদান ও ধর্মসভায়।এ বিহারের অধ্যক্ষ আনন্দ মিত্র মহাথেরো বলেন, ‘দিনটি আমাদের কাছে মহাপবিত্র, মহাগুরুত্বপূর্ণ। বুদ্ধ সব প্রাণীর সুখ-শান্তি কামনার কথা বলেছেন। বুদ্ধ সব প্রাণীর জন্য শুভ কামনা করেছেন। তিনি শান্তির কথা বলেছেন। তিনি সব প্রাণীর প্রতি দয়া পোষণ করেছেন।’

 

আজ সকাল সাড়ে ৭টায় সংগীতের মধ্য দিয়ে বুদ্ধ বন্দনার পর সবুজবাগ বৌদ্ধ বিহার থেকে একটি শোভাযাত্রা বের হয়, এ সময় ওড়ানো হয় বেলুন। এরপর ভক্তরা আসতে শুরু করেন বিহারে। স্নান সেরে শুচিবস্ত্র ধারণ করে মন্দিরে বুদ্ধের বন্দনায় রত হন তারা।

সকাল সাড়ে ৯টায় বৌদ্ধ পূজা মাথায় নিয়ে ভক্তরা মন্দির প্রদক্ষিণ করেন। এ সময় বাদক দল ঢোল বাজানো হয়। সকালের কর্মসূচির মধ্যে আরও ছিল জাতীয় ও ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন, ভিক্ষুসংঘের প্রাতরাশ, মঙ্গলসূত্র পাঠ, বুদ্ধপূজা, পঞ্চশীল ও অষ্টাঙ্গ উপোসথশীল গ্রহণ, মহাসংঘদান, ভিক্ষুসংঘকে পিণ্ডদান, ত্রিপিটক পাঠ, প্রদীপ পূজা এবং জগতের সব প্রাণীর সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় বিশেষ প্রার্থনা।

প্রার্থনা শেষে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা পাত্রে জল ঢেলে মৃত স্বজনদের উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে নানা উপচারে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তারা। বিহারের বোধিবৃক্ষে পত্র-পুষ্প-জলে পূজা দেওয়া হয় গৌতম বুদ্ধকে।

বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশন মেরুল বাড্ডার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। সকাল ১০টায় বুদ্ধপূজা, শীল গ্রহণসহ সন্ধ্যায় বুদ্ধ পূর্ণিমার তাৎপর্য নিয়ে বিশেষ আলোচনা সভার আয়োজন রয়েছে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS