ভিডিও

শেরপুরে বাণিজ্যিক ভবনে ভয়াবহ আগুনের ২৪ ঘন্টা পর লাশ উদ্ধার, গুমের চেষ্টা

দু’জন আটক

প্রকাশিত: জুন ০৩, ২০২৪, ১০:১৩ রাত
আপডেট: জুন ০৩, ২০২৪, ১০:১৩ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার শেরপুরে বাণিজ্যিক ভবনে ভয়াবহ আগুনের ২৪ ঘন্টা পর এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার হয়েছে। তার নাম মো. রহমত আলী (৩২)। তিনি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বোঙ্গাবাসর গ্রামের আসান সরদার ওরফে আসান আলীর ছেলে। তিনি তেলবাহী লরির চালকের হেলপার বলে জানা গেছে।

এদিকে আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া ওই ব্যক্তির লাশ গুমের চেষ্টা চালানোর ঘটনায় নানামুখি প্রশ্ন ও রহস্যের জন্ম দিয়েছে। তাই ঘটনা উদঘাটনে দু’জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। আজ সোমবার (৩ জুন) দুপুরে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার সদর থেকে লাশ পরিবহন কাজে ব্যবহৃত ট্রাক জব্দ করাসহ তাদের আটক করা হয়। তারা হলেন, ট্রাকচালক আনোয়ার হোসেন (৩৭) ও তার সহকারী শিপন আহমেদ (২৫)।

গত শনিবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কসংলগ্ন পৌর শহরের হাসপাতাল রোডস্থ দুলাল কমপ্লেক্সে ওই আগুনের ঘটনা ঘটে। আগুনে ভবনটির নিচতলায় থাকা অনুমোদনহীন মিনি জ¦ালানি তেলের ডিপো বলে পরিচিত লেমন এন্টারপ্রাইজ নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সব মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। এসময় ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী শহিদুল ইসলাম ও আছের আলী অগ্ধিদগ্ধ হন। তারা বর্তমানে বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘটনার পরদিন রোববার দুপুরের পর থেকে দুই ব্যক্তি আগুনে ভস্মিভূত হওয়া ভবনের ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিস্কার করছিলেন। এসময় তারা মানুষের হাড় ও চামড়া দেখতে পান। তখন তারা আর পরিস্কার না করে ঘটনাটি ব্যবসায়ী ও ভবন মালিক পক্ষের লোকজনকে জানান। পরবর্তীতে লাশটি উদ্ধার করে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে ট্রাকে তুলে লাশ শাহজাদপুরে নিয়ে যান আটক ব্যক্তিরা। কিন্তু সেখানে নেওয়ার পর ঘটনাটি সন্দেহজনক হওয়ায় ট্রাক চালক ও তার সহকারীকে আটক করেন এলাকাবাসী।

এক পর্যায়ে ঘটনাটি সন্দেহজনক হওয়ায় প্রথমে শাহজাদপুর থানায় এবং পরবর্তীতে শেরপুর থানায় জানানো হয়। এরপর শেরপুর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন শাহজাদপুর থেকে লাশটি উদ্ধার করে বগুড়ায় মর্গে পাঠান। সেইসঙ্গে লাশ পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত ট্রাকটি জব্দ করাসহ চালক-হেলপারকে আটক করে থানায় আনা হয়।

শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম রেজা বলেন, আগুন লাগা ভবন থেকে উদ্ধার হওয়া লাশ কেন গুম করার চেষ্টা করা হয়েছে সেটি অনুসন্ধানে কাজ শুরু করেছে পুলিশ। পাশাপাশি দু’জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অচিরেই রহস্যের জট খুলবে। এই ঘটনায় আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, গত শনিবার রাতে ওই বাণিজ্যিক ভবনের নিচতলায় রফিকুল ইসলাম জিন্নাহ্র মালিকানাধীন লেমন এন্টারপ্রাইজ নামের ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে জ¦ালানি তেলের দাম আরো বাড়বে এমন খবরে তেলের লরি (ট্রাক) থেকে ডিজেল, পেট্রোল, মবিল ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মজুদ করা হচ্ছিল। এসময় আগুনের সূত্রপাত হয়। তাদের ধারণা, ট্রাক ও লরি থেকে তেল দোকানে নেয়ার সময় শ্রমিকদের বিড়ি-সিগারেট থেকে আগুন লাগতে পারে।

এমনকি মুহূর্তের মধ্যে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে ভবনের একপাশ (উত্তরে) ওই তেলের দোকান ও গোডাউন থেকে আগুনের লেলিহান শিখা বের হতে থাকে। সেইসঙ্গে ওই দোকানে থাকা একের পর এক গ্যাস সিলিন্ডারের বিস্ফোরণ শুরু হয়। বিকট শব্দে এসব গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের সময় আশপাশের লোকজনের মধ্যে চরম আতঙ্ক দেখা দেয়।

পরে তারা ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কে অবস্থান নিলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এসময় দূরপাল্লার অসংখ্য যানবাহন আটকে থাকায় মহাসড়কের উভয়পাশে তিন কিলোমিটার জুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে দু’ঘন্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। পরে বগুড়া ইউনিট ছাড়াও শেরপুর, শাজাহানপুর, ধুনট ও রায়গঞ্জ ফায়ার স্টেশনের আটটি ইউনিট তিন ঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS