ভিডিও

ট্রেনে নাশকতা

পালাতে গিয়ে বিমানবন্দরে গ্রেফতার গাজীপুর সিটি কাউন্সিলর শাহিন

প্রকাশিত: জুন ২৮, ২০২৪, ০৮:১৫ রাত
আপডেট: জুন ২৮, ২০২৪, ০৮:১৫ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি: গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার প্রহ্লাদপুর ইউনিয়নের বনখড়িয়া (চিলাই ব্রিজ) এলাকায় রেললাইন কেটে নাশকতার ঘটনায় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর শাহিন আলমকে গ্রেফতর করেছে পুলিশ। দেশ ছেড়ে পালানোর সময় বুধবার ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেফতার করে বিমানবন্দর পুলিশ (এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন)। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বৃহস্পতিবার শাহিনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের আগে ১৩ ডিসেম্বরের ওই নাশকতার ঘটনায় ঢাকাগামী মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনসহ সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে অন্তত ১১ জন হতাহত হয়।

 ট্রেনে নাশকতা মামলায় আগে গ্রেফতার হওয়া আসামিদের স্বীকারোক্তিতে কাউন্সিলর শাহিনের নাম উঠে আসে। পরে তাকে গ্রেফতারে তোড়জোড় শুরু করে তদন্ত সংস্থা পিবিআই।

শুক্রবার সকালে পিবিআই গাজীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মাকসুদের রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

শাহিন আলম গাজীপুর মহানগরের দক্ষিণ সালনার মৃত ফাইজুদ্দিনের ছেলে। তিনি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং একই ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে অংশ নেওয়ায় তাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়।

পিবিআই কর্মকর্তা মাকসুদের রহমান জানান, শাহিন আলম সিঙ্গাপুর পালানোর সময় বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে আটক করে। পরে পিবিআই সদস্যরা তাকে নিয়ে আসেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে ১৩ ডিসেম্বর ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথে নেত্রকোণার মোহনগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনসহ সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়। পরে দেখা যায়, দুর্বৃত্তরা অক্সি-অ্যাসিটিলিনের ব্যবহার করে গ্যাস কাটার দিয়ে রেললাইন কেটে রেখেছিল। তদন্তে উঠে আসে, দুর্বৃত্তরা নাশকতা করতে চিলাই ব্রিজ এলাকায় অন্তত ২০ ফুট রেললাইন অংশ কেটেছিল। দুর্ঘটনায় ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের রৌহা গ্রামের মোছলেম উদ্দিনের ছেলে কাঁচামাল ব্যবসায়ী আসলাম হোসেন নিহত হন। আহত হন অন্তত ১০ জন। ঘটনার পর ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল ২৭ ঘণ্টা।

ভয়াবহ এ নাশকতার ঘটনার মামলায় এর আগে সাতজন গ্রেফতার হয়েছিলেন। তারা হলেন গাজীপুর মহানগরের ছায়াবীথি এলাকার মৃত সোলায়মান মোড়লের ছেলে শাহানুর আলম, নেত্রকোণার মদন উপজেলার বারইবাজার গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে জান্নাতুল ইসলাম, ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার বান্দীয়া গ্রামের তাইজুদ্দীনের ছেলে মেহেদী হাসান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ২৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মৃত বিল্লাল হোসেন ভ‚ঁইয়ার ছেলে হাসান আজমল হোসেন ভ‚ঁইয়া, গাজীপুর মহানগরের ভানোয়া এলাকার তারিকুল ইসলাম দিপুর ছেলে জুলকার নাইন আশরাফি হৃদয়, কানাইয়া পূর্বপাড়ার মৃত ওমেদ আলী মোল্লার ছেলে সাইদুল ইসলাম ও মধ্য ছায়াবীথির আফতাফ উদ্দিনের ছেলে সোহেল রানা। তাদের মধ্যে কাউন্সিলর হাসান আজমল হোসেন ভ‚ঁইয়াসহ কয়েকজন জামিনে রয়েছেন।

পিবিআই গাজীপুরের এসপি মাকসুদের রহমান জানান, ট্রেন দুর্ঘটনার ৩৮ ঘণ্টা পর বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা হয়। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ২৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি হাসান আজমল ভুইয়াসহ সাতজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে পাঁচজন ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের স্বীকারোক্তিতে কাউন্সিলর শাহিন আলম জড়িত থাকার তথ্য উঠে আসে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS