ভিডিও

শাজাহানপুরে গোহাইল স্কুল এন্ড কলেজে দুর্নীতির অভিযোগে নিয়োগ পরীক্ষা পন্ড

কল রেকর্ডটি ভুয়া দাবি অধ্যক্ষের

প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২৪, ১০:৩৭ রাত
আপডেট: জুন ২৯, ২০২৪, ১০:৩৭ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

শাজহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি : বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার গোহাইল ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে আট কর্মচারী নিয়োগে প্রতিষ্ঠানের সভাপতির বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। এ সংক্রান্ত একটি ‘কল রেকর্ড’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফাঁস হওয়ায় নিয়োগ কমিটি থেকে জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধিকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।

ফলে নিয়োগ পরীক্ষা পন্ড হয়ে গেছে। এছাড়া নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ তদন্ত করতে জেলা শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। অপরদিকে ফাঁস হওয়া ‘কল রেকর্ড’টি ভুয়া দাবি করে গতকাল বিকেলে নিজ কার্যালয়ে সংসাবদ সম্মেলন করেছেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ মোতাহার হোসেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গোহাইল ইসলামীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ৯ জন কর্মচারী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করে প্রায় দেড় কোটি টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেছে। এই নিয়োগ বাণিজ্যের কারণে এলাকায় অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। অত্র প্রতিষ্ঠানের সভাপতি আলী ইমাম ইনোকীর বিরুদ্ধে এর আগেও টাকা আত্মসাৎ, গাছ বিক্রিসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।

এছাড়া প্রতিষ্ঠানের কমিটির বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে মামলা চলামান। অপরদিকে গোহাইল ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের গভর্নিং বডি বিধি মোতাবেক নিয়োগ কমিটি গঠন করে আজ শনিবার (২৯ জুন) সকাল ১০টায় নিজ প্রতিষ্ঠানে কর্মচারী পদে নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণের যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিল।

কিন্তু নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে ‘অডিও কল রেকর্ড’ ফাঁস হওয়ায় এবং জনৈক অভিভাবকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে নিয়োগ কমিটি থেকে জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধিকে প্রত্যাহার করে নেয় বগুড়া জেলা প্রশাসন।

এতে আজ শনিবার (২৯ জুন) সকালে আয়োজিত নিয়োগ পরীক্ষা পন্ড হয়ে যায়। ফাঁস হওয়া ওই অডিও কল রেকর্ডটি মূলতঃ কলেজের সাবেক সভাপতি গোহাইল ইউপি চেয়ারম্যান আলী আতোয়ার তালুকদার ফজু এবং কলেজের অধ্যক্ষ মোতাহার হোসেনের কথপোকথন। কথপোকথন থেকে জানা যায়, ৯টি পদে কর্মচারী নিয়োগে মোটা অঙ্কের বাণিজ্য করছেন কলেজের বর্তমান সভাপতি আলী ইমাম ইনোকী।

এর মধ্যে তিনজনের টাকা অধ্যক্ষের কাছে রয়েছে। এর আগেও ওই কলেজে নিয়োগ বাণিজ্য হয়েছে বলে ওই কথপোকথন থেকে জানা যায়। ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ডের বিষয়টি আমলে নিয়ে তা তদন্তের জন্য বগুড়া জেলা শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

এ বিষষে জানতে চাইলে, বগুড়া জেলা শিক্ষা অফিসার মো. হযরত আলী বলেন, অভিযোগ তদন্তের চিঠি তিনি এখনও হাতে পাননি। তবে বিষয়টি তিনি জানেন। এ বিষয়ে যথাযথ তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে তিনি প্রতিবেদন জমা দিবেন বলেও জানান।

অপরদিকে ফাঁস হওয়া অডিও রেকর্ডটি ভুয়া ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে আজ শনিবার (২৯ জুন) বিকেলে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মো. মোতাহার হোসেন। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গতকাল শুক্রবার ‘শাজাহানপুর প্রতিদিন’ নামক একটি ফেইসবুক আইডি এবং আজ শনিবার (২৯ জুন) ডিবিসি নিউজ নামের একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে অধ্যক্ষের সাথে প্রতিষ্ঠানটির সাবেক সভাপতি গোহাইল ইউপি চেয়ারম্যান আলী আতোয়ার তালুকদার ফজুর কথপোকথনের একটি তথাকথিত অডিও রেকর্ড প্রচার করা হয়।

প্রকৃত ঘটনা হলো প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির নির্বাচনে সভাপতি প্যানেলে নিজের নাম অন্তর্ভূক্ত করতে চাপ দিচ্ছিলেন সাবেক সভাপতি আলী আতোয়ার তালুকদার ফজু। কিন্তু জীবনবৃত্তান্ত না পাওয়ায় তার নাম অন্তর্ভূক্ত করে বোর্ডে প্রেরণ করা সম্ভব হয়নি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নানারকম ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছেন। তেমনি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমেই এই ভুয়া অডিওকল রেকর্ডের ঘটনা ঘটানো হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতি আলী ইমাম ইনোকীসহ সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন। 
এ ব্যাপারে আলী ইমাম ইনোকী বলেন, তার বিরুদ্ধে তোলা নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

অপরদিকে প্রতিষ্ঠানের সাবেক সভাপতি গোহাইল ইউপি চেয়ারম্যান আলী আতোয়ার তালুকদার ফজু জানিয়েছেন, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রচার হওয়া অডিওকল রেকর্ডটি সত্য না মিথ্যা তা যাচাই করলেই জানা যাবে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS