ভিডিও

ঋণের কিস্তি দিতে না পারায় নারীকে  আটকে রাখে,৯৯৯ ফোনে উদ্ধার

প্রকাশিত: জুলাই ০১, ২০২৪, ০৭:৫৭ বিকাল
আপডেট: জুলাই ০১, ২০২৪, ০৭:৫৭ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

মাদারীপুর প্রতিনিধি : ঋণের কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে না পারায় মাদারীপুরের কালকিনিতে দুগ্ধপোষ্য এক নারীকে ৮ ঘণ্টা আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে গণউন্নয়ন প্রচেষ্টা নামে এক এনজিও'র বিরুদ্ধে। পরে স্থানীয় লোকজন ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে থানা পুলিশের সহযোগিতায় ওই নারীকে উদ্ধার করেন। এদিকে, এই ঘটনা জানাজানি হলে ওই এনজিওর বিরুদ্ধে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং অভিযুক্তদের বিচার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল।

রোববার রাত ১১টায় কালকিনি উপজেলার গণউন্নয়ন প্রচেষ্টার অফিস কার্যালয়ে এ ঘটনায় গতকাল সোমবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন উপজেলা প্রশাসন ও ভুক্তভোগী পরিবার। জানা গেছে, ওই নারীর তিনটি শিশু সন্তান রয়েছে। দুগ্ধপোষ্য ছোট শিশুটির বয়স ৯ মাস।

পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবারের অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ডাসার উপজেলার বালিগ্রাম ইউনিয়নের বাঘরিয়া গ্রামের অসহায় ওই নারী গণউন্নয়ন প্রচেষ্টা নামে একটি এনজিওর কালকিনি শাখা থেকে স¤প্রতি ৮০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহন করেন। অসহায় ওই নারী ৩২ হাজার টাকার ঋণ পরিশোধ করেন। পরে ওই অসহায় গৃহবধূর স্বামী বিদেশ গিয়ে নিখোঁজ থাকেন। ফলে ওই ঋণের বাকি টাকা পরিশোধ করতে না পারায় রোববার দুপুর তিনটায় গণউন্নয়ন প্রচেষ্টার কালকিনি শাখার ম্যানেজার মো. জসিম উদ্দিনের নেতৃত্বে অফিস কর্মী সুবেন্দু বৈদ্য ও রুপালী বৈরাগী ওই নারীকে তার স্বামীর বাড়ি থেকে তাদের অফিস কার্যালয়ে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা তৌহিদ সজিব স্থানীয় লোকজন নিয়ে ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে থানা পুলিশের সহযোগিতায় রাত ১১টার দিকে ওই এনজিও কার্যালয় থেকে অসহায় নারীকে উদ্ধার করেন। এই ঘটনা জানাজানি হলে ওই এনজিও কর্মীদের বিরুদ্ধে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং অভিযুক্তদের বিচার দাবি জানান স্থানীয় সচেতন মহল।

অসহায় ওই নারী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার স্বামী নিখোঁজ থাকায় ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে পারি নাই। তাই ম্যানেজার মো. জসিম উদ্দিন, অফিস কর্মী সুবেন্দু বৈদ্য ও রুপালী বৈরাগী আমাকে আমার স্বামী বাড়ি থেকে নিয়ে তাদের অফিসে আটকে রাখেন। আমি অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে কোনও রকম সংসার চালাই। আমি কি করে এঈ ঋণের টাকা পরিশোধ করবো বলতে পারিনা।

 

ছাত্রলীগ নেতা তৌহিদ সজিব বলেন, আমার এলাকার এক অসহায় গৃহবধূকে আটকে রাখার অভিযোগ পেয়ে ৯৯৯-এ ফোন দিয়ে স্থানীয় লোকজন নিয়ে থানা পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করি। ওই নারীর ছোট বাচ্চার বয়স মাত্র ৯ মাস। আমার কাছে যখন নিয়ে আসা হয় তখন ওই বাচ্চাটা অনেক কান্না করছিল দুধের জন্য।

মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, দুগ্ধপোষ্য নারীকে বাচ্চা থেকে আলাদা করে রাখা অমানবিক। আইনগতভাবে এটা করতে পারে না। এনজিওটির বিরুদ্ধে তদন্ত করে রাষ্ট্রের কঠোর ব্যবস্থা নেয়া উচিত।

স্থানীয় রফিক ও রাজ্জাকসহ বেশ কয়েকজন সচেতন ব্যক্তি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গণউন্নয়ন প্রচেষ্টার এমন কাজ মেনে নেয়া যায় না। আমরা এর বিচার চাই। তবে এর পূর্বেও তারা এ ধরনের কার্যক্রম চালিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

গণউন্নয়ন প্রচেষ্টার ম্যানেজার মো.জসিম উদ্দিন আটকে রাখার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কিস্তির টাকা পাওনা থাকায় ওই গৃহবধূকে অফিসে আনা হয়েছিলো।

এ ব্যাপারে কালকিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার উত্তম কুমার দাশ বলেন, ঋণের জন্য এক গৃহবধূকে আটকে রাখার বিষয়টি জেনেছি। পরে থানা পুলিশ ওই তাকে উদ্ধার করেছে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS