ভিডিও

সিরাজগঞ্জে যমুনায় বাড়ছে পানি, ভাঙছে নদী

প্রকাশিত: জুলাই ০৩, ২০২৪, ০৪:১৪ দুপুর
আপডেট: জুলাই ০৩, ২০২৪, ০৪:৪৩ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকেই সিরাজগঞ্জে আগ্রাসী রুপ ধারণ করেছে যমুনা। কয়েকদিনের অতিবৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে জেলার প্রধান নদী যমুনাসহ ফুলজোড়, ইছামতি, হুড়াসাগর ও চলনবিলে পানি বেড়েই চলছে। এর সাথে শুরু হয়েছে জেলার শাহজাদপুর,কাজিপুর,সদর উপজেলার যমুনার তীরে তীব্র নদী ভাঙন। ইতোমধ্যে এসব এলাকায় নদী ভাঙনে ঘরবাড়ি হারিয়েছে অনেক মানুষ। আতঙ্ক দেখা দিয়েছে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের মাঝে।

 প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম এলেই যমুনাপাড়ের জেলা সিরাজগঞ্জের কাজিপুর,সদর,চৌহালী,এনায়েতপুর,শাহজাদপুর উপজেলায় নদীতে তীব্র ভাঙন দেখা দেয়। নদীতে পানি বাড়া শুরু হলেই রাক্ষুসে যমুনা আঘাত হানে দুই পাড়ে। প্রবল স্রোতের তোড়ে নদী তীরের ঘরবাড়ি,আবাদি জমি সবকিছু হারিয়ে যাচ্ছে নিমিষেই। যুগ যুগ ধরে চলছে তার ভাঙন লীলা খেলা। বার বার এসব এলাকার হাজার হাজার মানুষ নদী ভাঙনে সবকিছু হারিয়ে এখন নিঃস্ব^,কর্মহীন। নদী ভাঙন প্রতিরোধে বিভিন্ন সময় পদক্ষেপ নেয়া হলেও তা কোন কাজেই আসেনি।

 এবারও বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকে শুরু হয়েছে নদী ভঙন। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কাওয়াকোলা ইউনিয়ন, কাজিপুরের খাসরাজবাড়ি ইউনিয়নের সানবান্ধাঘাট হতে বিশুরিগাছাঘাট ও শাহজাদপুরের জালালপুর ইউনিয়নের পাঁচিল, হাটপাঁচিল, জালালপুর ও সৈয়দপুর গ্রামে রাক্ষসী যমুনার তীব্র ভাঙন চলছে। গত দুই সপ্তাহে এসব এলাকার অসংখ্য মানুষের কাঁচা-পাকা ঘরবাড়ি যমুনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের মুখে রয়েছে অনেক ঘরবাড়ি, স্থাপনা।

জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী সুলতান মাহমুদ জানান,আমার এলাকায় প্রতিদিন নদী ভাঙছে। চোখের সামনে ঘরবাড়ি হারিয়ে মানুষ আহাজারি করছে। কিন্তু তারা কিছুই করতে পারছে না। দীর্ঘদিন আগে নদী ভাঙন প্রতিরোধে প্রকল্পের কাজ শুরু হলেও তার কোন গতি নেই। ফলে বার বার নদী ভাঙন দেখা দিচ্ছে। শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী, জালালপুর ও খুকনী ইউনিয়নের এনায়েতপুর থেকে পাঁচিল পর্যন্ত নদী তীরের ভাঙন প্রতিরোধে ২০২১ সালে সাড়ে ৬ কিলোমিটার এলাকায় বাঁধ নির্মাণ শুরু হয়। ৬৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সেই  প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি মাত্র অর্ধেক। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় এসব এলাকায় বার বার নদী ভাঙছে। এতে সাধারণ মানুষের মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কাওয়াকোল ইউনিয়নে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। এই ইউনিয়নের বড় কয়রা কমিউনিটি ক্লিনিকটি নিলামে বিক্রির জন্য প্রকাশ্যে নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। এছাড়া দুটি মুজিব কেল্লা, সাড়ে ৪ কিলোমিটার পাকারাস্তা, বর্ণি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভাঙনের মুখে রয়েছে।

 সদর উপজেলার কাওয়াকোল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জানান, নদী ভাঙনে জেলার মানচিত্র থেকে মুছে যেতে চলেছে কাওয়াকোলা ইউনিয়ন। ভাঙন রোধে পাউবো কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। কাওয়াকোলা ইউনিয়নের হাটবয়ড়া, দৌগাছী, বড়কয়রা, ছোট কয়রা, কৈগাড়ী দড়তা, চন্ডল বয়ড়া, বেড়াবাড়ি গ্রামে তীব্র নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। নদী তীরবর্তী বসবাসকারী মানুষেরা দ্রুত ভাঙন প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, নদীর পূর্বপাড়ে চর জেগে ওঠার কারণে প্রকল্প এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীর গতিপথ পরিবর্তনের জন্য নদীতে খনন কাজ চলছে। ভাঙন রোধে কাজ করা হচ্ছে। কিছু কিছু জায়গায় ভাঙন রয়েছে। ভাঙনকবলিত এলাকা চিহ্নিত করে জিও ব্যাগভর্তি বালির বস্তা ফেলা হচ্ছে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS