ভিডিও

ফরিদপুরে যৌতুকের দাবিতে কলেজছাত্রীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

প্রকাশিত: জুলাই ১১, ২০২৪, ০৮:১৬ রাত
আপডেট: জুলাই ১১, ২০২৪, ০৮:১৬ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

ফরিদপুরে যৌতুকের দাবিতে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ডিগ্রি ১ম বর্ষের ছাত্রী তানজিলা আক্তার তহেরাকে (২১) পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী জিসান আহমেদের (২১) বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় তানজিলার বাবা সাবেক সেনা কর্মকর্তা তোবারেজ মোল্লা কোতয়ালী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মো. সালাউদ্দিন। 

আজ বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) সকালে জিসানকে আটক করেছে পুলিশ।

এর আগে বুধবার রাত ১০ টার দিকে জিসান শহরতলীর গঙ্গাবর্দী এলাকার মারকাজ মসজিদের পাশের ভাড়া বাড়িতে তানজিলাকে পিটিয়ে আহত করে আত্মহত্যার চেষ্টা দেখিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. লিটন গাঙ্গুলি তানজিলার শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখে তাকে সার্জারি ওয়ার্ডের ভর্তি করেন। মেডিকেলে সার্জারি ওয়ার্ডের ৫ তলার বেডের দেওয়ার সময় তার মৃত্যু হয়।

নিহত তানজিলা আক্তার তহেরা ফরিদপুর সদরের ডোমরাকান্দি উত্তর পাড়া গ্রামের তোবারেজ মোল্লার মেয়ে। প্রায় ৫ মাস আগে প্রেম করে সদরের পূর্ব গঙ্গাবর্দী এলাকার জাহিদ ফকিরের ছেলে জিসান আহমেদের ছেলের সঙ্গে বিয়ে হয়।

তানজিলার বাবা তোবারেজ মোল্লা বলেন, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য আমার মেয়ের ওপর জিসান ও তার মা জবেদা বেগম নির্যাতন করতো। জিসানের মোটরসাইকেল দেওয়ার জন্য চাপ দিয়ে আমাদের বাড়িতে পাঠিতে দিতো। জিসানকে বিদেশে পাঠাবে বলে টাকা চেয়ে পাঠাতো মেয়েকে দিয়ে। আমার মেয়েও এ বিষয়টাতে সায় দিতো না বলে গত দুই মাস আগে মেরে হাসপাতালে ভর্তি করে। তার সব ডকুমেন্ট আমি থানায় জমা দিয়েছি।

তিনি বলেন, গতকাল রাত ৮টার দিকে আমার মেয়ের সঙ্গে কথা হয়। রাত ১২টার দিকে আমার মেয়ের নম্বর দিয়ে জিসানের এক বন্ধু ফোন করে বলে তানজিলা আত্মহত্যা করতে গেছিলো, আমরা তাকে মেডিকেলে ভর্তি করেছি। আমরা রাতেই হাসপাতালে গিয়ে মেয়ের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখি। জিসান বা কাউকে আমরা তখন কাছে পাইনি।

তানজিলার বাবা অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়ের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। জিসান নেশাগ্রস্ত ছিলো। যৌতুক না পেয়ে আমার মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। ভাড়া বাড়িতে থাকার আগে যখন শ্বশুড়বাড়ি ছিলো, তখন শ্বশুড়বাড়ির লোকজনও তাকে পিটিয়ে আহত করেছে।

জিসানের মা জবেদা বেগম বলেন, জিসান ও তানজিলা দু’জন ভালবেসে বিয়ে করেছিলো। তাকে কেন নির্যাতন করতে যাবেন। আর আমিও কখনও যৌতুকের জন্য তানজিলাকে নির্যাতন করিনি। জিসান আমাকে গতকালের ঘটনা যা বলেছে তা হলো, জিসান বাড়ির বাইরে একজনের কাছ থেকে টাকা আনার জন্য রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করছিলো। রাত ১০টার পরে তানজিলার ফোনে সে বাড়ির উদ্দ্যেশে রওনা হন টাকা না নিয়েই। বাড়িতে গিয়ে সে দরজা বন্ধ দেখতে পান। পাশের এক দোকান থেকে রড নিয়ে দরজা ভেঙ্গে জিসান দেখতে পায় তানজিলা ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছে। তার পর স্থানীয় লোকজনদের সহায়তায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।

ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মো. সালাউদ্দিন বলেন, জিসান ও তানজিলার মধ্যে দাম্পত্য কলহ ছিলো। যৌতুকের জন্য তানজিলার উপর নির্যাতন করা হতো। জিসানের পরিবারের পক্ষ হতে আত্মহত্যার কথা বলা হলেও তানজিলার শরীরে স্বাভাবিক কিছু জখমের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনার মেয়ের বাবা একটি অভিযোগ প্রদান করেছে। আমরা জিসানকে আটক করেছি। 

তবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা এ বিষয়ে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পরে বলা যাবে। আমাদের আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ হস্তান্তর করা হবে বলে জানান ওসি।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS