ভিডিও

মেয়েকে নৃশংসভাবে হাত ও গলা কেটে হত্যা করল বাবা

প্রকাশিত: জুলাই ১১, ২০২৪, ০৯:১৯ রাত
আপডেট: জুলাই ১১, ২০২৪, ০৯:১৯ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

গাজীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুরের কাপাসিয়ায় নিজের মেয়েকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠেছে এক বাবার বিরুদ্ধে। এলোপাতাড়ি কোপে শরীর থেকে এক হাত বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর গলাকেটে মেয়ের মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যান তিনি।

বৃহস্পতিবার সকালে কাপাসিয়া উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের ধরপাড়া গ্রামে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।

নিহতের নাম স্মৃতি আক্তার (২৬)।তিনি ওই গ্রামের সারফুদ্দিন খানের (৫০) প্রথম স্ত্রীর মেয়ে। অভিযুক্ত সারফুদ্দিন ওই গ্রামের মৃত গিয়াস উদ্দিনের ছেলে। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক রয়েছেন।

স্বজনরা জানায়, স্মৃতি আক্তার দুই সন্তানের জননী।

তার স্বামীর বাড়ি পাশের কালীগঞ্জ উপজেলার ডুবুদিয়া গ্রামে। তার স্বামী সৌদিপ্রবাসী। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে বাড়ির পাশের গাছ থেকে কাঁঠাল সংগ্রহ করতে যান স্মৃতি আক্তার। দুইটি কাঁঠাল সংগ্রহ করার পর তার বাবা সারফুদ্দিন দা হাতে হঠাৎ সেখানে যান।

স্মৃতিকে উদ্দেশ্য করে সারফুদ্দিন বলেন, কাঁঠাল পারলি ক্যায়া? তোকে না এই বাড়িতে আইতে নিষেধ করছি বলেই স্মৃতির হাতে কোপ দেন।

স্মৃতি আক্তারের চাচা বাবুল খান জানান, দায়ের কোপে স্মৃতির ডান হাত বাহু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এরপর আরো কয়েকটি কোপ দেওয়ার পর স্মৃতি আক্তার মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে পেছন থেকে চুলের মুঠি ধরে গলাকেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে দৌঁড়ে পালিয়ে যান সারফুদ্দিন।

বাবুল খান আরো জানান, নৃশংস এ হত্যাকান্ড দূর থেকে দেখে স্মৃতি আক্তারের মা চিৎকার করে সেখানে ছুটে যান।

নিহত স্মৃতি আক্তারের মা সালমা বেগম জানান, দূর থেকে দেখে তিনি সেখানে পৌঁছার আগেই সারফুদ্দিন দৌঁড়ে পালিয়ে যান।

বাবুল খান জানান, তার বড় ভাই সারফুদ্দিন বিয়েপাগল মানুষ। এরই মধ্যে তিনি চারটি বিয়ে করেছেন। তা নিয়ে গত প্রায় দুই বছর আগে প্রথম স্ত্রী সালমা বেগমের সঙ্গে তার ঝগড়া হয়। ঝগড়ার একপর্যায়ে সালমাকে তালাক দেন সারফুদ্দিন। পরে গ্রামের মাতব্বররা সালিস বসে সন্তানদের নিয়ে সালমাকে তার বড় ভাইয়ের বাড়িতে থাকার সিদ্ধান্ত দেয়।

তিনি আরো জানান, সালমা তার পৈতৃক জমি বিক্রি করে নগদ পাঁচ লাখ টাকা দিয়েছিলেন সারফুদ্দিনকে। ওই টাকা ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত এ বাড়িতে সারফুদ্দিন থাকতে পারবেন না বলেও মাতব্বররা সিদ্ধান্ত দিয়েছিল। এরপর থেকে সারফুদ্দিন কালীগঞ্জে তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে থাকতেন।

স্মৃতি আক্তারের ছোট ভাই রবিউল হাসান জানান, গত ঈদুল আজহার পর তার বড় বোন স্মৃতি আক্তার দুই সন্তান নিয়ে তাদের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। আজ সকালে তার বাকি তিন বোনও ওই বাড়িতে আসেন। ওই তিন বোনের জন্য বাড়ির পাশে বাগান থেকে কাঁঠাল সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন স্মৃতি। হঠাৎ তার মায়ের চিৎকার শুনে সেখানে ছুটে গিয়ে তারা স্মৃতির গলাকাটা ও এক হাত বিচ্ছিন্ন রক্তাক্ত মরদেহ দেখতে পান।

খবর পেয়ে পুলিশ দুপুর ১২টার দিকে স্মৃতির মরদেহ উদ্ধার করে। কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর মিয়া বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য দুপুরেই গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর হত্যায় অভিযুক্ত সারফুদ্দিন রক্তাক্ত দা নিয়ে দৌঁড়ে পালিয়ে গেছেন। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS