ভিডিও

পরিবহন সংকটে বেড়ে গেছে গো-খাদ্যের দাম দুধ নিয়ে বিপাকে খামারিরা

প্রকাশিত: জুলাই ২৫, ২০২৪, ০৬:১১ বিকাল
আপডেট: জুলাই ২৫, ২০২৪, ০৬:১১ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

আবুল কালাম আজাদ, বেড়া (পাবনা): দেশের চলমান পরিস্থিতিতে পরিবহন সংকটের পাশাপাশি চাহিদা পড়ে যাওয়ায় খামারে উৎপাদিত দুধ নিয়ে বিপাকে পাবনাসহ আশপাশের অনেক জেলার দুগ্ধ খামারিরা। দেশের অন্যতম গরুর দুধ উৎপাদনকারী এসব এলাকার খামারিরা ৩৫ থেকে ৪০ টাকা লিটার দরে দুধ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। অপরদিকে পরিবহন সংকটে বাইরে থেকে খড়, ভূষিসহ বিভিন্ন গো খাদ্য আসতে না পারায় হঠাৎ করেই গো-খাদ্যের দাম বেড়ে গেছে। এতে খামারিদের লোকসান আরও বেড়ে গেছে।

দুগ্ধ সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠান ও খামারিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পাবনার বেড়া, সাঁথিয়া, ফরিদপুর, ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর এবং সিরাজগঞ্জের শাহাজাদপুর, উল্লাপাড়া, চৌহালী, তাড়াশ উপজেলা নিয়ে গড়ে উঠেছে দেশের প্রধান গরুর দুধ উৎপাদনকারী এলাকা। প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের হিসেব অনুযায়ী এ এলাকার ২৫ হাজারেরও বেশি খামারে প্রতিদিন প্রায় ১০ লাখ লিটার গরুর দুধ উৎপাদিত হয়। ফলে এ এলাকা থেকে মিল্ক ভিটা, আড়ং দুধ, প্রাণ ডেইরি, ফার্মফ্রেস, অ্যামোমিল্ক, আফতাব, রংপুর ডেইরিসহ কয়েকটি দেশীয় প্রতিষ্ঠান তরল দুধ সংগ্রহ ও প্রক্রিয়াজাত করে সারাদেশে খোলা বাজারে বিক্রি করে।

খামারিরা অভিযোগ করে বলেন, দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোই খামারিদের দুধ বিক্রির প্রধান ভরসা। এসব প্রতিষ্ঠান এমনিতেই দুধের সঠিক দাম দেয় না। তারসাথে কমপ্লিট শাটডাউন, কারফিউসহ দেশের চলমান সহিংসতার অজুহাতে এসব প্রতিষ্ঠান খামারিদের কাছ থেকে দুধ কেনাও কমিয়ে দিয়েছে। ফলে খামারিদের উৎপাদিত দুধের একটি বড় অংশ অবিক্রিত থেকে যাচ্ছে। এই দুধ খামারিরা খোলা বাজারে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা লিটার দরে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

খামারিদের জানান, গো খাদ্যের দাম ব্যাপক বেড়ে যাওয়ায় প্রতি লিটার দুধের উৎপাদন খরচ পড়ে ৭০ টাকার কাছাকাছি। কিন্তু দুধ প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতি লিটার দুধের দাম দেয় ৪৮ থেকে ৫২ টাকা। এমন দামেও দুধ বিক্রি করতে না পারায় খামারিদের লোকসান আরও বেড়েছে। এছাড়া এলাকার শতাধিক ছানা তৈরির কারখানাগুলোও দুধ কেনা কমিয়ে দিয়েছে। ছানার কারখানাগুলো আগে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ হাজার লিটার দুধ সংগ্রহ করে ছানা তৈরি করত। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় এই ছানা সরবরাহ করা হত। কয়েকদিন ধরে দেশে মিষ্টির দোকানগুলোর বন্ধ থাকায় এখন ছানার চাহিদা নেই।

বেড়া উপজেলা ডেইরি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজা খানম বলেন, এমনিতেই খামারিরা দুধের ন্যায্য দাম পায়না। আবার প্রতিষ্ঠানগুলো দুধ সংগ্রহ কমিয়ে দেওয়ায় খামারিরা উৎপাদিত দুধ খোলা বাজারে ব্যাপক লোকসান দিয়ে বিক্রি করছেন। এরমধ্যে মরার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে গো খাদ্যের দাম ব্যাপক বেড়েছে। এ অবস্থায় আমরা খামারিরা আর পারছি না।

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে অবস্থিত মিল্কভিটার বাঘাবাড়ীঘাট দুগ্ধ এলাকার উপ-মহাব্যবস্থাপক সাইদুল ইসলাম বলেন, খামারিদের সবরকম দুঃসময়ে আমরা পাশে থাকি। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান দুধ সংগ্রহ কমালেও আমাদের কাছে আসা সব খামারির দুধই আমরা নিয়ে নিচ্ছি। আগের মতোই স্ট্যান্ডার্ড মানের দুধের দাম ৫২ টাকা লিটার দরে নেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন এলাকা থেকে এখন ৬৫ হাজার লিটার দুধ সংগ্রহ করছি।

বেড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, এ এলাকায় প্রচুর পরিমাণ দুধ উৎপাদন হয়। তাই এলাকার বেশিরভাগ মানুষের সংসার চলে দুধ বিক্রি করে। নানা সমস্যায় তারা আজ চরম বিপাকে আছেন। 



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS