ভিডিও

ঋণের বোঝা বইতে না পেরে বিষাক্ত দ্রব্য খেয়ে মা-মেয়ের আত্মহত্যা

প্রকাশিত: জুলাই ৩১, ২০২৪, ০১:৫৯ দুপুর
আপডেট: জুলাই ৩১, ২০২৪, ০১:৫৯ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে মা-মেয়ে ঋণের বোঝা বইতে না পেরে বিষাক্ত দ্রব্য (স্থানীয় ভাষায় কেড়ির বড়ি) খেয়ে মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।গতকাল মঙ্গলবার রাত ৭টায় নবীনগর উপজেলার ইব্রাহিমপুর ও কাঠালিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

জানা গেছে, নবীনগর উপজেলার ইব্রাহিমপুর গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার মজিবুর রহমানের স্ত্রী নূরতারা বেগম (৫৫) বিভিন্ন সমিতি থেকে ক্ষুদ্রঋণ তুলেছিলেন এবং তার মেয়ে কাঠালিয়া গ্রামের সিঙ্গাপুর প্রবাসী সবুজ মিয়ার স্ত্রী সোনিয়া আক্তার (২৬) এর কাছ থেকে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার এনেছিলেন, মেয়ের টাকা-স্বর্ণালঙ্কার দিতে না পারাও সমিতির কিস্তির চাপে পরে মা-মেয়ে পরামর্শ করে তারা দুইজনই কেড়ির বড়ি খেয়ে আত্নহত্যা করবে। পরামর্শ মোতাবেক মঙ্গলবার দুপুরে নাতিনের হাত দিয়ে কাঠালিয়া গ্রামে মেয়ের কাছে কেড়ির বড়ি পাঠিয়ে দেয় নূরতারা বেগম। ওই দিনই দুপুরে প্রথমে মা কেড়ির বড়ি খেয়ে মেয়েকে ফোনে জানালে মেয়েও কেড়ির বড়ি খেয়ে ফেলে। পরিবারের লোকজন মুমূর্ষ অবস্থায় তাদেরকে নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নিয়ে গেলে ডাক্তার মা-মেয়েকে ওয়াস করে কুমিল্লায় রেফার করেন। কুমিল্লা নেয়ার পথে দুজনেই মারা যায়।

সোনিয়া আক্তারের মেয়ে জান্নাত বলেন, ‘সকালে আম্মা আমাকে বলেছে, তোর নানি রাস্তায় আসবে, তোকে ১ হাজার টাকা দিতে এবং সাথে একটা ব্যাগ দিবে, কেউ যেন জানতে না পারে। আমি নানির কাছ থেকে টাকা ও ব্যাগ নিয়ে আসি, বাসায় যেতেই আম্মা আমার হাত থেকে ব্যাগ নিয়ে নেয়। আমার ছোট বোন কান্না শুরু করে মজা খাওয়ার জন্য, বোনকে সাথে দিয়ে আম্মা আমাকে দোকানে পাঠিয়ে দেয়। মজা কিনে বাসায় গিয়ে দেখি আম্মা দরজা বন্ধ করে আছে, আমি ডাকাডাকি করলেও দরজা না খোলায় আমি চিৎকার শুরু করি, তখন সবাই এসে দরজা ভাঙ্গে, তখন আম্মা বমি করতেছিলেন, পরে বাড়ির লোকজন হাসপাতালে নিয়ে যায়।’

 

নূরতারা বেগমের ছেলের বউ লিজা বেগম জানান, তার শাশুড়ি দুপুরে বাহির থেকে ঘরে এসে শুয়ে পরে এবং বিদেশে দুই ছেলের সাথে ফোনে কথা বলার কিছুক্ষণ পরে বমি করতে থাকেন, পরে বাড়ির লোকজন হাসপাতালে নিয়ে যায়।

মজিবুর রহমান বলেন, ‘সকালে আমি কৃষিকাজে চলে গিয়েছিলাম, কাজ থেকে বিকেলে বাড়িতে আসার পথে জানতে পারি, আমার স্ত্রী ও মেয়ে কেড়ির বড়ি খাইছে, এই খবর শুনে আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের পরিবারের বিভিন্ন সমিতি ও মানুষের কাছ থেকে প্রায় ১২ লাখ টাকার মতো ঋণ ছিল, আমার দুই ছেলে বিদেশ রয়েছে, তারা তো টাকা পাঠাচ্ছে, তারপরও কেন আমার মেয়ে ও স্ত্রীকে কেন মরতে হবে, আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।’

নবীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহবুব আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘গতকাল রাত ১০টায় পুলিশ লাশ উদ্ধার করেছে এবং ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।’



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS