ভিডিও

পঞ্চগড়ে ১৫০ শয্যার নতুন হাসপাতালটিতে চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু নিয়ে অনিশ্চয়তা

চিকিৎসকসহ প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ হয়নি

প্রকাশিত: আগস্ট ০৩, ২০২৪, ০৯:৫৭ রাত
আপডেট: আগস্ট ০৪, ২০২৪, ০১:৪৩ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

সামসউদ্দীন চৌধুরী কালাম, পঞ্চগড় : পঞ্চগড় জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালটিকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে উন্নিত করার জন্য অত্যাধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত ১৫০ শয্যার হাসপাতালটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। কিন্তু পূর্বের ১০০ শয্যার হাসপাতাল বাদে নতুন করে নির্মিত ১৫০ শয্যার হাসপাতালটি চিকিৎসা কার্যক্রম চালু করতে বিশেষজ্ঞসহ অন্যান্য চিকিৎসক ও বিভিন্ন পদের ৩৮৮ জন জনবল প্রয়োজন। নতুন করে আসবাবপত্রও প্রয়োজন।

চিকিৎসকসহ প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ না করাসহ আসবাবপত্র সরবরাহ না করায় চিকিৎসা কার্যক্রম শুরু নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এ কারণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এখনো হাসপাতাল ভবনটি বুঝিয়ে নেননি।  
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে ১০০ শয্যার আধুনিক সদর হাসপাতালটি জোড়াতালি দিয়ে কোনভাবে চলছে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম।

নামে আধুনিক হলেও আধুনিকতার কোন ছোঁয়া নেই হাসপালটিতে। আধুনিক সদর হাসপাতালসহ পঞ্চগড় জেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে বছরের পর বছর ধরে বিশেষজ্ঞ ও অন্যান্য চিকিৎসক এবং বিভিন্ন জনবলের শূন্য পদগুলো পূরণ করা হচ্ছে না। পদ থাকলেও হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকের অভাবে অনেক রোগীকে চিকিৎসার জন্য রংপুর, ঢাকা ও ভারতে গিয়ে হয়রানি ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হচ্ছে।

২০১৮ সালে ১০০ শয্যার হাসপাতাটিকে আধুনিক সুযোগ সুবিধাসহ সব ধরণের সেবা নিশ্চিত করতে ৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে শুরু হয় ২৫০ শয্যায় উন্নিতকরণের কাজ। প্রকল্পের আওতায় ১৫০ শয্যার হাসপাতালের জন ১০ তলা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করা হলেও ২০২২ অর্থবছরে ৯ তলার নির্মাণ কাজ শেষ করা হয়েছে। ১৫০ শয্যার নতুন হাসপাতালটি পূর্বের ১০০ শয্যার আধুনিক সদর হাসপাতালের সাথে সংযুক্ত হয়ে দু’টি মিলিয়ে হবে ২৫০ শয্যার হাসপাতাল।

১৫০ শয্যার হাসপাতালটিতে বাড়তি চিকিৎসক ও জনবল দিয়ে নতুন করে ২৫০ শয্যার হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম চালু নিয়ে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে ১০০ শয্যার পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের জন্য চিকিৎসক, কর্মকর্তা, নার্স ও কর্মচারী মিলিয়ে মোট পদের সংখ্যা ২৪৭টি। এর মধ্যে চিকিৎসকসহ অন্যান্য অনেক পদই রয়েছে শুন্য।

সিনিয়র ও জুনিয়র কনসালটেন্টের ১৮টি পদের মধ্যে শুন্য রয়েছে ১৩টি। সিনিয়র ও জুনিয়র বিশেষজ্ঞের মধ্যে মেডিসিন, গাইনি, অর্থপেডিক্স, চর্ম ও যৌন, চক্ষু, ইএনটি, মেডিসিন, শিশু, রেডিওলজি, ডেন্টাল, সার্জারী, ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহাবিলিশন, রেওিলজিস্ট, প্যাথলজিস্টের ১টি করে পদ শুন্য।

মেডিকেল অফিসার ৪ জনের মধ্যে ৩ জন, জরুরি মেডিকেল অফিসার ২ জন, সহকারী সার্জন ৪ জন, সেবা তত্ত্বাবধায়ক, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, পরিসংখ্যান কর্মকর্তা, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, ল্যারেটরী, ফিজিও, ফর্মাসিস্ট, কম্পিউটর অপারেটর, প্রধান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক, অফিস সহায়ক, পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ বিভিন্ন পদ শূন্য।

এছাড়া, তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও মেডিকেল অফিসারের ১৬টি পদের মধ্যে ১২টি, আটোয়ারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৫টি পদের মধ্যে ৮টি, বোদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৯টি পদের মধ্যে ৭ জন ও দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১৯টি পদের মধ্যে ১১টি পদ শূন্য রয়েছে।

পঞ্চগড় গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান সরকার বলেন, ১৫০ শযার হাসপাতালটি চিকিৎসার জন্য সর্ম্পূণরুপে প্রস্তুত। হাসপাতালটিতে সকল সুযোগ সুবিধা রাখা হয়েছে। এ হাসপাতালটি বুঝিয়ে নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছে।

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. এসআইএম রাজিউল করিম বলেন, নতুন ১৫০ শয্যার হাসপাতালটিতে চিকিৎসা কার্যক্রম চালু করতে উপপরিচালক, সহকারী পরিচালক, চিকিৎসকসহ প্রয়োজনীয় জনবল ও টাকা চেয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবরে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।

এছাড়া ১০০ শয্যার আধুনিক সদর হাসপাতালের শূন্য পদগুলো পূরণের জন্যও আলাদা চাহিদাপত্র দেয়া হয়েছে। গণপূর্ত কর্তৃপক্ষ হাসপাতালটি হস্তান্তর করলে আমরা কার্যক্রম শুরু করবো।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS