ভিডিও

গোমতীর ভাঙা বাঁধে এখনো রয়েছে তীব্র স্রোত, পানি কমছে ধীর গতিতে

প্রকাশিত: আগস্ট ২৯, ২০২৪, ১০:০৩ রাত
আপডেট: আগস্ট ২৯, ২০২৪, ১০:০৩ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

কুমিল্লার ১৪ উপজেলায় এখনও ১০ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি আছেন বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।  পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে কুমিল্লায় সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি এখনো খুব একটা উন্নতি হয়নি। বন্যার শুরুতে পানির তোড়ে ভেঙে যাওয়া গোমতীর বাঁধে এখনো তীব্র স্রোত রয়েছে।

জেলার ১৪টি উপজেলা প্লাবিত হওয়ার আট দিন পার হলেও এখনো বন্ধ হয়নি ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পানি। তবে আগের চেয়ে পানির প্রবাহ কিছুটা কমেছে। বানের পানির উচ্চতা কিছুটা কমলেও দুর্ভোগ বেড়েছে।

আজ আজ বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) বন্যা কবলিত বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, ধীরগতিতে নামছে বানের পানি। তবে ২২ অগাস্ট মধ্যরাত বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুড়বুড়িয়ায় যে স্থানে গোমতী নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙেছিল, সেই স্থান দিয়ে এখনো লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে।

এতে বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি এখনো ভয়াবহ আকারে রয়েছে। পাশের দেবিদ্বার উপজেলায় প্রতিদিনই প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ১৪ উপজেলায় এখনও ১০ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি আছেন বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

আজ বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে গোমতী নদীর পানি বিপৎসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী খান মো. ওয়ালিউজ্জামান।

বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, উজান থেকে নেমে আসা পানির প্রবাহ কিছুটা কমলেও তা একেবারে বন্ধ হয়নি। গোমতীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে।

ওয়ালিউজ্জামান বলেন, গত দুই দিন ধরে গোমতীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও যেই স্থানে বাঁধ ভেঙেছে সেটি মেরামত করতে আরও অন্তত ১৫ দিন সময় লাগবে। কারণ ওই স্থান দিয়ে এখনও লোকালয়ে পানি ঢুকছে। এতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। আর পানি না কমা পর্যন্ত বাঁধ মেরামত করা সম্ভব না।

সকালে গোমতীর বাঁধের ভাঙা অংশ বুড়িচংয়ের বুড়বুড়িয়া এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ভাঙা অংশ দিয়ে তীব্র পানির স্রোত প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বুড়িচংয়ের নিম্নাঞ্চল দিয়ে ব্রাহ্মণপাড়া ও দেবিদ্বার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত করছে।

তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বুড়িচং উপজেলার প্লাবিত এলাকাগুলো থেকে পানি কিছুটা কমেছে। ধীরগতিতে পানি কমার ফলে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে গেলেও তা খুবই অপ্রতুল।

এদিকে চৌদ্দগ্রাম, নাঙ্গলকোট, মনোহরগঞ্জ ও লাকসাম উপজেলায়ও কমেছে বন্যার পানি। নাঙ্গলকোট ও মনোহরগঞ্জ উপজেলার বেশিরভাগ এলাকা দুর্গম হওয়ায় এখনও ত্রাণের সংকট রয়েছে। বিশেষ করে নৌযান না থাকায় বন্যা কবলিত প্রতিটি এলাকায় পৌঁছাচ্ছে না ত্রাণ।

মনোহরগঞ্জ ও নাঙ্গলকোট উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকায় সাঁতরে ত্রাণ সরবরাহ করতে দেখা গেছে স্বেচ্ছাসেবকদের। বন্যাদুর্গত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও শিশু খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। খাবার সংকটে অনাহারে দিন পার করছেন অনেকেই। ত্রাণের গাড়ি দেখলেই ছুটে যাচ্ছেন দুর্ভোগে থাকা বানভাসিরা।

কুমিল্লা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আবেদ আলী বলেন, বন্যার্তদের জন্য এক হাজার ৮০০ টন চাল ও ৪৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (২৯ আগস্ট) পর্যন্ত এক হাজার ২০০ টন চাল ও ৩৯ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত আছে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS