ভিডিও

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস

রবিউল ইসলাম (রবীন)

প্রকাশিত: মার্চ ১৭, ২০২৪, ০৫:৪১ বিকাল
আপডেট: মার্চ ১৭, ২০২৪, ০৫:৪১ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

আজ ১৭ মার্চ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ১০৪ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস। ১৯২৫ সালে জেনেভায় বিশ্ব শিশু কল্যাণ সম্মেলনে প্রথম আন্তর্জাতিক শিশু দিবস ঘোষণা করা হয়। এটি উদযাপনের  তারিখ দেশ অনুসারে পরিবর্তিত হয়।

১৯৫৯ সালের ২০ নভেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ কর্তক শিশু অধিকারের ঘোষণাকে স্মরণ করার জন্য ২০ নভেম্বর ’বিশ্ব শিশু দিবস’ পালিত হয়। কোন কোন দেশে এটি ’শিশু দিবস’ হিসেবেও পালিত হয়। ১৯৯৬ সালে দেশের মন্ত্রীসভা ১৭ মার্চ শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিনকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। ১৯৯৭ সালের ১৭ মার্চ থেকে দিনটি জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

আমরা প্রায় বলে থাকি শিশুরা জাতির ভবিষ্যত। এই শিশুর ’বর্তমানকে অর্থবহ করে তুলতে আমরা কি করছি ? শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভালবাসার কারণেই এই দিনটিকে বর্তমান সরকার  প্রথম মেয়াদে খ শ্রেনীভুক্ত দিবস হিসেবে ১৭ মার্চকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। দিনটি সরকারি ছুটির দিন। জাতীয়ভাবে দিনটি দেশে পালিত হয়ে থাকে।

বিশ্ব সন্মোহনীদের নামের তালিকায় বঙ্গবন্ধুর নাম সর্বাগ্রে। তিনি সগৌরবে সন্মোহনিতার আসনে সমাসীন। এক বঙ্গবন্ধুর তর্জনীর আহবানে সাড়ে সাত কোটি মানুষ সড়কে নেমে আসে। জীবন দেয়। কৃষক, শ্রমিক,  মজুর, ছাত্র-জনতা এক কথায় সব শ্রেনীর মানুষের নেতা ছিলেন তিনি। তাই তিনি ’বঙ্গবন্ধু’।

ফরিদপুরের টুঙ্গিপাড়ায় যে শিশুটির জন্ম হলো ১৯২০ সালে, সেই ছেলেটি ছাত্র অবস্থায় স্কুলের সমস্যার কথা জানাতে দেশের মুখ্যমন্ত্রীর সামেন গিয়ে দাঁড়ায়। তিনিই শেখ মুজিব। শিশুকাল থেকেই অকাতরে মানুষের জন্য তিনি আপনজন হয়ে উঠেন।

শীত, গ্রীস্মে তিনি গরীব মানুষের প্রতি চরম ভালবাসা দেখিয়েছেন। নিজের ব্যবহত কাপড় তিনি গরীব মানুষদের দান করে দিতেন। সেই বয়সের নানা ঘটনায় তিনি মানুষের নেতা হয়ে উঠেছিলেন। তিনি সব বয়সে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ে তিনি কর্মচারীদের আন্দোলনকে সমর্থন করেন। ঐতিহাসিক ’ ৬ দফা’, ’১১ দফা’ দিবসগুলির স্রষ্টা শেষ মুজিব। ভাষা আন্দোলনেও তার চরম অবদান আছে। কোথায় তিনি নেই?

কিন্তু অল্প বয়সেই বঙ্গবন্ধু স্বৈরাচরের  কুনজেরে পড়ে যান। কালো তালিকায় তার নাম উঠে যায়। তাই তাঁর জীবনে ঐতিহাসিক আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দেখা দেয়। সেই মামলার তিনি অন্যতম আসামী হয়ে যান। কিন্তু রাখে আল্লাহ মারে কে? সেই মামলা থেকে তিনি তো মুক্তি পান, আবার সেই মামলায় তাঁকে বিখ্যাত করে তোলে। শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর জেলখাটা। একটার পর একটা মামলা দিয়ে সরকার তাকে জেলে পুড়েন। কিন্তু ততদিনে তিনি একক নেতা হয়ে উঠেছিলেন পূর্ব পাকিস্তান বা বাংলাদেশে।

তাঁর নামে অসংখ্য বার হুলিয়া জারি করা হয়। কিন্তু বঙ্গবন্ধুই একমাত্র নেতা, যিনি জেলের ভয়ে কোনদিন পালিয়ে থাকেন নি। তাঁর অনুপস্থিতে তাঁর  স্ত্রী বেগম মুজিব সংসার চালাতেন। দলের অনেক কর্মিকে বেগম মুজীব অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছেন।

১৯৭০ সালের জাতীয় নির্বাচনে শেখ মুজিবের দল আওয়ামী লীগ বিজয় লাভ করে। কিন্তু তাঁকে ক্ষমতা দেওয়া হয়নি।এর মধ্যে ঝড়ের মতো চলে এলো একাত্তর। মুক্তিযুদ্ধ। মুজিবকে গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ।

পাখির মতো গুলি করে বাঙালিদের হত্যা করতে থাকে ইয়াহিয়া, নিয়াজি। মাত্র ৯ মাসে তারা ৩০ লক্ষ বাঙালিকে হত্যা করে।বাঙালি ভারতের সহযোগিতায় যুদ্ধ শুরু করে। প্রায় ১ লাখ মানুষ শরণার্থী হয়ে ভারতে আশ্রয় নেয়। ৯ মাস যুদ্ধ চলে। অস্থায়ী সরকারের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধ চলে। তুমুল সে যুদ্ধ। পাকিস্তানীরা হেরে যায় সেই যুদ্ধে।

আন্তর্জাতিক চাপে বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় পশ্চিম পাকিস্তানের সরকার। বঙ্গবন্ধু দেশে এলেন বিজয়ীর বেশে। সরকার গঠন করলেন। মুক্তিযুদ্ধে জামাত প্রকাশ্যে বিরোধিতা করেন। কিন্তু ৭১ এর পরাজয় তারা সহজভাবে মেনে  নেয় নি। তাই  বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে আবার ষড়যন্ত্র শুরু হয়।

আসে ১৯৭৫ সাল। বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু স্বপরিবারসহ নিহত হন। তাঁকে হত্যা করা হয়। হত্যা করা হয় পুরো পরিবারকে। দেশের বাইরে থাকায় বেঁচে যান শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। শিশু রাসেলকেও নির্মমভাবে হত্যা করে খুনিরা।

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের তালিকায় চলে যায়। বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে ঘনিষ্ট ৪ নেতাকে জেলখানায় হত্যা করা হয়। অনেক অত্যাচার আর নির্যাতন চলে বঙ্গবন্থুর সমর্থকদের প্রতি। একটা সময় আওয়ামী লীগ ঘুরে দাঁড়ায়। আসে ১৯৯৬ সাল।

মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বকারী দল আবার ক্ষমতায় আসে। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হয়। খুনিদের শাস্ত্রি হয়। জাতি কলঙ্কমুক্ত হয়। বর্তমানে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা দেশের প্রধানমন্ত্রী।


সহকারী অধ্যাপক, কলামিস্ট

01725045105



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS