ভিডিও

জিম্মি নাবিকদের উদ্ধার জরুরি

প্রকাশিত: মার্চ ১৮, ২০২৪, ১০:৪৯ রাত
আপডেট: মার্চ ১৮, ২০২৪, ১০:৪৯ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

ভারত মহাসাগরে বাংলাদেশের পতাকাবাহী এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজ জিম্মি করে সোমালিয়ার উপকূলের দিকে নিয়ে যাচ্ছে জলদস্যুরা। জাহাজে থাকা ২৩ নাবিককে জিম্মি করে গুলি ছুড়ে ভয় দেখাচ্ছে তারা। টানা না দিলে একজন একজন করে গুলি করে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। মোজাম্বিক থেকে কয়লা ভর্তি করে সংযুক্ত আরব আমিরাত যাওয়ার পথে নৌযানটি সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়ে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জাহাজের নাবিকরা নিরাপদে রয়েছেন।

জিম্মি ২৩ নাবিক ক্রু সহ বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহকে নিজে আস্তানায় নিয়ে গেছে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় জাহাজটি সোমালিয়ার গারাকাদ উপকূল থেকে ৭ নটিক্যাল মাইল দূরে নোঙর করে তারা। এরপরই ভারী অস্ত্র শস্ত্রে সজ্জিত জলদস্যুদের অন্য একটি দল সেটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ২৩ নাবিককে জিম্মি করে রাখে।

হাইজ্যাকে অংশ নেওয়া জলদস্যুরা জাহাজ থেকে নেমে গেছে। এদিকে হাইজ্যাক হওয়া এমভি আব্দুল্লাহকে অনুসরণ করার কথা জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মেরিটাইম সিকিউরিটি ফোর্স। ইইউর এই ফোর্স এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে জানায়, ওই অঞ্চলে জলদস্যুদের দৌরাত্ম্য রুখতে ও চলাচলকারী জাহাজগুলোর নিরাপত্তায় পরিচালিত। অপারেশন আটলান্টা এর অংশ হিসেবে এমভি আব্দুল্লাহকে অনুসরণ করতে ইইউর একটি জাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশি এবং সোমালীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে বলেও পোস্টে জানানো হয়েছে।

পত্র-পত্রিকার খবরে জানা গেছে, জিম্মি থাকা এক নাবিক গত বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে জাহাজের মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা সুস্থ আছেন, জলদস্যুরা সেহরি ও ইফতার করার সুযোগ দিচ্ছে। বিভিন্ন বিদেশি গণমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে, সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসু থেকে ১১০০ কিলোমিটার দূরে এমপি আব্দুল্লাহ ও এর ২৩ নাবিক একে জিম্মির খবর মঙ্গলবার প্রথম জানতে পারে বৃটিশ সামরিক বাহিনী।

শুধু এমভি আব্দুল্লাহ নয়, আরও অনেক জাহাজের বাংলাদেশি নাবিক ও ক্র সোমালিয়ার জলদস্যুদের কাছে অতীতে জিম্মি হয়েছিলেন। তাদের কেউ ২০ মাস পর কেউ ১০ মাস পর জিম্মি দশা থেকে মুক্তি পান। ২০১২ সালে সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে ২০ মাসেও বেশি সময় জিম্মি থাকার পর বাংলাদেশি সাত নাবিক মুক্তি পান। ২০১০ সালের ২৬ নভেম্বর ভারত মহাসাগর থেকে মালয়েশিয়ার পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আলডেবোকে জিম্মি করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা।

এ সময় তারা জাহাজটিতে থাকা ২২ কর্মকর্তাকে জিম্মি করে। এই ২২ জনের মধ্যে ছিলেন ৭ জন বাংলাদেশি, ৭ জন পাকিস্তানি, ৬ জন শ্রীলঙ্কায় এবং একজন করে ভারতীয় ও ইরানি নাগরিক। তাদের সবাই মুক্তিপণ দিয়ে দীর্ঘসময় পর মুক্ত হয়েছিলেন। এমভি আব্দুল্লাহর মালিকানাধীন কেএসআর গ্রুপের আরেকটি জাহাজ এমভি জাহান মনি এর আগে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পায় ১০০ দিন পর।

ছিনতাই হওয়া জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজের মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, জিম্মি করার পর দস্যুরা একটি কেবিনে সব নাবিককে অবরুদ্ধ করে রেখেছিল বৃহস্পতিবার নিজেদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় নেওয়ার পর বিকেলের দিকে নাবিকদের কেবিনে যাওয়ার সুযোগ করে দেয় জলদস্যুরা।

তিনি আরো বলেন, জাহাজের সব নাবিক ভালো আছেন। সুস্থ আছেন, দস্যুরা কারও সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেনি। এখন পর্যন্ত দস্যুরা মুক্তিপণ দাবি করেনি। তবে আমরা বসে নেই। নাবিকদের অক্ষত অবস্থায় উদ্ধারে উদ্যোগ শুরু হয়েছে। সরকারও সহযোগিতা করছে।

এবারের ঘটনায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত জাহাজটির নিয়ন্ত্রণে রাখা জলদস্যুরা কোনো মুক্তিপণ দাবি করেনি। যদিও ৫০ লক্ষ ডলার মুক্তিপণ দাবির একটি গুজব প্রচার হতে দেখা যায়। তবে এর কোনো যথার্থতা পাওয়া যায়নি। জি্িম্ম নাবিকদের উদ্ধারে সর্বোচ্চ তৎপরতা চালাচ্ছে সরকার সংশ্লিষ্ট ও জাহাজ কর্তৃপক্ষ। বুধবার মন্ত্রী পরিষদ সভায় এ বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়।

আমরা বলতে চাই, জিম্মি মুক্তির ক্ষেত্রে প্রধান ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো জলদস্যুদের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা এবং মুক্তির বিভিন্ন শর্ত নির্ধারণ করে মুক্তিপণ্যের বিষয়টির সুরাহা করা তখন এই বিষয়গুলো বিবেচনায় নিতে হবে। সতর্কতার সঙ্গে যেমন নাবিকদের উদ্ধার করার চেষ্টা চালাতে হবে। তেমনি এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS