ভিডিও

ঈদকে সামনে রেখে অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য

প্রকাশিত: এপ্রিল ০২, ২০২৪, ১০:৫৫ রাত
আপডেট: এপ্রিল ০২, ২০২৪, ১০:৫৫ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

ঈদকে সামনে রেখে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃদ্ধি পেয়েছে ছিনতাইকারী ও অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য। এর আগে সাধারণ মানুষ তো নয়-ই, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও অজ্ঞান পার্টির হাত থেকে রেহাই পায়নি। পত্র-পত্রিকার খবরে প্রকাশ রাজধানীর বিভিন্ন বাস-টার্মিনাল, লঞ্চ ঘাট, রেলস্টেশনে অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টি, ছিনতাইকারী, পকেটমারদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে কয়েকজন সক্রিয় সদস্য গ্রেফতারও হয়েছে।

তাদের কাছ থেকে চেতনানাশক ওষুধ ও বিস্কুট উদ্ধার করা হয়। এসব চক্র দীর্ঘদিন ধরে যাত্রী বেশে দূর পাল্লার বাসে ওঠে যাত্রীদের সঙ্গে সখ্য ভাব তৈরি করে কৌশলে বিস্কুট এবং পানির সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে সর্বস্ব লুট করে থাকে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল সূত্র জানায়, প্রতি মাসে ১৫ থেকে ২০ জন মানুষ অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে সেখানে চিকিৎসার জন্য যায়। গত বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত দু’শতাধিক মানুষ অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে।

এদের অনেকেই দীর্ঘ মেয়াদে শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। যাত্রীবাহী বাস, ট্রেন, লঞ্চ, ফেরি-ফেরিঘাট, বাস টার্মিনাল, রেলস্টেশন কোথাও নিরাপদ নয় কেউ। হকার কিংবা সহযাত্রী-বন্ধু সেজে সাধারণ মানুষের সবকিছু কেড়ে নেয় অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা।

পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এদের দৌরাত্ম্য থামাতে পুলিশের একটি বিশেষ মাঠে কাজ করছে। অনেককে ধরে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। তবে তাদেরকে নির্মূল করার জন্য পথচারী বা যাত্রী সবাইকে সতর্ক হতে হবে। অজ্ঞান পার্টির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে।

রাজধানীসহ দেশের মহানগরীগুলোয় ঈদ সামনে রেখে অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা বাড়ে প্রতি বছর। বাস-ট্রেন-লঞ্চ টার্মিনাল সহ জনাকীর্ণ স্থানে হকার সেজে ইফতারের আগে বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য বিক্রি করছে তারা। আর এসব খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছে চেতনানাশক ওষুধ। ফলে এগুলো কিনে কেউ খেলেই মাশুল দিতে হয়। কখনো কখনো চেতনানাশক ওষুধের মাত্রা বেশি হলে ভিকটিম মারা যাচ্ছে।

অজ্ঞান পার্টির শিকারদের কেউ কেউ স্বাভাবিক জীবনে আর ফিরতে পারছে না। ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একের পর এক অজ্ঞান পার্টি সদস্যদের আটক করেও তাদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না।

এরা গ্রেফতার হলেও আইনের ফাঁক-ফোকরের আদালত থেকে জামিন নিয়ে অপরাধী চক্রের সদস্যরা আবার একই কাজে জড়িয়ে পড়ছে। সহজ সরল মানুষকে লক্ষ্য করে তারা ফেরিওয়ালা সেজে জুস, ডাবের পানি, খেজুর, ঝালমুড়ি, শরবতসহ নানা উপকরণ বিক্রি করছে। আর প্রতারিত মানুষ সর্বস্ব হারানোর পাশাপাশি জীবন হারানোর মতো ঝুঁকিতে পড়ছে।

প্রতিদিন গড়ে অন্তত ২০ জন অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পরে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন। সহজ সরল মানুষ শুধু নন, বৃদ্ধিবৃত্তির সঙ্গে জড়িত মেধাবীরাও অজ্ঞান পার্টির শিকার হয়ে সর্বস্ব হারানোর পাশাপাশি নিজের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দেওয়ার নজির ভুরি ভুরি। অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি এড়াতে অপরিচিত কারও দেওয়া খাবার না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

পাশাপাশি নিয়মিত অভিযান চালিয়ে তারা অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের গ্রেফতার করছে বলেও দাবি করেছে। প্রতি বছর ঈদুল ফিতরের আগে ও ঈদুল আজহা এবং দুর্গাপূজার মৌসুমে অজ্ঞান পার্টির সদস্যরা সক্রিয় হয়ে ওঠে।

অভিজ্ঞ মহলের মতে এ ধরনের অপরাধী যাতে সহজে ছাড়া না পায় তা নিশ্চিত করতে আইনের ফাঁকফোকর বন্ধ করা দরকার। অপরাধীরা জামিন নিয়ে পুনরায় একই অপরাধে লিপ্ত হতে না পারে সে ব্যাপারেও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে হবে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS