ভিডিও

গরমে নাকাল

প্রকাশিত: এপ্রিল ১৯, ২০২৪, ১০:৫৯ রাত
আপডেট: এপ্রিল ২০, ২০২৪, ০১:২৭ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

একদিকে তীব্র গরমে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। অন্যদিকে হাঁসফাঁস করছে প্রাণিকূল। দেশের বিভিন্ন স্থানে তাপমাত্রা অসহনীয় হয়ে উঠেছে। বলার অপেক্ষা রাখে না দুই সপ্তাহ ধরে দেশব্যাপী বইছে তাপপ্রবাহ। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের পাঁচ বিভাগ এবং দুই জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপমাত্রা বয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এ পরিস্থিতি আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে। এই সময়ের মধ্যে তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। এদিকে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। সোমবার পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় ৪০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। এর আগে রোববার ৪০ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল রাঙামাটিতে। সোমবার ঢাকার তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৩৭.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস যা আগের দিনের চেয়ে দশমিক এক ডিগ্রি বেশি।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন বর্তমানে পশ্চিমা-লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। বৈশাখের প্রথম দিন থেকেই কড়া রোদ, উষ্ণ বাতাস আর তীব্র দাবদাহে রাজধানীসহ সারা দেশের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে যারা জীবন-জীবিকার তাগিদে ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন তাদের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ভ্যাপসা গরম আর তীব্র দাবদাহের।

আমরা বলতে চাই, এমন ভয়াবহ পরিস্থিতিতে যেমন সতর্ক থাকতে হবে, তেমনিভাবে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা। জানা যাচ্ছে, তীব্র গরমে সর্দি-কাশি, জ্বরের সঙ্গে মানুষ ভুগছে পানিবাহিত রোগে। এল নিনোর প্রভাবে বাংলাদেশে এবার খরতাপের দাপটে বেড়েছে। আবহাওয়ার এই বৈরী আচরণ মরুভূমির সব সূচক যেন ভর করেছে। রাজধানীতে যা এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।

অন্যদিকে উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের তাপমাত্রাও যেন মরুভূমির তাপমাত্রাকে ছাড়িয়েছে। দু:সহ গরমে মানুষের পাশাপাশি পশু-পাখিরও বেহাল দশা। ফলে এসব পরিস্থিতিতে জনসাধারণের সচেতনতা ও করণীয় সংক্রান্ত প্রচার-প্রচারণা জরুরি। অন্যদিকে নানা ধরনের অসুখ-বিসুখের খবর আসছে, সেগুলো আমলে নিয়ে চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়গুলোকে সামনে রেখে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে।

আমলে নেওয়া দরকার, তীব্র দাবদাহের মধ্যে সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছেন ধান কাটার শ্রমিক ও কৃষক। বিভিন্ন এলাকায় গরম বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় জমির ফসলের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। এ ছাড়া খবরের মাধ্যমে জানা যাচ্ছে, ঘর থেকে বের হলেই গায়ে জ্বালা ধরাচ্ছে তাপমাত্রা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অসহনীয় দাবদাহে গরম বাড়তে থাকে। সূর্যের প্রখর তাপে মানুষের প্রাণ প্রায় ওষ্ঠাগত। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক এ পরিস্থিতি এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।

প্রকৃত অর্থে বৈশাখে আগুন ঝরাচ্ছে আকাশ, কাঠফাটা রোদে তপ্ত বাতাস। প্রাণ ও প্রকৃতি প্রখর রোদে পুড়ছে, যদিও বৈশাখের চামড়া পোড়া রোদের সবটুকু গায়ে জড়িয়ে নিয়েছে রক্ত লাল পুষ্পরাজি। আগুনের ফুলকি ছড়াচ্ছে গ্রীষ্ম এবং ব্যাপক প্রভাব পড়ছে জনজীবনে। আমরা মনে করি, প্রচন্ড গরমে সাবধান ও সচেতন থাকার বিকল্প নেই। বিশেষ করে চলাফেরা ও খাবারের ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।

শিশুদের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে। স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমাতে হলে এই গরমে সবার বেশি করে পানি পান করা উচিত। এ ক্ষেত্রে ডারেব পানি, লেবুর শরবত উত্তম। জরুরি কোনো কাজ ছাড়া ঘরের বাহির না হওয়াই ভালো। সর্বোপরি ব্যক্তি সচেতন ও সতর্ক হলে একদিকে যেমন হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে অন্যদিকে মুক্তি পাওয়া যাবে বিভিন্ন রোগ বালাই থেকেও।

প্রকৃতির এ বিরূপ আচরণে মানুষের সরাসরি কোনো হাত নেই সত্য। এ অবস্থা প্রতিরোধ করার ক্ষমতাও কারও নেই। বস্তুত নানা কারণেই আবহাওয়ার আচরণ বিরূপ হয়ে উঠছে। ধারণা করা যায়, এটি কার্বন বৃদ্ধি জনিত জলবায়ু পরিবর্তনেরই প্রভাব। প্রকৃতিকে তার স্বাভাবিক না রাখায় সে বিরূপ আচরণ শুরু করেছে। সেই অর্থে এ পরিস্থিতির জন্য মানুষই দায়ী।

মানুষ পরিণাম না ভেবে গাছপালা কেটে বন উজাড় করছে। কলকারখানা থেকে কার্বন নি:সরণ করে দূষিত করেছে পরিবেশ। এরই প্রতিক্রিয়া প্রকাশ পাচ্ছে নানাভাবে। মানুষ এ থেকে শিক্ষা নিয়ে পরিবেশ রক্ষায় সচেতন হবে, এটাই কাম্য।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS