ভিডিও

নকল-ভেজাল পণ্যে দেশ সয়লাব হয়ে গেছে

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৩, ২০২৪, ১১:০৪ রাত
আপডেট: এপ্রিল ২৩, ২০২৪, ১১:০৪ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

নকল, ভেজাল, মানহীন ও অস্বাস্থ্যকর পণ্য, খাদ্য পণ্য উৎপাদন, মজুত ও বিক্রি আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। এতে করে ভোক্তার অধিকার ক্ষুন্ন হয়, স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি বাড়ায়। এজন্য অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালিত হচ্ছে দীর্ঘদিন থেকে। বাংলাদেশের হাজারও সমস্যার মধ্যে অন্যতম প্রধান সমস্যা হলো খাদ্যে ভেজাল।

খাদ্যে ভেজাল আজ আমাদের জাতীয় জীবনে এক মহাদুর্যোগের নাম। অথচ মানুষের সুস্বাস্থ্য ও বেঁচে থাকার জন্য পুষ্টিকর খাবার অতি জরুরি। ফলে বাংলার মাটি থেকে খাদ্যে জীবনসংহারী ভেজাল মেশায় যারা, তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। গড়ে তুলতে হবে সামাজিক প্রতিরোধ। এটা সত্য, বর্তমানে খাদ্যে ভেজাল অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে।

পত্র পত্রিকার খবরে প্রকাশ, খাদ্যে ভেজাল মেশানোর জন্য সচরাচর যেসব সামগ্রী ব্যবহার করা হয় সেসবও দুই নম্বরী, যা শুধু মানব স্বাস্থ্যই নয়, গবাদিপশু, হাঁস-মুরগি ও মাছের জন্যও ক্ষতিকর। খবরে বলা হয়েছে সম্প্রতি হাঁস-মুরগীর পরিত্যক্ত বর্জ্য ও চামড়া শুকিয়ে মেশিনে গুঁড়া করে তৈরি হচ্ছে পোলট্রি ফিড। চাল-আটা-ময়দায় সাদা রঙের নুড়িপাথর, গমের ভূসি, নিম্নমানের খেসারি, ছোলার খোসা ইত্যাদি মেশিনে গুঁড়ো করে মেশানো হচ্ছে।

মোটা চাল মেশিনে ভাঙিয়ে সরু করে কৃত্রিম সুগন্ধি মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছে পোলাওয়ের চাল-চিনি গুঁড়া, কালিজিরা, কাটারিভোগ ইত্যাদি। এসব বিক্রি হচ্ছে উচ্চমূল্যে। তেল-মশলা মাছ-মাংস দুধের অবস্থাও অনুরূপ। আর এসবই আমাদের দৈনন্দিন ক্ষুন্নিবৃত্তি নিবারণের জন্য কিনতে হচ্ছে চড়ামূল্যে। কসমেটিক্স এর বাজারও ভেজাল-নকলে ভরপুর। এমনকি নকল ওষুধও বিক্রি হচ্ছে।

সত্যি বলতে কী, বাজারে সম্ভবত এমন কোনো পণ্য পাওয়া যাবে না, যেটি শতভাগ ভেজালযুক্ত। খোঁজ নিলে জানা যাবে, খুচরা বাজারে আসতে কোন না কোনো পর্যায়ে এতে কমবেশি ভেজালযুক্ত হচ্ছেই। ভেজাল মেশানোর পেছনে একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী ও উৎপাদকদের প্রধান যে মনমানসিকতা কাজ করে, তা হলো অতিরিক্ত মুনাফার প্রত্যাশা। দ্বিতীয়ত, খাদ্য পণ্যের ওজন বাড়ানো।

পচনশীল দ্রব্য অধিকক্ষণ ভালো রাখাও অন্যতম একটি উদ্দেশ্য বৈকি। পুষ্টিবিদ ও চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রায় প্রতিদিন ভেজাল মিশ্রিত খাবার খেয়ে, সুস্থ-সবল মানুষের আলসার, গ্যাস্ট্রিক, বুকজ্বালা পোড়া, পাকস্থলী, লিভারের সমস্যা, ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, কিডনি রোগ ইত্যাদিতে আক্রান্ত হওয়ার সমূহ আশংকা রয়েছে।

এসব সাধারণ অসুখ-বিসুখ পরে এমনকি ক্যান্সার সিরোসিস সহ নানা দুরারোগ্য ব্যাধিতে রূপ নিতে পারে। সারাদেশে ভেজাল প্রতিরোধ ও নিরসনের জন্য বিএসটিআই ও ভ্রাম্যমাণ আদালত রয়েছে। এ লক্ষ্যে কাজ করে থাকে পৌর কর্তৃপক্ষ।

তবে প্রায়ই এসব অভিযান পরিচালিত হয় মৌসুমী ভিত্তিতে, খন্ডকালীন সময়ের জন্য। সারাদেশে নিয়মিত অভিযান পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত জনবল ও অবকাঠামোও নেই সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর। ফলে ভেজালের প্রায় অবাধ দৌরাত্ম্য চলছেই। জনস্বাস্থ্য নিয়ে অবহেলা প্রদর্শনের সুযোগ নেই।

যেহেতু একটি রাষ্ট্রের জনগণের মৌলিক চাহিদার মধ্যে একটি হলো খাদ্য, সেহেতু খাদ্য নিরাপত্তার ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি এসব ভেজালের কারবার বন্ধ করা না গেলে জনস্বাস্থ্য মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়বে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS