ভিডিও

আন্তর্জাতিক সীমান্তে সোনা চোরাচালান

প্রকাশিত: মে ০৭, ২০২৪, ০৬:১৮ বিকাল
আপডেট: মে ০৭, ২০২৪, ০৬:১৮ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

গত বৃহস্পতিবার ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তে ৪ কোটি ৭০ লাখ রুপি মূল্যের ৭ কিলোগ্রাম সোনা জব্দ করেছে বিএসএফ। পাচারকারী সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছে তিন নারীকে। বিপুল পরিমাণ এই সোনা বাংলাদেশ থেকে ভারতের কলকাতায় পাচার করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গেদে সীমান্ত চৌকি এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন আকারের ৩২টি সোনার বার উদ্ধার করা হয়।

ভারতে সোনা পাচারের রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বাংলাদেশ। কিছুদিন আগে দুই দিনে বেনাপোল সীমান্ত থেকে পাচারের সময় উদ্ধার করা হয়েছে ৭৫ কেজি সোনা। মাত্র একদিন আগে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয় ১২ কেজি সোনাসহ এক ভারতীয় নাগরিককে। শাহজালালসহ বাংলাদেশের তিন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রতি মাসেই বিপুল পরিমাণ সোনা ধরা পড়ে।

মনে করা হয় এ সোনার সিংহভাগই ভারতে পাচারের জন্য আনা হয়। বিমানপথে বিদেশ থেকে যে সোনা চোরাচালান হয়ে আসে তার বড়জোর এক দুই শতাংশ ধরা পড়ে। পত্রপত্রিকার খবরে বলা হয় বিমানবন্দরসহ বিভিন্ন সংস্থার এক শ্রেণির দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিদের ম্যানেজ করে চলছে এ কর্মকান্ড। মাঝে মাঝে কিছু কিছু চালান ধরা পড়লেও বেশির ভাগ চালান নিরাপদে পার হয়ে যাচ্ছে সীমান্তের ওপারে প্রতিবেশী দেশ ভারতে। সোনা বহনকারীদের দু-এক জন ধরা পড়লেও আড়ালে থেকে যাচ্ছে ‘গড ফাদাররা’।

আমাদের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলো থেকে বিদেশ থেকে পাচার হয়ে আসা অবৈধ সোনাগুলো দেশের বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে ভারতে পাচার হয়ে যায়। আবার কখনও কখনও এসব সোনা সীমান্তে আমাদের বিজিবি বা ভারতের বিএসএফের হাতে আটক হচ্ছে।

যেমন ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে একদিনে দুটি পৃথক ঘটনায় ৩ কোটি রুপি মূল্যের সোনা উদ্ধার করেছে বিএসএফ। গ্রেফতার করা হয়েছে এক ভারতীয় পাচারকারীকেও। একটি ঘটনায় বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের অধীন পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বানঘাট সীমান্ত ফাঁড়ি এলাকা থেকে বিভিন্ন আকৃতির ২৪টি সোনার বার জব্দ করা হয়।

অন্যদিকে, পেট্রাপোল চেক পোস্ট (আইসিপি) থেকে দুটি নলাকার আকৃতির সোনার পেস্ট উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আইসিপি পেট্রাপোল থেকে এক চোরাকারবারীকেও গ্রেফতার করেছে বিএসএফ। চোরাকারবারীরা ওই সোনা বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচারের চেষ্টা করছিল। জব্দকৃত সোনার মোট ওজন ৪৫৭১.০৪ গ্রাম এবং এর আনুমানিক মূল্য ৩ কোটি রুপি।

এর আগে ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তে ১.২৭ কোটি রুপি মূল্যের সোনা উদ্ধার করেছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী (বিএসএফ)। দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের অধীনে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বিএসএফ সদস্যরা পেট্রাপোল স্থল বন্দরে ট্রাকচেকিংয়ের সময় এই বিপুল পরিমাণ সোনার সন্ধান পায়। এ ঘটনায় আটক করা হয়েছে এক চোরাকারবারীকেও। তার বাড়ী ভারতে।

সম্প্রতি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দেড় কেজি সোনাসহ এক দম্পতিকে গ্রেফতার করেছে বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। সোমবার ভোরে এপিবিএন এবং এনএসআই’র যৌথ আভিজানিক দল বহুতল কার পার্কিং এলাকায় অভিযুক্তদের সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে। এ সময় ভোর ৪টা ৪০ মিনিটে বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন এবং এনএসআইর সদস্যরা তাদের গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা দীর্ঘ দিন দরে সোনা চোরাচালান করে আসছিলেন এবং সোনা চোরাচালান দলের সক্রিয় সদস্য।

পত্রপত্রিকার খবরে জানা গেছে সম্প্রতি হযরত শাহজালাল ও চট্টগ্রাম শাহ-আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যে সব চোরাচালান ধরা পড়ছে এর নেপথ্যে রয়েছে স্মাগলারদের অন্তর্দ্বন্দ্ব, নিরাপত্তা সংস্থার সদস্যদের আন্ত:বনিবনা ও তাদের সঙ্গে পাচারকারীদের বনিবনা না হওয়া। তবে যে পরিমাণ ধরা পড়ছে তার চেয়ে বহুগুণ বেশি পাচার হয়ে যাচ্ছে। আর চোরাচালানের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় বহনকারীরা অভিযুক্ত হলেও মূল হোতারা বরাবরই থেকে যাচ্ছে আড়ালে।

গত ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ৫ বছরে প্রায় ৮শ’ কেজি সোনা ধরা পড়লেও কোনো ‘গডফাদার’ ধরা পড়েনি। যে পরিমাণ ধরা পড়ে তা পাচারকৃত সোনার দশভাগের এক ভাগ মাত্র বলে পত্রপত্রিকায় উল্লেখ করা হয়।

আমরা মনে করি, চোরাচালান বন্ধ করতে হলে সমস্যার গভীরে যেতে হবে। মূল অপরাধী চক্রকে শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। অপরাধীদের যত ধরনের সিন্ডিকেট আছে, যে কোন মূল্যে সেগুলো গুঁড়িয়ে দিতে হবে। আমরা কোনমতেই চাই না, আমাদের প্রিয় স্বদেশ আন্তর্জাতিক অপরাধীচক্রের লীলাভূমিতে পরিণত হোক। আমরা কোনমতেই চাইনা, আমাদের প্রিয় স্বদেশ আন্তর্জাতিক অপরাধীচক্রের লীলাভূমিতে পরিণত হোক



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS