ভিডিও

পাঁচ কেজি সোনা উদ্ধার

প্রকাশিত: মে ২৬, ২০২৪, ১০:৫৫ রাত
আপডেট: মে ২৬, ২০২৪, ১০:৫৫ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

ভারতে সোনা পাচারের রুট হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে বাংলাদেশ। শাহজালাল সহ বাংলাদেশের তিন আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে প্রতি মাসেই বিপুল পরিমাণ সোনা ধরা পড়ে। মনে করা হয় এ সোনার সিংহভাগই ভারতে পাচারের জন্য আনা হয়।

বিমান পথে সে সোনা চোরাচালান হয়ে আসে তার বড় জোর এক দুই-শতাংশ ধরা পড়ে। দেখা যাচ্ছে এখন প্রায়ই সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাংলাদেশ থেকে যাওয়া প্রচুর পরিমাণে সোনা আটক করছে। বিমান বন্দর পার হয়ে এসব অবৈধ সোনা কীভাবে দেশের বিভিন্ন সীমান্ত রুট দিয়ে ভারতে পাচার করতে গিয়ে উদ্ধার হচ্ছে।

পত্র-পত্রিকার খবরে প্রকাশ, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে ৫ কোটি টাকা মূল্যমানের সোনার চালান আটক করেছে কাস্টমস গোয়েন্দার একটি টিম। আটক করা সোনার ওজন ৫.৩৩৬ কেজি। গত বৃহস্পবিার সকাল ৬টা ৫০ মিনিটে দুবাই থেকে আসা ফ্লাইট থেকে এসব সোনা জব্দ করা হয় বলে জানিয়েছে কাস্টমস গোয়েন্দা অধিদপ্তর।

এ সময় আটক করা হয়েছে দু’জনকে। তাদের সোপর্দ করা হয়েছে বিমান বন্দর থানায়। আমরা বিভিন্ন সময়ে পত্র-পত্রিকার সংবাদে দেখি বিমান বন্দর সহ বিভিন্ন সংস্থায় কর্মরত এক শ্রেণীর দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিকে ম্যানেজ করে চলছে এ কর্মকান্ড। মাঝে মাঝে কিছু কিছু চালান ধরা পড়লেও বেশির ভাগ চালান নিরাপদে পার হয়ে চলে যাচ্ছে সীমান্তের ওপারে প্রতিবেশি দেশ ভারতের সোনা বহনকারীদের দুএকজন ধরা পড়লেও আড়ালে থেকে যাচ্ছেন গডফাদাররা।

২০১৩ সালের এপ্রিলে ভারত সোনা আমদানিতে শুল্ক বাড়িয়ে দেওয়ার পর চোরাপথে সোনা আমদানি বেড়ে যায় হু হু করে। সোনা চোরাকারবারিদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে ৪ হাজার কিলোমিটার বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত। সোনা পাচারের সবচেয়ে নিরাপত্তা ও নির্ভরযোগ্য ট্রানজিট হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। আকাশ পথে আসা সোনা বাস ও সীমান্ত জেলাগুলো দিয়ে পাচার হচ্ছে।

ভারতে প্রতি বছর প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার কেজি সোনার চাহিদা রয়েছে। দৈনিক চাহিদা ৩ হাজার ৮৯৭ কেজি। অনুমিত হিসাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রতিদিন গড়ে ৫০০ কেজি সোনা পাচার হয়। সুসংঘবদ্ধ সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সোনা চোরাচালান হয়ে আসছে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ থেকে। অবৈধভাবে সোনা আমদানির পথ বন্ধ করতে ২০১৪ সালের জুলাইয়ে আমদানি শুল্ক ২০ গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তা পাচার রোধে কোনো অবদানই রাখতে পারেনি।

কারণ পাচারের ক্ষেত্রগুলোয় যারা দায়িত্বরত তাদের মধ্যে কোনো কোনো অসাধু কর্মকর্তার সঙ্গে চোরাচালানিদের সুসম্পর্ক অর্থাৎ লেনদেনের সম্পর্ক থাকায় অবাধে বিদেশ থেকে সোনা আসছে।

সোনা চোরাচালান বন্ধে দেশের বিমান বন্দরগুলোতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। বিভিন্ন সময়ে আটক  করা ব্যক্তিদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য এবং গোয়েন্দা সূত্রগুলো থেকে তথ্য নিয়ে পত্র-পত্রিকার খবরে বলা হয়, এই চোরাচালানের সঙ্গে ভারতের ৩০টি এবং বাংলাদেশের ৪০টি গ্রুপ জড়িত। সাধারণত সোনা চোরাচালানের অর্থ পরিশোধ করা হয় হুন্ডির মাধ্যমে।

আন্তর্জাতিক মাদক চোরাচালানের ট্রানজিট পয়েন্ট হিসেবেও বাংলাদেশ যথেষ্ট পরিচিতি লাভ করেছে। এই চোরাচালান গ্রুপগুলোয় যে মাদক চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত নয়, তা কে বলবে। আবার রাজনীতিবিদ ও প্রভাবশালী যেসব ব্যক্তি এই চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত, তাদের পক্ষে অবৈধ কিছু উপার্জনের জন্য যে কোনো ধরনের অপরাধকর্মে যুক্ত হওয়া অবাস্তব কিছু নয়।

এর সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরণ কোলকাতায় ভয়াবহভাবে খুন হওয়া ঝিনাইদহ’র সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারের উদাহরণ। দুই দেশের গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে পত্র-পত্রিকার খবরে জানা যাচ্ছে, সোনা চোরাচালান ও মাদক-ব্যবসায় দ্বন্দ্বের জেরে এমপি আনার খুন হয়ে থাকতে পারেন।

দ্বন্দ্ব মানে দুই পক্ষের অর্থের লেনদেন। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই বিমান বন্দরে চোরাচালানের যে মৃগয়া ক্ষেত্র গড়ে উঠেছে তা বন্ধের উদ্যোগ নিতে হবে। চোরাচালান রোধে নিতে হবে কঠোর ব্যবস্থা।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS