ভিডিও

কর্মস্থলে ফেরা নিরাপদ হোক

প্রকাশিত: জুন ১৯, ২০২৪, ১০:৫৬ রাত
আপডেট: জুন ২০, ২০২৪, ০১:১৫ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

ঈদ উদযাপনে যারা স্বজনদের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছেড়েছেন তাদের রাজধানীতে ফেরার পালা শুরু হয়েছে। প্রতি বছরের মতো এবারও কোটির ওপর মানুষ রাজধানী ছেড়েছেন। উৎসব পালন শেষে এবার তারা কর্মস্থলে ফিরে আসছেন।

শিকড়ের টানে বাড়ি ফেরার তাগিদ সবার ভেতরেই কেমন এক আকুলি বিকুলির তৈরি করে। আপনজনের সঙ্গে ঈদ করতে মানুষ যে কোনো কষ্ট সহ্য করতে রাজি থাকে। বাংলাদেশের মানুষের এই তাগিদ অন্তহীন যুগের পর যুগ ধরে চলছে এ তাগিদ। পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটি শেষে আবার ঢাকায় কর্মস্থলে ফেরার তাড়া। গতকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকামুখী মানুষের ভিড় বাড়ছে। নীরব, সুনসান ঢাকায় আবার ভিড় উপচে উঠছে। গতকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন টার্মিনালে ঢাকায় ফেরা মানুষের জটলা শুরু হয়েছে। একই চিত্র লঞ্চঘাট ও রেলস্টেশনেও। প্রতিটি জায়গায় ঢাকায় ফেরা মানুষের ভিড় বাড়ছে।

উত্তরবঙ্গ থেকে ফেরা যাত্রীরা কমলাপুর রেল স্টেশনে ফিরেছেন অনেকেই। ট্রেনের মতো বাস ও লঞ্চ টার্মিনালেও ঘরে ফেরা মানুষদের কর্মস্থলে ফিরতে দেখা গেছে। দক্ষিণাঞ্চল থেকে মানুষ ফিরতে শুরু করেছে। পদ্মা সেতু নির্মাণের পর লঞ্চের ওপর মানুষের চাপ কমছে। তবুও বরিশাল, পটুয়াখালী ভোলার লঞ্চে ভিড় আছেই। সদর ঘাটে সকালেই উপচেপড়া ভিড়। লঞ্চঘাটে ভেড়ার পর যাত্রীদের নিয়ে গন্তব্যে ছুটে চলেন সিএনজি চালকরা। এক সঙ্গে অনেক যাত্রী নামার কারণে ঘাটে অটোরিক্সা সংকটও দেখা যায়।

সেই সঙ্গে অটোরিকসা ভাড়াও বেশি। মহাখালী, গাবতলী বাস টার্মিনালেও দেখা গেছে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের ভিড় বাড়ছে। এখনও জ্যাম শুরু হয়নি। তবে ঈদের আগে ঘরমুখো উত্তরের মানুষদের যানজটে আটকে পড়তে হয়েছিল। টাঙ্গাইল থেকে বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু পর্যন্ত তেরো কিলোমিটার রাস্তা যানজটে ভরা ছিল। ফলে অনেকের তিন ঘন্টার যাত্রাপথ অতিক্রম করতে ৯-১০ ঘন্টা লেগেছে। যানজটের এই ভাবনা তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে সবাইকে। যদিও মহাসড়কগুলি ব্যাপক সংস্কারের পর মানুষের যাতায়াতের সুবিধা অনেক বেড়েছে। কিন্তু মহাসড়কের যে অংশে এখনও কাজ চলমান-সেখানে যানজট বাড়ছে। আবার ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় এই ভিড়ের মধ্যে বিকল হয়ে গেলে দীর্ঘযানজটের কারণ ঘটাচ্ছে।

সাধারণত, স্বজনদের সঙ্গে ঈদ কাটাতে কর্মস্থল ছাড়া শুরু হয় ঈদের ৮-১০ দিন আগে থেকে। অনেক ক্ষেত্রে পরিবার-পরিজন আগে আসে। চাকরিরত মানুষটি পরে আসে। ঈদ পালনের পর দুই সপ্তাহ ধরে চলে কর্মস্থলে ফেরার পালা। চাকরিজীবীরা ছুটি শেষে ফেরার চেষ্টা করলেও ব্যবসায়ী ও অন্য পেশাজীবীদের ঈদ অবকাশ কিছুটা দীর্ঘায়িত হয়। অনেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফিরে আসেন পরিবারের অন্য সদস্যদের গ্রামের বাড়িতে রেখে। তারা ফেরেন আলাদাভাবে দু-চারদিন কিংবা সপ্তাহ খানেক পরে। এ বছর ঈদ পরিবহণ ব্যবস্থার কিছুটা হলেও মুন্সিয়ানা দেখিয়েছে।

যানবাহনে বাড়তি যাত্রীর ভিড় থাকলেও ভোগান্তি তুলনামূলক বিচারে আগের বছরগুলোর চেয়ে কম হয়েছে। সবারই আশা তাদের কর্মস্থলে ফেরার পালাটা নির্বিঘ্ন হোক। আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে পারিবারিক বন্ধন বেশ শক্তিশালী। স্বজনদের সঙ্গে ঈদ পালনের রেওয়াজ চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। এ রেওয়াজ মানুষের সংবেদনশীলতার অংশ হয়েও দাঁড়িয়েছে। ফলে যারা কর্মস্থল থেকে স্বজনদের মাঝে গিয়েছিলেন, তারা যাতে নির্বিঘ্নে কর্মস্থলে ফিরতে পারেন এ ব্যাপারে সরকার তথা প্রশাসনকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে।

এবার ঈদ যাত্রায় সড়ক-মহাসড়কে তেমন কোনো বড় দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এটা নিশ্চিত আশার কথা যে রাস্তায় ফিটনেসবিহীন গাড়ির সংখ্যা কমানো গেছে। বিশেষ করে যানবাহন চালকরা দুর্ঘটনা এড়াতে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করবেন-এমনটিই কাম্য।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS