ভিডিও

বাজার সিন্ডিকেট

প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২৪, ১০:৫৯ রাত
আপডেট: জুন ৩০, ২০২৪, ০২:৩৪ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

নিত্য পণ্যের বাজার অনেক দিন হলোই নিয়ন্ত্রণহীন। স্বভাবতই বিপাকে পড়েছে সাধারণ মানুষ। আম জনতার কাছে সরকারের গ্রহণযোগ্যতা ক্ষুন্ন করছে এই নিয়ন্ত্রণহীন অবস্থা। অসৎ ব্যবসায়ীরা নৈতিকতার মাথা খেয়ে যেভাবে কথায় কথায় নিত্য পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে তা নিয়ন্ত্রণে তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। সরবরাহ সংকটের অজুহাতে এবার বাড়ানো হয়েছে কাঁচা মরিচের দাম।

খুচরা বাজারে এখন কাঁচা মরিচ বিক্রয় হচ্ছে প্রতিকেজি সর্বোচ্চ ৪০০ টাকায়। যা এক সপ্তাহ আগেও ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া পেয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা। কদিন আগেও ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দাম বেড়েছে আলু-আদা-রসুনেরও। আদা-রসুন বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ২৮০ টাকা দরে। ফলে নিত্য প্রয়োজনীয় এসব পণ্য কিনতে ক্রেতা সাধারণকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

গত বছরের জুলাইয়ে ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে কাঁচা মরিচের দাম কেজি প্রতি ৮০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। সে সময় দেশের কোনো কোনো জেলায় এক হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। ঈদের পর তা কমে ২০০ টাকায় নেমেছিল। এরপর ওই নিম্নমুখী দাম ছিল মাত্র অল্প সময়। আবারও দাম বেড়ে ৪০০ টাকায় ওঠে। ব্যবসায়ীদের তখন ভাষ্য ছিল, ভারত থেকে আমদানি কমে যাওয়া ও দেশে সরবরাহ অনেক কম হওয়াতেই মূলত এ পণ্যের দাম বেড়েছে।

ক্রেতারা বলছেন, পাশের দেশ থেকে হাজার হাজার মেট্রিক টন মরিচ আমদানি করলেও কোনো লাভ হবে না। যদি বাজারের সিন্ডিকেট সরকার দমন করতে না পারেন। অন্য দেশ থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি করলে দুয়েক দিন দাম কম থাকবে, আবার দাম বাড়বে।

বাজারের অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে সরকারকে। রাজধানী বাজারগুলো পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে মুরগি, ডিম, মাছ, মাংস, আদা, রসুন, আলু, কাঁচা মরিচ টমেটোসহ শাক-সবজির দাম আকাশ ছোঁয়া।

ব্যবসায়ীদের মুখে একই কথা সরবরাহ কম। ঈদের ছুটির ফলে কৃষকরা ক্ষেত থেকে সবজি তুলছেন না। ফলে দাম বাড়ছে। প্রায় সব সবজির দামই ৫-১০ টাকা বেড়েছে। বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮৫-১০০ টাকা কেজি পর্যন্ত, যা গত সপ্তাহের চেয়ে প্রায় ১০ টাকা বেশি।

ঝিঙার কেজি ৭০ টাকা, করলা ৮৫-৯০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫৫-৬০ টাকা, পটলের কেজি ৬০-৬৫  টাকা, কচুরমুখী ১০০-১১০ টাকা, কচুর লতি ৬৫-৭০ টাকা, পেঁপে ৫৫-৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ডিম ৫০-৬০ টাকা হালি, গরুর মাংস ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মুরগি দেশি ৭৫০-৮০০ টাকা কেজি ব্রয়লার ২০০ টাকা কেজি।

সোনালি মুরগি (পাকিস্তানি) বিক্রি হচ্ছে ৩২০-৩৫০ টাকা কেজি দরে। অবশ্য বগুড়ায় দেশি মুরগি ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ঈদের পর মাছের চাহিদা বেড়েছে। ফলে দামও কিছুটা বেশি। বাজারে এক থেকে দেড় কেজি ওজনের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজি। এর চেয়ে বড় রুই কিনতে হলে ৩৫০-৩৮০ টাকা গুনতে হবে ক্রেতাকে। ইলিশের দাম বাড়তিই রয়েছে।

৬০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম কেজি প্রতি ১৪০০ টাকা। এক কেজি বা তার বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৬০০-১৭০০ টাকা দরে। এ ছাড়া কাতলা মাছের কেজি ৩২০-৩৩০ টাকা, পাঙ্গাস ২০০ টাকা, পাবদা ৪০০ টাকা, চিংড়ি ৬০০-৮০০ টাকা, বোয়াল ১০০০-১২০০টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

চালের বাজারে নাজির শাইল বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০-৮৫ টাকা, মিনিকেট চাল প্রকারভেদে ৭৫-৭৮ টাকা, আটাশ ধানের চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬২ টাকা দরে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের মোটা চাল প্রকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫২-৬০ টাকায়।

ছয় দশকেরও বেশি আগের আইনে তালিকাভুক্ত পণ্যগুলোতে কোনো ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফার জন্য যদি কারসাজি করে বা মজুত রেখে সংকট তৈরি করে তবে জেল জরিমানাসহ আইনি পদক্ষেপ নিতে পারে সরকার। তবে বহু আগের ওই আইনটিতে যেসব পণ্যকে অত্যাবশ্যকীয় বা অতি প্রয়োজনীয় বলে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে তার গ্রহণযোগ্যতা এখন আর নেই।

এ কারণে আইনটি সংশোধন করে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের নতুন তালিকা অন্তর্ভূক্ত করা হচ্ছে-যাতে সরকার সংশ্লিষ্ট পণ্যের সিন্ডিকেট প্রতিরোধ করতে পারে। আমাদের বিশ্বাস, সরকার যদি আন্তরিক হয়, তাহলে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখা অসম্ভব নয়।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS