ভিডিও

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের আন্দোলন

প্রকাশিত: জুলাই ০৫, ২০২৪, ০৬:৩০ বিকাল
আপডেট: জুলাই ০৫, ২০২৪, ০৬:৩০ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

সর্বজনীন পেনশন স্কিম ‘প্রত্যয়’ নিয়ে জারি করা প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু করেছেন দেশের ৩৫ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী। সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্ম বিরতি শুরু করেন তারা। ফলে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা কার্যক্রম।

এর আগে রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবন ফটকে সংবাদ সম্মেলনে কর্মবিরতির এ ঘোষণা দেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূইয়া। পরে দেশের ৩৫ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ একে একে কর্মবিরতির ঘোষণা দেন। এতদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা কর্মবিরতির আওতার বাইরে থাকলেও সোমবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস পরীক্ষাসহ দাপ্তরিক সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবেন শিক্ষকরা।

অর্থমন্ত্রণালয়ের জারি করা সর্বজনীন পেনশন ‘প্রত্যয় স্কিম’ স্বায়ত্বশাসিত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থায় যোগ দেওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সর্বজনীন পেনশনের আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছে। গত বছরের ১৭ আগস্টে চালু হওয়া সর্বজনীন ব্যবস্থাপনার আওতায় চারটি পৃথক স্কিম চালু রয়েছে।

এর মধ্যে ‘প্রবাস’ স্কিমটি প্রবাসীদের জন্য। ‘প্রগতি’ স্কিম চালু করা হয়েছে বেসরকারি চাকরিজীবীদের জন্য। আনুষ্ঠানিক খাত অর্থাৎ স্বকর্মে নিয়োজিত নাগরিকদের জন্য রয়েছে ‘সুরক্ষা’। আর ‘সমতা’ স্কিম নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য। সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনার আওতায় ‘প্রত্যয়’ নামে একটি স্কিম অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।

এ স্কিমের আওতায় রাষ্ট্রায়ত্ত, স্বায়ত্তশাসিত এবং সমজাতীয় প্রতিষ্ঠানের নতুন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পেনশন পাবেন। এ ক্ষেত্রে এসব প্রতিষ্ঠানের বিদ্যমান পেনশন ব্যবস্থা বিলুপ্ত হয়ে যাবে। প্রত্যয় স্কিম সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহারের পাশাপাশি সুপার গ্রেডে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্তর্ভূক্তি এবং শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন স্কেল প্রবর্তনের দাবি মেনে নেওয়ার ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা থাকবে বলে জানান শিক্ষক নেতৃবৃন্দ।

স্মর্তব্য, অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে, যে সব শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী চলতি বছরের ১ জুলাইয়ের পর থেকে যোগ দেবেন তাদের জন্য সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয় স্কিম’ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ‘প্রত্যয়’ স্কিমকে বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়ে এটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে সোমবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতি শুরু করলে বিশ্ববিদ্যালয় কার্যত অচল হয়ে পড়েছে।

ক্লাস পরীক্ষা ও দাপ্তরিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। রোববার এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ পরীক্ষাগুলো স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর।

আন্দোলনের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সহসভাপতি অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, একটি স্বার্থান্বেষী মহল সর্বজনীন পেনশন স্কিমের মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে বিতর্কিত ও অজনপ্রিয় করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে।

তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে সরকারের দূরত্ব তৈরি করতে চায়। শিক্ষকদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য যে প্রত্যয় স্কিম আরোপ করা হয়েছে, তা তাদের পারিবারিক সুরক্ষা নষ্ট করছে, এর ফলে মেধাবীরা আর শিক্ষকতা পেশায় আগ্রহী হবেন না। তাই সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাতিলের দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন তারা।

অবস্থান কর্মসূচিতে ঢাকা শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘এ আন্দোলন শিক্ষার্থীদের জন্যই। ভবিষ্যতে তারাই শিক্ষক হবেন। মূলত শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের জন্যই এ আন্দোলন করছে। আর প্রত্যয় স্কিমের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশের শিক্ষকদেরই মূলত জিম্মি করা হচ্ছে।’ উন্নত বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বেতন-ভাতার উদাহরণ টেনে শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেন, ‘উন্নত দেশের কথা বাদই দিলাম, যেহেতু সবকিছুই বাদ দিচ্ছি।

এই উপমহাদেশের দিকে তাকান, ভারত, শ্রীলংকা এমনকি পাকিস্তানেও শিক্ষকদের বেতন অনেক বেশি। যাদের বিরুদ্ধে আমরা বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন করেছিলাম, তাদের দেশেও শিক্ষকদের বেতন-ভাতা অনেক বেশি। নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, শিক্ষকরা তাদের স্বার্থহানির যে কোনো পদক্ষেপের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন এতে আপত্তির কিছু নেই।

আমরা মনে করি, সরকার শিক্ষকদের সঙ্গে বসে উদ্ভূত সংকট নিরসনে কার্যকর আলোচনা এবং এর সমাধান বের করবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এর দ্রুত সমাধান কামনা।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS