ভিডিও

বজ্রপাত অপঘাত হিসেবে আবির্ভূত

প্রকাশিত: জুলাই ০৬, ২০২৪, ০৬:৩৫ বিকাল
আপডেট: জুলাই ০৬, ২০২৪, ০৬:৩৫ বিকাল
আমাদেরকে ফলো করুন

রাঙামাটির লংগদু উপজেলায় বজ্রপাতে নারীসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার বিকেল চারটার দিকে উপজেলার মিনাবাজার এলাকায় কাপ্তাই হ্রদে ইঞ্জিন চালিত বোটে এই ঘটনা ঘটে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে প্রকাশ, রাঙামাটির লংগদু উপজেলার মাইনি মুখ বাজার থেকে একটি ইঞ্জিন চালিত কান্ট্রিবোট চালকসহ পাঁচজন যাত্রী নিয়ে খোকশাপাড়া বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।

বোটটি ওই উপজেলার মিনাবাজার এলাকায় পৌছলে ঝড়ের মুখে পড়ে। এ সময় তীব্র ঝড় হওয়ার সাথে বজ্রপাত শুরু হয়। বজ্রপাতে এক নারী যাত্রীসহ মারা যান পাঁচ যাত্রী। বজ্রপাতে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। সৃষ্ট পরিস্থিতি এমন যেন এটি এক ধরনের দুর্যোগ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। বজ্রপাতে একের পর এক ঝরছে প্রাণ-এটা কতটা ভয়ঙ্কর তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

সম্প্রতি পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, দেশে বজ্রপাতে গত ১ এপ্রিল থেকে ৮মে পর্যন্ত ৩৮ দিনেই ৭৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর এদের মধ্যে এপ্রিল মাসেই বজ্রপাতে মারা গেছেন ৩১ জন। যাদের ২০ জন পুরুষ ও ১১ জন নারী। এ ছাড়া মে মাসের আট দিনে বজ্রপাতে মারা গেছেন ৪৩ জন। এদের মধ্যে ৩৪ জন পুরুষ ও ৯ জন নারী। অন্যদিকে, গত ৩৮ দিনে বজ্রপাতে মৃতদের মধ্যে ৩৫ জনই কৃষক।

বাংলাদেশ এখন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বজ্রপাতপ্রবণ এলাকা। বজ্রপাতে মৃত্যুর সংখ্যা বাংলাদেশেই সবচেয়ে বেশি। প্রতি বছর সারা বিশ্বে যত মানুষ বজ্রপাতে তার প্রতি চারজনের একজন বাংলাদেশের। প্রতি বছর মার্চ থেকে শুরু হয় বজ্রপাত।

অনুমান করা হয়, আবহাওয়ার অনভিপ্রেত পরিবর্তন বায়ু মন্ডলের উষ্ণতা যেমন বাড়াচ্ছে তেমনি বাড়িয়ে চলেছে টর্নেডো, ঝড় ও প্লাবনের মতো দুর্যোগ। বজ্রপাত বৃদ্ধির পেছনেও তা অনেকাংশে দায়ী বলে মনে করা হয়। গাছপালা কমে যাওয়ায় দেশের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা এক থেকে দেড় সেলসিয়াস বেড়েছে।

বাতাসে বাড়ছে জলীয় বাষ্পের পরিমাণও। দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর থেকে ভেসে আসা আর্দ্র বায়ু আর উত্তরে হিমালয় থেকে আসা শুষ্ক বায়ুর মিলনে সৃষ্টি হচ্ছে বজ্রপাত। সাধারণত মে মাসেই বজ্রপাত বেশি হয়। আমরা বলতে চাই, বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, বজ্রপাতে মৃত্যু রোধে অবহেলা নয়, সবার মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর বিকল্প নেই। এ ছাড়া বৃষ্টির সময় যতটা সম্ভব ঘরে অবস্থান করতে হবে।

একই সঙ্গে বেশি করে তালগাছ রোপণের পরামর্শের বিষয়টিও বিভিন্ন সময় উঠে এসেছে। এই  বিষয়গুলোকে সামনে রেখে সংশ্লিষ্টদের তৎপর হওয়া জরুরি। এ ছাড়া জনসচেতনতা বাড়াতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণেরও বিকল্প নেই।

বজ্রপাতে বিপুল সংখ্যক গাছপালা ও গবাদি পশু মারা যায়। এ ছাড়া মৃত্যুর চেয়ে বেশি মানুষ আহত হয়। এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রকৃতিকে সাজানো দরকার। যেমন উঁচু উঁচু গাছ দিয়ে প্রকৃতি যেন ভরে ওঠে- সে ব্যবস্থা করা। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে বাংলাদেশে দশমিক ৭৪ শতাংশ তাপমাত্রা বেড়েছে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্যই বাড়ছে বজ্রপাত। বাংলাদেশে বজ্রপাতকে জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা করা হয়েছে। বজ্রপাতপ্রবণ এলাকায় এক কোটি তালগাছ লাগিয়ে ঠেকানোর পরিকল্পনা নেওয়া হলেও তা কার্যকর হয়নি। দুর্যোগকে এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই- কিন্তু যথাযথ উদ্যোগ নিলে ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS