ভিডিও

কোটা বাতিলের আন্দোলন

প্রকাশিত: জুলাই ০৭, ২০২৪, ১০:৫২ রাত
আপডেট: জুলাই ০৭, ২০২৪, ১০:৫২ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

সরকারি চাকরিতে কোটা নিয়ে ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে রবিবার থেকে সারা দেশে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। শনিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় শাহবাগ মোড়ে অবরোধ শেষে এই ঘোষণা দেন কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, রোববার বিকেল ৩টা থেকে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হল। শুধু শাহবাগ মোড় নয়, শাহবাগ ও ঢাকা শহরের সায়েন্স ল্যাব, চানখাঁর পুল, নীলক্ষেত, মতিঝিলসহ প্রতিটি পয়েন্টে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা নেমে এসে কর্মসূচি সফল করবেন। ঢাকার বাইরের জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক অবরোধ করবেন।

উল্লেখ্য, ঢাকার বাইরের জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক অবরোধের কর্মসূচি দিয়েছিলেন এ কর্মসূচির আওতায়। কোটা সংস্কার ও ২০১৮ সালের মেধাভিত্তিক নিয়োগের সরকারি পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে রোববার বিকেল ৩টা থেকে সারাদেশে গুরুত্বপূর্ণ মোড় ব্লক করার ঘোষণা দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। গত শনিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে শাহবাগ মোড় অবরোধকালে আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান এই ঘোষণা দেন।

অবরোধের সমাপনী বক্তব্যে নাহিদ হাসান বলেন, আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, আপনারা আমাদের বাধা দেবেন না। বাধা দিলে তা ভালো হবে না। আমাদের চাকরি না থাকলে আপনাদের চাকরিও থাকবে না। আমরা অভিভাবকদের প্রতি আহবান জানাই, এই আন্দোলন শুধু আমাদের আন্দোলন নয়, এই আন্দোলন আপনাদেরও আন্দোলন। আপনাদের সন্তান চাকরি না পেলে আপনাদেরও ভোগান্তি হবে। তাই আমাদের আন্দোলনে আপনারা সহযোগিতা করুন।

সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে ২০১৮ সালে জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উত্তাল সারা দেশ। ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর, জগন্নাথ, কুমিল্লা, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল, মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধসহ নানা কর্মসূচি পালন করছেন।

পত্র-পত্রিকার খবরে প্রকাশ, ঢাবির প্রতিটি হল থেকেই শত শত শিক্ষার্থী কোটার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এসে জড়ো হন। সেখান থেকে বিকেলের দিকে মিছিল নিয়ে কলাভবন, ভিসি চত্বর টিএসসি, দোয়েল চত্বর, হাইকোর্ট ও মৎস্য ভবন এলাকা হয়ে শাহবাগ মোড়ে এসে অবস্থান শুরু করলে পুরো এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয় শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের পাশাপাশি আরও কিছু দাবিতে আন্দোলন করছেন।

সেগুলো হলো, পরবর্তী সময়ে সরকার কোটা ব্যবস্থা নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে চাইলে ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া, সংবিধান অনুযায়ী অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা, চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করার সুযোগ বন্ধ করা, কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া। শিক্ষার্থীদের দাবি, কোটা বাতিল মিমাংসিত ইস্যু।

নতুন করে কোটা ফিরিয়ে আনা ছাত্র সমাজের সাথে তামাশা। কোনাভাবেই বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি মেনে নেয়া হবে না। পত্র-পত্রিকার খবরে প্রকাশ, নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। গত রোববার সব বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন তারা।

এ বিষয়ে কারও দ্বিমত নেই যে, একটা সময় পর্যন্ত জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধা ও নারীসহ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য চাকরিতে কোটা পদ্ধতির প্রয়োজন ছিল। তবে সময়ের পরিক্রমায় পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটেছে। বিশ্বের সর্বত্র এখন মেধাকে দেওয়া হয় সর্বাধিক গুরুত্ব। আমাদের দেশেও প্রশাসন সহ সরকারি কর্মকান্ডে দক্ষতা বাড়াতে মেধার প্রতি গুরুত্ব বাড়ানোর বিকল্প নেই।

চাকরি ক্ষেত্রে বৈষম্যের অবসানেও এর প্রয়োজন। সংবিধানের ১৯ (১), ২৯ (১) ও ২৯ (২) অনুচ্ছেদে চাকরির ক্ষেত্রে সব নাগরিকের সমান সুযোগের কথা বলা হয়েছে। আবার এটিও সত্য, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিয়ে আসার জন্য সংবিধানে কোটার বিষয়ে বলা হয়েছে। তাই, সরকারের উচিত শিক্ষার্থীদের দাবি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করা।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS