ভিডিও

পাহাড়ে খুনোখুনি

প্রকাশিত: আগস্ট ০৪, ২০২৪, ১১:১৬ রাত
আপডেট: আগস্ট ০৪, ২০২৪, ১১:১৬ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার করাখালী ইউনিয়নের শান্তি বিকাশ কাবারিপাড়ায় ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) সংগঠক জুনেল চাকমাকে (৩১) গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। গত শনিবার ভোরে বাড়িতে ঢুকে তাকে গুলি করা হয়। জুনেল দীঘিনালার আমতলী গ্রামের তপ্ত কাঞ্চন চাকমার ছেলে। স্থানীয়রা জানান, জুনেল ইউপিডিএফ প্রসিত গ্রুপের তারবুনিয়া এলাকার সংগঠক ছিলেন।  সম্প্রতি তিনি গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম ছেড়ে ইউপিডিএফে যুক্ত হন। হত্যাকান্ডের সময় জুনেল কাঙাবীমা ছড়ায় ললিত চাকমার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন।

পত্র-পত্রিকার প্রকাশিত খবরে জানা যায়, পার্বত্য তিন জেলায় কয়েক হাজার বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে লাখ লাখ মানুষের জীবন। জনসংহতি সমিতি (জেএসএস), ইউপিডিএফ এবং এ দুই সংগঠন থেকে বেরিয়ে এসে নতুন নামে আত্মপ্রকাশকারী সন্ত্রাসী সংগঠনের সন্ত্রাসী সদস্যরা পাহাড়ি-বাঙালি নির্বিশেষে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী শান্তি প্রিয় সব মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে আনতে সরকার বিদ্রোহী তৎপরতায় লিপ্ত জেএসএসের সঙ্গে দীর্ঘ আলাপ-আলোচনার পর শান্তি চুক্তিতে উপনীত হয়।

পার্বত্য এলাকায় বসবাসকারী মানুষের জীবন-মান উন্নয়নে সরকারের পক্ষ থেকে গত দুই দশকে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। কিন্তু জেএসএস’র একটি অংশ শান্তি চুক্তির বিরোধিতা করে শান্তি-শৃঙ্খলা বিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত হয়ে পড়ায় পাহাড়ে শান্তি স্থাপন বিঘ্নিত করছে। শুরুতে জেএসএস ও ইউপিডিএফ’র পরস্পর বিরোধিতার পাতানো খেলায় লিপ্ত হলেও তারা কিছুদিন হলো তারা একে অন্যের হরিহর আত্ম হিসেবে অবস্থান করছে। এ দুটি দল মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত। তাদের অস্ত্র আসে ভারতের মিজোরাম হয়ে মিয়ানমার থেকে।

পাহাড়ে যেভাবে রাষ্ট্র বিরোধী অপতৎপরতা চলছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। গত এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে এই সন্ত্রাসীরা রুমা উপজেলায় সোনালী ব্যাংকের ভল্টের তালা ভেঙে প্রায় দেড় কোটি টাকা লুট করেছে বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)। এ সময় বাধা দেওয়ায় পুলিশ, আনসার বাহিনীর সদস্যদের মারধর করে ১৪টি অস্ত্র, মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় তারা। শুধু তাই নয়, পর দিন থানচি উপজেলা শহরের সোনালি ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের শাখায় ডাকাতি করে। এসব ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা নিছক অপরাধই নয়।

এ ধরনের তৎপরতা পাহাড়ে শান্তি ও দেশের সার্বভৌমত্বের জন্যও হুমকি স্বরূপ। উল্লেখ্য, ২০২২ সালের এপ্রিলে কেএনএফ বান্দরবানে আত্মপ্রকাশ করে। এরা দেশদ্রোহী বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন, বিদেশি মদদপুষ্ট হয়ে এরা পার্বত্যাঞ্চলকে বিচ্ছিন্ন করে বিদেশি নীলনকশার রূপরেখা বাস্তবায়ন করতে চায়। শান্তি চুক্তির সুফল গিলে খাচ্ছে পাহাড়ি সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর পারস্পরিক সংঘাতের ঘটনা। এরা মূলত চাঁদাবাজি, অপহরণ, এলাকায় আধিপত্যের লড়াইয়ে জড়িত। পার্বত্য চট্টগ্রামের সাধারণ পাহাড়ি ও বাঙালি অধিবাসীরা তাদের কাছে জিম্মি।

পর্যটন ক্ষেত্রে পার্বত্য চট্টগ্রামের সম্ভাবনা অসীম। এ সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগানো সম্ভব হলে ওই এলাকার অধিবাসীদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে। এ লক্ষ্য সামনে রেখে পার্বত্য এলাকার আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ বিশেষত সশস্ত্র তৎপরতায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ এবং ইতোপূর্বে প্রত্যাহারকৃত নিরাপত্তা চৌকিগুলো পুন:স্থাপন করতে হবে জনগণের স্বার্থে।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS