ভিডিও

মুসলিম দেশগুলোতে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে কোক-পেপসি 

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ০৫, ২০২৪, ০৫:৫৭ বিকাল
আপডেট: সেপ্টেম্বর ০৬, ২০২৪, ০১:০০ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

মিশর থেকে পাকিস্তানসহ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে কোকা-কোলা এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠান পেপসিকো তাদের কোমল পানীয়ের চাহিদা তৈরি করতে কয়েক দশক ধরে কয়েক মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে।

কিন্তু বর্তমানে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে বর্তমানে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে প্রতিষ্ঠান দুটি। গাজা যুদ্ধের বিষয়ে স্থানীয় কোমল পানীয়গুলোর কাছে ব্যবসা হারাতে বসেছে এই দুই কোম্পানি।

বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স। প্রতিবেদনে বলা হয়, গাজা-ইসরায়েল যুদ্ধের কারণে আমেরিকার পণ্য হিসেবে ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ ব্র্যান্ডগুলিকে বয়কটের কারণে এবং স্থানীয় লোকাল কোমল পানীয়ের বিক্রি বৃদ্ধিতে মুসলিম দেশগুলোতে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি এই প্রতিষ্ঠান দুটি।


রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, মিসরে চলতি বছর তাদের লোকাল কোমল পানীয় ব্র্যান্ড ভিসেভেন মধ্যপ্রাচ্য এবং আরও কিছু অঞ্চলে গত বছরের তুলনায় তিনগুণ বেশি ব্যবসা করেছে। যেখানে ব্যবসা কমে গেছে কোকা কোলার।


এদিকে ইসরায়েলে এই দুই কোমল পানীয়ের প্রতিষ্ঠান অর্থায়ন করছে কিনা এমন সমালোচনার মধ্যেই বাংলাদেশে একটি বিজ্ঞাপন তৈরি করে ক্ষোভের মুখে পরে কোক। এর প্রভাব পড়ে বাজারেও। যার কারণে বিজ্ঞাপনটি তুলে নিতে বাধ্য হয় প্রতিষ্ঠানটি। যার কারণে বাংলাদেশেও লোকাল কোমল পানীয়ের চাহিদা বেড়েছে।

রয়টার্স বলছে, গত বছরে গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরুর পর থেকে মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে পেপসিরও দ্রুত বিক্রি কমেছে।

পাকিস্তানের কর্পোরেট এক্সিকিউটিভ সানবল হাসান এপ্রিল মাসে করাচিতে তার বিয়ের অনুষ্ঠানের মেন্যু থেকে কোক এবং পেপসিকে বাদ রেখেছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে, তিনি অনুভব করতে চান না যে তার অর্থ ইসরায়েলের কট্টর মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের কর খাতে পৌঁছেছে।

পরিবর্তে, তিনি তার বিয়েতে আগত অতিথিদের পাকিস্তানি ব্র্যান্ড কোলা নেক্সট পরিবেশন করেছিলেন।

রয়টার্স বলছে, অবশ্য এমন ঘটনা একটা নয়। মুসলিম দেশগুলোর অনেকে অংশ নিয়েছেন কোক–পেপসি বয়কটের আন্দোলনে। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, সবমিলিয়ে কোক–পেপসি কী পরিমাণ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে তার হিসাব করা কঠিন। পশ্চিমা পানীয় ব্র্যান্ডগুলোর ব্যবসা বছরের প্রথমার্ধে ৭ শতাংশ কমেছে।

ভোক্তাদের বয়কট প্রথা ১৮ শতকের ব্রিটেনে দাসপ্রথা বিরোধী প্রতিবাদ থেকে এসেছে। এই প্রতিবাদটি ২০ শতকে দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল। এবার ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে এই বয়কটের আন্দোলন।

কোকা-কোলা এবং পেপসিকো বয়কটকারীদের অনেকেই বলছেন, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা এবং ইসরায়েলের প্রতি কয়েক দশক ধরে আমেরিকার সমর্থনের প্রতিবাদে এ পদক্ষেপ নিয়েছেন তারা।

পেপসিকোর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) র‌্যামন লাগুয়ার্তা বলেছেন, ‘কিছু ভোক্তা রাজনৈতিক ধারণার কারণে পণ্য কেনার ক্ষেত্রে বিকল্প সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। লেবানন, পাকিস্তান এবং মিসরের মতো দেশে এর প্রভাব পড়েছে। সময়ের সাথে সাথে আমরা এ ব্যাপারটা ঠিক করে ফেলব।’

কোকা-কোলা এইচবিসি–এর তথ্য অনুসারে, ২৮ জুন শেষ হওয়া ছয় মাসের হিসাবে মিসরে কোকের বিক্রি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। অথচ গত বছরের এই সময়ের হিসাবে বিক্রি বেড়েছিল।

রয়টার্সের প্রশ্নের জবাবে, পেপসিকো জানিয়েছে যে, তাদের সংস্থা ব্র্যান্ডগুলোর কোনওটিই কোন সংঘাতে সরকার বা সামরিক বাহিনীর সাথে যুক্ত নয়। অর্থাৎ ইসরায়েলের সাথে যুক্ত নয় তাঁরা।

অন্যদিকে রয়টার্সের প্রশ্নের জবাবে কোকা-কোলা বলেছে যে তারা ইসরায়েল বা কোনো দেশে সামরিক অভিযানে অর্থায়ন করে না।

 



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS