ভিডিও

'সবপাই'র মাধ্যমে ৮ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি করেন রহিমা

প্রকাশিত: মার্চ ০৮, ২০২৪, ০৩:৫৮ দুপুর
আপডেট: মার্চ ০৯, ২০২৪, ১১:৫৬ দুপুর
আমাদেরকে ফলো করুন

সাজেদুর আবেদীন শান্ত ঃ রহিমা বিলকিস, থাকেন রাজশাহী। ছয় ভাই-বোনের মধ্য তিনি পঞ্চম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন বিয়ে হয় তার। এরপর শুরু হয় সংগ্রামী জীবন। পড়াশোনা, স্বামী, সংসার সামলিয়ে হয়ে যান একজন সফল উদ্যোক্তা। 

উদ্যোক্তা জীবনের শুরুর গল্প শুনতে চাইলে রহিমা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং এন্ড ইন্সুরেন্স ডিপার্টমেন্টে ভর্তি হই। তৃতীয় বর্ষে থাকাকালীন বিয়ে হয় এবং চতুর্থ বর্ষের ফাইনালের আগে আমার প্রথম সন্তান হয়। সন্তান হওয়ার পরপরই বেশ বড় একটা ধাক্কা পাই। খুবই অসুস্থ ছিল আমার সন্তান। এজন্য পড়াশোনা শেষ করে চাকরির কথা আমার মাথায় নিয়ে আসেনি। সবসময় চেয়েছি নিজে কিছু একটা করার’। 

তিনি আরও বলেন, ‘স্বামী, সংসার, সন্তান এভাবেই চলছিলো সব। এর মধ্যেই ২০১৯ সালে আমি দ্বিতীয় সন্তানের মা হই এবং ২০২০ সালের মে মাসে আমার প্রথম সন্তান মারা যায়। তারপর আমি পুরোপুরি প্রায় ভেঙে পরি। কি করবো, বুঝে উঠতে পারিনা। একাকিত্ব ও সন্তান হারানোর বেদনা হৃদয়ে নাড়া দেয়। এরপর বেশ একটা সময় কেটে যায়। ভাবতে থাকি কি করা যায়। পরে ফেসবুকের একটা গ্রুপ দেখে আমার উদ্যোক্তা হওয়ার আগ্রহ জাগে। ভাবি একাকিত্ব কাটাতে কিছু একটা করা দরকার। আর এভাবেই হয়ে যাই উদ্যোক্তা’।

রহিমা আরও জানান, প্রথম দিকে তিনি কিছ ভেবে পাচ্ছিলেন না যে কি দিয়ে শুরু করবে। পড়ে মাথায় আসে তার বাবা একজন কৃষক ছিলেন তাই কৃষি পণ্য নিয়েই কাজ শুরু করি। যে কথা সেই কাজ। ফেসবুকে ‘সবপাই’ অনলাইন পেজ খুলে শুরু করে দেন পণ্য বিক্রি। পরে তিনি sobpai. com  নামে একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইটও খোলেন।

প্রথম দিকে তেমন সাড়া পাচ্ছিলেন না। একটানা লেগে থাকতে হয়েছে তার। লেগে থাকতে থাকতেই একসময় সাফল্যের দেখা পান। এক বছর পর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তার। এপর্যন্ত অনলাইনের মাধ্যমে তিনি প্রায় আট লাখ টাকার বেশি পণ্য বিক্রি করেছেন। এখন রহিমার অনলাইনের মাধ্যমে মাসে পন্য বিক্রি করে থাকেন ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকার।

রহিমার পণ্যগুলোর মধ্য অন্যতম হলো তাদের বাগানের সিজেনাল ফল আম ও লিচু। এগুলোতেই নাকি ভালো সারা পায় রহিমা। তবে এসবের পাশাপাশি যবের ছাতু, আখের গুড়, কুমড়ো বড়ি, খেজুরের গুড়, ডাল, মধু, সরিষার তেল, ঘি, আতপ চাল, চালের গুঁড়া ইত্যাদিও বিক্রি করে থাকেন। এগুলো তিনি কুরিয়ারের মাধ্যমে সারাদেশে পাঠান। 

রহিমা জানান, প্রথমে উদ্যোক্তা জীবনে কাউকে পাশে পেলেও পরে পরিবার পাশে এসে দাঁড়ায় তার। বিশেষ করে স্বামী, মা-বাবা, ভাই-বোন অনেক অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। রহিমা জানান তাদের অনুপ্রেরণা না থাকলে এতোদূর আসা সম্ভব হতো না তার।
রহিমার ভবিষৎ ইচ্ছা, তার সবপাই এক সময় একটা ব্রান্ডে রুপান্তার হবে। সারা বাংলাদেশের মানুষ এটাকে এক নামে চিনবে। পাশাপাশি সবপাই নামে একটা শো-রুম দেওয়া এবং এর মাধ্যমে মানুষের কর্মসংস্থানের একটা ব্যবস্থা করা।

 



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS