ভিডিও

অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে বগুড়ায় ডিমের হালি ৫৫ টাকা

সিন্ডিকেটই দায়ী

প্রকাশিত: অক্টোবর ০৮, ২০২৪, ০৮:৩১ রাত
আপডেট: অক্টোবর ০৮, ২০২৪, ১০:১১ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

স্টাফ রিপোর্টার : আবারও অস্থির বগুড়ার ডিমের বাজার। সরবরাহ সংকটের অজুহাতে নিম্ন-মধ্য আয়ের মানুষের পাতে সহজে আমিষের যোগান দেওয়া পণ্যটির দাম দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে। দাম বাড়তে বাড়তে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে বর্তমানে তা ৫৫ টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি ডিমের দাম পড়ছে ১৩ টাকা ৭৫ পয়সা, আর সরকার খুচরা পর্যায়ে প্রতি পিস ডিম ১১ টাকা ৮৭ পয়সা নির্ধারণ করেছে।

দাম বাড়ার কারণ হিসেবে একে অপরকে দুষছেন ক্ষুদ্র খামারি, কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানসহ বড় বড় কারবারিরা। মূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার দাম বেঁধে দিলেও বাজারে সে দামে ডিম মিলছে না। ফলে ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণে আজ মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) চার কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়।

জানা গেছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি ও খুচরাতে ডিমের হালিতে বেড়েছে ৭ থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত। ডিম ব্যবসায়ীরা বলছেন, কর্পোরেট ব্যবসায়ীদের বেঁধে দেওয়া দামের কারণেই ডিমের দাম বাড়ে। বগুড়ায় কাজী ফার্ম, সিপি, নারিশসহ বেশ কয়েকটি কোম্পানি ও স্থানীয় খামারি বিক্রেতাদের কাছে ডিম সরবরাহ করে। এর মধ্যে অন্যতম কাজী ফার্ম। তারাই মোবাইল ম্যাসেজের মাধ্যমে ডিমের দাম নির্ধারণ করে দেয়। তাদের বেঁধে দেওয়া দামের বাইরে ডিম বেচাকেনার কোন সুযোগ নেই।

অপরদিকে ভোক্তারা, ডিমের বাজার দীর্ঘদিন ধরে বাড়তি হলেও তা নিয়ন্ত্রণে সরকারের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ না করাকে দায়ি করছেন।

আজ মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) বগুড়ার বিভিন্ন বাজারে প্রতি হালি ডিম ৫৪ টাকা এবং পাড়া-মহল্লার দোকানগুলোতে তা ৫৫ থেকে ৫৬ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়।

বগুড়া জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্য বলছে, জেলায় ডিম উৎপাদন হয় ২২ লাখের বেশি। বগুড়ার সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তার অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় প্রতিদিন ডিমের চাহিদা প্রায় ৪ লাখ। চাহিদার তুলনায় জেলায় ১৮ লাখের বেশি ডিম উদ্বৃত্ত থাকার কথা। ডিমের এত উৎপাদনের পরেও দাম নিয়ে সিন্ডিকেটে করার অভিযোগ করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে বগুড়ার প্রান্তিক খামারিরা বলছেন, সব খরচ বাদ দিয়ে বর্তমানে একটা ডিম উৎপাদনে ১০ টাকার মতো খরচ হয়। ধাপে ধাপে সব ধরনের মুরগির খাবার, ওষুধসহ খামারের উপকরণের দাম বেড়েছে। কিন্তু ডিমের বাজার যেভাবে ওঠানামা করে এবং নিয়ন্ত্রণ যাদের হাতে, তাতে লোকসান গুণতে গুণতে খামার বন্ধ করা ছাড়া কোন উপায় থাকবে না।

বগুড়ার সিনিয়র কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মমতা হক বলেন, বগুড়ার বাজারে ডিমের বড় যোগানদাতা কাজী গ্রুপ। তাদের ডিমের উৎপাদন কমে যাওয়ায় বাজারে কিছুটা অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। আর এই সুযোগে সিপি, ভিআইপিসহ অন্যান্য কোম্পানিগুলো উত্তারঞ্চলের অন্যান্য জেলা থেকে ডিম এনে বাজারে বেশি দামে বিক্রি করছে।

এই কর্মকর্তা জানান, আজ মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) বগুড়ার বাজারে কাজী গ্রুপ প্রতি পিস ডিম ১১ টাকা এক পয়সায় বিক্রি করলেও সিপি ও ভিআইপি ১২ টাকা ৮০ পয়সা ও স্থানীয় খামারিরা দাম আরও বাড়িয়ে ১৩ টাকা ১০ পয়সায় বিক্রি করছেন। এদিন বগুড়ার বাজারে আকারভেদে ডিমের হালি ৫২-৫৫ টাকা বলে জানান এই কর্মকর্তা।

বগুড়া জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মেহেদি হাসান বলেন, বগুড়ার বাজারে ডিম সরবরাহের কোন সংকট নেই, মূলত সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কারণেই ডিমের দাম বাড়তি। ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। তবে শুধু অভিযান পরিচালনা করেই ডিমের বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়, বাজার নিয়ন্ত্রণে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্যোগ নিতে হবে।  



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS