ভিডিও

সস্তা হোটেলে বসে নোবেল জয়ের খবর পেলেন ‘এআই গডফাদার’

প্রকাশিত: অক্টোবর ০৯, ২০২৪, ০৮:৩২ রাত
আপডেট: অক্টোবর ১০, ২০২৪, ১২:০৮ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ক্যালিফোর্নিয়ার হোটেলটিতে ইন্টারনেট তো দূরের কথা, ফোনের নেটওয়ার্কও ঠিকমতো পাওয়া যায় না। অথচ সেখানে বসেই কিনা নোবেল জয়ের খবর পেলেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির অন্যতম গডফাদার খ্যাত জেফরি এভারেস্ট হিনটন। কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে মেশিন লার্নিংকে সক্ষম করে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের জন্য এ বছর পদার্থবিদ্যায় হিনটনের পাশাপাশি নোবেল জিতেছেন জন জে. হপফিল্ড।

 তাদের এ উদ্ভাবন কম্পিউটারকে মানব মস্তিষ্কের ভাবতে সহায়তা করে। কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্কের ওপর ভিত্তি করে মেশিন লার্নিং বর্তমানে বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও দৈনন্দিন জীবনে বিপ্লব ঘটাচ্ছে। তবে সেজন্য যে নোবেলের মতো বড় পুরস্কার হাতে আসবে, তেমনটি আশা-ই করেননি হিনটন। ক্যালিফোর্নিয়ার একটি হোটেলে বসে তিনি বলেন, ‘আমি স্তম্ভিত, কখনো ভাবিনি জীবনে এমন কিছু হবে। আমি একদমই অবাক।

এ যেন বিনা মেঘে বজ্রপাত।’ ‘এখন আমি ক্যালিফোর্নিয়ার একটি সস্তা হোটেলে বসে আছি, যেখানে ইন্টারনেট সংযোগ নেই এবং ফোনে ভালো নেটওয়ার্কও পাওয়া যাচ্ছে না। আমার আজ এমআরআই স্ক্যান করানোর কথা ছিল, কিন্তু আমার মনে হয় তা বাতিল করতে হবে। ’ এআই প্রযুক্তি ধীরে ধীরে সবক্ষেত্রেই নিজের ছাপ রাখছে। মেশিন লার্নিংয়ের সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে অনেক জটিল সমস্যার সমাধান এনে দিচ্ছে এ প্রযুক্তি।  প্রযুক্তিটির অগ্রদূত হিনটন বলেন, ‘আমি মনে করি এটি মানবসভ্যতায় বিরাট প্রভাব ফেলবে, যা শিল্প বিপ্লবের মতো হবে। তবে শারীরিক ক্ষমতার বিপরীতে এটি বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষমতায় মানুষের চেয়ে এগিয়ে থাকবে। ’ 

‘আমাদের চেয়ে বুদ্ধিমান হতে পারে, এমন কিছুর অভিজ্ঞতা আমাদের হয়নি এবং এটি অনেক ক্ষেত্রেই অসাধারণভাবে কাজ করবে। এটি আমাদের উন্নত স্বাস্থ্যসেবা দিতে সহায়তা করবে। প্রায় সব শিল্পেই এটি মানুষকে আরও দক্ষ করে তুলবে। এআইয়ের সাহায্যে মানুষ অনেক কম সময়ে একই কাজ করতে পারবে।’

এআইয়ে নেতিবাচক প্রভাব তুলে ধরতেও ভোলেননি হিনটন, ‘উৎপাদনশীলতায় বিশাল উন্নতি বয়ে আনবে এআই। তবে এর সম্ভাব্য কিছু ক্ষতিকর পরিণতি নিয়েও আমাদের উদ্বিগ্ন থাকতে হবে। বিশেষ করে এ প্রযুক্তি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার ঝুঁকি সম্পর্কে।’ ১৯৪৭ সালে এক সমৃদ্ধ পরিবারে জন্ম নেওয়া হিনটন বর্তমানে কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করেন তিনি।  ‘হপফিল্ড’ নেটওয়ার্কের ওপর ভিত্তি করে এক নতুন নেটওয়ার্ক তৈরি করেন এ কম্পিউটার বিজ্ঞানী, যা দ্য বোল্টজম্যান মেশিন হিসেবে পরিচিত।  

মেশিনটি নির্দিষ্ট ধরনের ডাটায় বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন উপাদানগুলো চিহ্নিত করার পদ্ধতি শিখতে পারে। মেশিন লার্নিং মডেলকে আরও উন্নত করতে পরিসংখ্যান পদার্থবিজ্ঞানের টুলস ব্যবহার করেছেন তিনি। এর ফলে ডাটা থেকে শেখার জন্য একই ধরনের উপাদান নিয়ে গঠিত সিস্টেমগুলো কীভাবে কাজ করে, তা বোঝা যায়।

ছবিকে শ্রেণীভুক্ত ও পরিচ্ছন্ন করা ছাড়াও প্রশিক্ষণের সময়ে যে পদ্ধতি শিখেছে, সেই পদ্ধতিতে নতুন ছবির উদাহরণ তৈরি করতেও বোল্টজম্যান মেশিন ব্যবহৃত হয়।  টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক থাকাকালীনই ২০১৩ সালে গুগলে যোগ দেন হিনটন। তবে এআইয়ের ঝুঁকি নিয়ে স্বাধীনভাবে কথা বলার জন্য গত বছরের মে মাসে সেই চাকরি থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।

 



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS